‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে প্রতিহত করা হবে’
বিএনপি শক্তিশালী বিরোধীদল হওয়া এবং আন্দোলনের নামে তারা যদি আবারও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেয় তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন ব্যতীত জাতীয় সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হয়ে ওঠা কোনভাবেই বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কি ধ্বংসাত্মক এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অগ্নি সন্ত্রাসে মত নেক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত শক্তি প্রদর্শনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বিএনপি?’
সোমবার (১৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিবের অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপিকে শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে আবির্ভাবের ঘোষণার প্রেক্ষিতে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপিকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে! তার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবারও বিএনপির শক্তিহীনতা দুর্বলতা, অক্ষমতা দৈন্যতার নির্মম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। প্রকারান্তরে বিএনপি মহাসচিব স্বীকার করে নিয়েছে যে বিএনপি একটি শক্তিহীন অন্তঃসারশূন্য রাজনৈতিক দল।’
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী বিরোধী দলের অনুপস্থিতির যে কথা বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেটাই প্রতীয়মান হয়েছে সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী বিরোধীদলের শক্তিমত্তা প্রতিষ্ঠিত করার স্থান হলো জাতীয় সংসদ।
সে অর্থে বিরোধী দলকে ছায়া সরকার হিসেবেও অভিহিত করা হয়। সে জন্য যে কোনো রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা আবশ্যক। যদি বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন করি বর্তমানে জাতীয় সংসদে তাদের আসন সংখ্যা কত? আর সেটা নিয়ে তারা কতটুকু শক্তিশালী বিরোধী দল হতে পেরেছে? তা জাতির সামনে প্রমাণিত।
দেশের সচেতন জনগণ মনে করে বিএনপি এই ঘটনার নেপথ্যে দেশবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। অবশ্য তাদের অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় বিএনপি নেতাদের অতি অল্প সময়ে কোনো সীমারেখা নেই। তাই বিএনপির হুমকি ধামকিতে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই বলেও মনে করেন তিনি।
বিবৃতিতে আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী আদর্শের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে ফ্যাসিবাদী অভিহিত করে একদিকে বিরোধী দলের উপর দমনপীড়ন বিষয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে একই কন্ঠে বলেছেন শক্তির সুবিধা আছে বলেই তো এখন পর্যন্ত কথাগুলো আমরা বলছি। সরকার যদি ফ্যাসিবাদী হয় তাহলে তারা সরকার বিরোধী অপপ্রচার মিথ্যাচার করেন কীভাবে?
মির্জা ফখরুল ইসলামের এই দ্বিচারিতার কারণ হলো তারা জনগণের কল্যাণে কখনো কোনো রাজনীতি করে না। যে কোনো উপায়ে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা তাদের রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য। নিজেদের স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী আদর্শের নিকৃষ্ট ইতিহাসকে আড়াল করতে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যই বিএনপি নেতৃবৃন্দ নিজেদের বারবার এই চিত্তাকর্ষক পরিভাষাকে ব্যবহার করেন। বিএনপি তার দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী নেতৃত্বের স্বার্থ চরিতার্থ জনগণের স্বার্থকে ঢাল হিসেবে সামনে নিয়ে আসে। মূলত বিএনপির অন্তরে ফ্যাসিবাদী আর মুখে গণতন্ত্রী।
আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ও আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি আবারও সন্ত্রাসী ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
এসএম/এমএমএ/