'ভাইব্বা ল কিং' এর গ্যাং লিডারসহ গ্রেফতার ৯
ছবি : সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং ‘ভাইব্বা ল কিং’ এর গ্যাং লিডার মোহনসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে দেশীয় অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সকালে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান ও বসিলায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র্যাব। এর সূত্র ধরে টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়। গত সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে টহলরত র্যাব-২ এর সদস্যরা মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পায়। তৎক্ষণাৎ কর্তব্যরত টহল দল ঘটনাস্থল হতে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক অভিযানে নামে। ওই রাতেই মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী মো. নাঈম (১৪), মো. রুমান (১৮), মো. তামিম খাঁন (১৪), মো. সজীবকে (১৭) ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র, পিস্তল সদৃশ্য ও মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা 'ভাইব্বা ল কিং' নামক একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপের সদস্য। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার মধ্যরাতে চাঁদ উদ্যান সংশ্লিষ্ট সাত মসজিদ হাউজিং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত দলের গ্যাং লিডার শরীফ ওরফে মোহন (১৮), মো. উদয় (১৯), মো. শাকিল (১৯), মো. নয়ন (১৮), মো. জাহিদকে (১৮), দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে ৪টি লোহার দেশীয় তৈরি ছুরি, ১টি স্টিলের হাতলযুক্ত কুঠার, গাঁজা ৫০ পুরিয়া, ২টি স্টিলের তৈরি ছোরা, ১টি স্টিলের তৈরি হোল্ডিং চাকু, ১টি প্লাস্টিকের পিস্তল সদৃশ্য, ৬৫ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জামাদি এবং ৩টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাদের কিশোর গ্যাং ভাইব্বা ল কিং গ্রুপে প্রায় ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে। দলের রিং লিডার মোহন এর নেতৃত্বে গত ২/৩ বছর পূর্বে গ্যাংটি গঠন করা হয়। এরা মোহন সিন্ডিকেট নামেও পরিচিত। এই গ্রুপের সদস্যরা পূর্বে লেবেল হাই গ্যাং- অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্তকোন্দলে যা ৫/৬টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায়। গ্রুপটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টিকটক ইত্যাদি ফুটপ্রিন্ট রয়েছে।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার তথ্য বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের গ্যাং সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্ধত্যপূর্ণ প্রচারণা পাওয়া যায়। যেমন মোহাম্মপুরের পোলাপান যা করি তা টোকেন ছাড়াই ওপেন, মোহাম্মদপুরের পোলা বাজান/আমি একাই একশ/গেঞ্জাম করার আগে ভাইব্বা লইও (Vaibba Loiyo) ইত্যাদি। মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চুরি-ডাকাতি আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তারা ভাড়ায় বিভিন্ন স্থানে হুমকি ও মারপিটে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গেও জড়িত।
গ্রেফতারকৃতদের থেকে তথ্য নিয়ে র্যাব জানায়, ভাইব্বা ল কিং (Vaibba Lo King) মানে তাদের সদস্যদের যেই অবস্থায় থাকুক না কেন তারা মোহাম্মদপুরের কিং। অপরাধ কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা নিজেদের কিং হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। গ্রেফতারকৃতরা লেগুনা, অটোচালনা, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণকর্মী ও অফিসের বার্তাবাহক ইত্যাদি পেশায় থাকলেও তারা মূলত মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। তারা বিভিন্ন সময়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ব্যাংকের আশেপাশে যেয়ে গ্রাহকদের টার্গেট করত বলে জানায় র্যাব।
এনএইচ/টিটি/