প্রধান বন সংরক্ষকের পদত্যাগ দাবি
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৪০টি হাতিকে বিভিন্ন কৌশলে হত্যা করা হয়েছে। একের পর এক হাতি হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এ ঘটনাকে প্রধান বন সংরক্ষকের ব্যর্থতা উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবি করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটির দাবি, সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে লোভী মানুষেরা মেতে উঠেছে টাকার নেশায়। সে ধারাবাহকিতায় নির্বিচারে হত্যার শিকার হচ্ছে বন্য হাতিগুলো। এর ফলে একদিকে পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান বাসস্থান নির্মাণের ফলে বন্যপ্রাণী নিরুপায় হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে নির্বিচারে বন্যপ্রাণী হাতি হত্যার দায় বন বিভাগ কিংবা পরিবেশ অধিদফতর এড়াতে পারে না বলে দাবি করেছে সবুজ বাংলাদেশ। সংগঠনটির পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, '১৯৩২ সালে হাতি সংরক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী টেকনাফের উখিয়া অঞ্চলকে নিরাপদ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকা ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি ভারতের মেঘালয় ও বাংলাদেশের শেরপুরের সীমান্তবর্তী অঞ্চলকে বন্য প্রাণীর জন্য নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়।'
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির সময় চলছে। এ সময় উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে অথচ মানবিক বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যে সমাজে মানুষ বসবাস করবে সেখানে বন্যপ্রাণী থাকবে না এটি কল্পনাতীত। এক শ্রেণির অসাধু, দুর্নীতিগ্রস্ত, অর্থলোভী ব্যক্তিদের যোগসাজশে বন বিভাগ এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে।’ বন্য হাতি সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ বনাঞ্চল গড়ে তোলা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বন বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।
পরিবেশবাদী এই সংগঠনটির পক্ষ থেকে হাতি রক্ষায় বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশগুলো হলো, ১. বন বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে লোকবল নিয়োগ করতে হবে এবং বনের মধ্যে যাতায়াতের জন্য যুগোপযোগী বাহনের ব্যবস্থা করতে হবে। ২. বনের মধ্যে থাকা সকল অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে এবং নতুন স্থাপনা যেন গড়ে না ওঠে সেজন্য আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। ৩. রাস্তা ও রেললাইন নির্মাণের সময় বন্যপ্রাণী পারাপারের ব্যবস্থা বাইপাস চ্যানেল বা নিরাপদ করিডর নির্মাণ করতে হবে। ৪. বন্যপ্রাণী হত্যা করলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করতে হবে। ৫. বন্য প্রাণীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘কুইক ফুড সার্ভিস’ সিস্টেম চালু করতে হবে। ৬. সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং টেকনাফ—উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সরকারিভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. সব ধরনের সার্কাস, হাতি দিয়ে রাস্তায় চাঁদাবাজি বা খেলাধুলা দেখানো বন্ধ করতে হবে। ৮. দুর্নীতিগ্রস্ত বন কর্মকর্তাদের সম্পত্তির হিসাব দুদকে তলব করতে হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
এনএইচ/এএন