দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখতে প্রস্তুত হোন: নেতাকর্মীদের নানক
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দুই বছর বাকি। এই সময়ে ষড়যন্ত্র হবে। ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য দরকার একমাত্র সাংগঠনিক শক্তি।’
রবিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ডেমরা থানার ৪৬নং ওয়ার্ডের মাতুয়াইল ইউনিয়নের ইউনিট সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় নানক বলেন, ‘একাত্তরের পরাজিত শক্তি এখনও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু যারা এই হত্যার সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে জড়িত তাদের মুখোশ এখনও উন্মোচন করা হয়নি। তাদের মুখোশ উন্মোচন এখন সময়ের দাবি।’
আগামীতে আরও ষড়যন্ত্র হতে পারে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে ২০০৮ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই দায়িত্ব গ্রহণের পরই বিডিআর বিদ্রোহ ঘটানো হলো। সেই বিডিআর বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, বন্দুকের নল নয়, জনগণ ক্ষমতার উৎস। ’৭৫ এর পর খুনিরা যখন এই বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করছিল, ঠিক তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিরে এসে বাংলার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তিনি বাংলার হাট, মাঠ, ঘাট ঘুরে দলকে সুসংগঠিত করেছেন। এই দলের ক্ষমতার উৎস এ দেশের জনগণ।’ এ সময় কোনো রক্তচক্ষুর কাছে আওয়ামী লীগ মাথা নত করবার দল নয় বলেও জানান নানক।
বিএনপির সমালোচনা করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন, খালেদা জিয়া ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, তারেক রহমান ছিলেন শিশু মুক্তিযোদ্ধা। ফখরুল সাহেব- জেনারেল জানজুয়ার সঙ্গে খালেদা জিয়ার যে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল, সেই জানজুয়াকে কি একদিন মুক্তিযোদ্ধা বলবেন? কবে বলবেন মতিউর রহমান নিজামী মুক্তিযোদ্ধা ছিল? আমরা সেই সময়ের অপেক্ষায় রয়েছি।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রথম সারির কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা জানিয়েছে। কি কারণে? তাদের দোষ তারা জঙ্গিবাদকে নির্মূল করেছে। দেশ থেকে আগুন সন্ত্রাস নির্মূল করেছে। এটি অত্যন্ত নিন্দার বিষয়। এটি মূলত ষড়যন্ত্রে একটি নীল নকশা।’
তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে মহানগর দক্ষিণ সুসাংগঠিক আওয়ামী লীগ হিসাবে গড়ে উঠবে। ত্যাগী, পরিক্ষীত নিবেদিত নেতাদের দায়িত্ব নিয়ে আসতে হবে । আমাদের খেয়াল রাখতে হবে- আমরা দলে কাউয়া চাই না।’
মাতুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শান্ত নুর খান শান্তর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, ৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন,৬৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ মাসুদুর রহমান মোল্লা বাবুলসহ ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
/এএন