কথা বলা নিয়ন্ত্রণে আইন করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর সর্বপ্রথম সংবাদমাধ্যমের উপরে আঘাত করা হয়েছে। এখন গণমাধ্যমকর্মী আইন করা হচ্ছে যাতে কোনো মতেই এই সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে না পারে। যারাই জনগণের পক্ষে কথা বলবে তাদের যেন নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে জন্য এই আইন করা হচ্ছে।
তিনি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত গণমাধ্যমকর্মী আইন-২০২২ প্রত্যাহারের দাবি জানান।
রবিবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ আয়োজিত সদ্য কারামুক্ত সাংবাদিক নেতা রুহুল আমীন গাজীর সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'সংসদে যারা আছে তারা সবাই সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে। তাই এই গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর এটি যদি পাস হয়ে যায়, তাহলে পুরোপুরিভাবে ফ্যাসিবাদী শাসন পাকাপোক্ত হয়ে যাবে।'
তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইদের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, অনুরোধ জানাতে চাই আপনারা আপনাদের যেসব ছোটখাটো বিভেদ আছে সেগুলো ভুলে গিয়ে, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য, গণমাধ্যমের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য, ফ্রিডম অব প্রেসকে রক্ষার জন্য, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে কথা বলার জন্যে একতাবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। আমি আপনাদের আহ্বান জানাব আজকে দেশে যে গণতন্ত্র নেই, বাক স্বাধীনতা নেই, আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই এসব বিষয়গুলোকে যদি আমাদের রক্ষা করতে হয়, রাষ্ট্রকে যদি রক্ষা করতে হয়, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্যগুলো নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সেটা যদি রক্ষা করতে হয়, তাহলে আমাদের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই'।
মির্জা ফখরুল বলেন, রুহুল আমীন গাজীকে একেবারে মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছিল। সাংবাদিকরা তাদের সমস্যা আছে নিয়ে সেগুলো যেন তুলে ধরতে না পারে সেজন্য তাকে আটক রাখা হয়েছিল।
'আজকে বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন করে সাংবাদিকদের মত প্রকাশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সেই আইনগুলোর বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা যাতে রুখে দাঁড়াতে না পারে সেকারণে রুহুল আমীন গাজীকে আটক রাখা হয়েছিল'
তিনি বলেন, 'আসুন আমরা সবাই এই সরকারকে বাধ্য করি পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। নতুন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নতুন একটা সংসদ আমরা গঠন করি, যারা জনগণের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে কাজ করবে।'
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি ম মাসুম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম ভূইয়া, বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, কামাল উদ্দিন সবুজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই সিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ডিইউজের সাবেক সেক্রেটারি মুনসি আব্দুল মান্নান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, রফিকুল ইসলাম আজাদ, মুরসালিন নোমানী, ডিআরইউর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, বিএফইউজের সহসভাপতি ওবায়দুল রহমান শাহিন, ডিইউজের সহসভাপতি বাছির জামাল, রাশেদুল হক, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন প্রমুখ।
এমএইচ/আরএ/