শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

দুদকের ৪ মামলা

শেখ হাসিনার এপিএস লিকুর শতকোটি টাকার সম্পদের পাহাড়

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমান লিকু। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের গল্পটি যেন এক রূপকথার মতো। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে মাত্র ৫,১০০ টাকা বেতন নিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হলেও অল্প সময়ের মধ্যে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। ২০১৪ সালে এপিএস হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির পরিধি আরও বিস্তৃত হয়।

অভিযোগ উঠেছে, নিজ নামে সম্পদ কম দেখিয়ে বেনামে গড়ে তুলেছেন অধিকাংশ অবৈধ সম্পদ। এ ছাড়া ভিয়েতনামে শত কোটি টাকা পাচার করেছেন, শ্যালককে সেই দেশের ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বর্তমানে পালিয়ে শ্যালক-দুলাভাই দেশটিতে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঁচ হাজার ১০০ টাকা বেতন দিয়ে গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু) কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি এপিএস হিসাবে পদোন্নতি পান। এরপর দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। শুধু নিজের নামে নয়; স্ত্রী, শ্যালক ও আত্মীয়-স্বজনের নামে বিঘার পর বিঘা জমি এবং ডজনখানেক বাড়ি নির্মাণ করেছেন। সরকার পরিবর্তনের পর যেগুলোর সন্ধান মিলছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানেও তার বিরুদ্ধে কয়েক-শ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। বাস্তবে যার মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে সংস্থাটি।

দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তার নিজ ও আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় কমিশন থেকে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে লিকু। ছবি: সংগৃহীত

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কর অঞ্চল-৪ এর করদাতা গাজী হাফিজুর রহমান (লিকু)। মোট ভাই পাঁচজন। ২০২৩ সালে এপিএস হিসেবে বাদ পড়ার পর সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। সেখান থেকে ভিয়েতনামে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

তার আয়কর ফাইলে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ করবর্ষে মূল বেতন ৬৭ হাজার ১০ টাকা, নিট আয় নয় লাখ পাঁচ হাজার ৪৪৪ টাকা এবং নিট সম্পদ এক কোটি চার লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। আয়কর রিটার্নের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ৬০ লাখ ২১ হাজার ২৮৮ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ২০২৩ সালের ২৫ জুন স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মেটলাইফ এলিকোতে ২৮ লাখ টাকার পলিসির সন্ধান পেয়েছে দুদক।

লিকু প্রথম আয়কর প্রদান করেন ২০০৯-২০১০ করবর্ষে। তার আয়কর ফাইলে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ করবর্ষে মূল বেতন ৬৭ হাজার ১০ টাকা, নিট আয় নয় লাখ পাঁচ হাজার ৪৪৪ টাকা এবং নিট সম্পদ এক কোটি চার লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেখিয়েছেন।

আয়কর রিটার্নের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ৬০ লাখ ২১ হাজার ২৮৮ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ২০২৩ সালের ২৫ জুন স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মেটলাইফ এলিকোতে ২৮ লাখ টাকার পলিসির সন্ধান পেয়েছে দুদক।

লিকু ও তার স্ত্রী রহিমা আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন রামদিয়াতে ‘মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার জমির পরিমাণ ৪৭১ শতাংশ এবং দালিলিক মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।

রাজধানী ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলায় ‘মধু সিটিতে’ এক বিঘা জমির ওপর ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন লিকু। যার মূল্য কোটি টাকা। এ ছাড়া ঢাকার আদাবরের ৬ নম্বর রোডের ৫৮৩ নম্বর বাড়ির এ-৬ ফ্ল্যাটটি তার স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে। ওই বাড়ির মালিক নজরুল ইসলাম রহিমা আক্তারের বন্ধু বলে জানা গেছে। ২৫ মিতালী রোড, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক, ধানমন্ডি, ঢাকায় লিকুর বেনামে আরও একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। স্ত্রী ও অন্যদের নামে অর্ধডজন প্রাইভেট গাড়ি ও মাইক্রোবাসের খোঁজ পাওয়া গেছে।

লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন রামদিয়াতে ‘মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার জমির পরিমাণ ৪৭১ শতাংশ এবং দালিলিক মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।

খুলনা-ঢাকা-সাতক্ষীরা-গোপালগঞ্জ রুটে ‘ওয়েলকাম এক্সপ্রেস’ নামে ৪২টি যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করছে। এর মধ্যে সাতটি গাড়ি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। গাড়িগুলো টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কালু ও তার যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি গাড়ির মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরে ওয়েলকাম বাস সার্ভিসেও তার শেয়ার রয়েছে।

গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকুড় মাঠের পাশে ১৩ শতাংশ জমির ওপর শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লার নামে (বেনামে) ১০তলা কমার্শিয়াল ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করেছেন। যা ‘স্বর্ণা টাওয়ার’ নামে পরিচিত। জানা যায়, হালিম মোল্লা তার স্ত্রী স্বর্ণা খানমের নামে এটি গড়েছেন।

অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানাধীন কুশলা ইউনিয়নসহ গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন কাজুলিয়া গ্রামে ৪০০ বিঘা জমিতে মৎস্যঘের রয়েছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন থানাপাড়া রোডে পৈত্রিক জমিতে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছেন। যার মূল্য দুই কোটি টাকা।

অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলেছেন আলিশান সব বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

জানা যায়, লিকুর শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লা। তিনি গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে মূলত হুন্ডি ব্যবসা করতেন। হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি ভিয়েতনামে বসবাস করেন। গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর সব অবৈধ অর্থ বৈধ করার কাজে তিনি সহযোগিতা করেন। দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে।

নিজ বাড়ির পাশে থানাপাড়া রোডে অনির্বাণ স্কুলের দক্ষিণ পাশে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন লিকু। সেখানে তার শ্বশুর-শাশুড়ি বসবাস করছেন।

লিকুর সেজ ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপুর নামে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার লাইট হাউজের পাশে ‘ওশান ব্লু’ নামের রিসোর্ট রয়েছে। এটি মূলত গড়েছেন লিকু। সেখানে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানেরও শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, লিকুর সেজ ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপুর নামে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার লাইট হাউজের পাশে ‘ওশান ব্লু’ নামের রিসোর্ট রয়েছে। এটি মূলত গড়েছেন লিকু। সেখানে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানেরও শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গোবরা নামক স্থানে লিকুর শ্যালক হালিম মোল্লার শ্যালক রিপন ফকিরের নামে ১৫ শতক জমিতে আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান মিলেছে। একই ওয়ার্ডে হালিম মোল্লার অপর শ্যালক মিল্টন ফকিরের নামে তিনতলা বাড়ি এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকুড় নামক স্থানে নিলের মাঠের পাশে ১০ শতাংশ জায়গায় একতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।

লিকুর আপন ছোট ভাই গাজী শফিকুর রহমান ছোটনের নামে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ শতাংশ জমি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যালকের নামে সোয়া কোটি টাকার সাত কাঠা জমি, গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম মোড়ে স্ত্রী রহিমা বেগমের নামে ৮ শতাংশ ও ১০ শতাংশ বসতভিটা, গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ বিঘা জমি, ভায়রাভাই ওমর আলীর নামে পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চারতলা বাড়ি ক্রয় করেছেন বলে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

গাজী হাফিজুর রহমান লিকু এবং তার স্ত্রী-সন্তানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার (১৩ জানুয়ারি) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ এসব মামলা করা হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার এপিএস থাকা অবস্থায় নানা দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লিকুর বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়।’

তিনি জানান, লিকু, তার স্ত্রী রহিমান আক্তার, ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপু ছাড়াও শেখ মো. ইকরাম, তানভীর আহম্মেদ, মো. লিয়াকত হোসেন সবুজ, কালু শেখ, হামিম শেখ, মিন্টু রহমান ও আরাফাত হোসেনকে আসামি করে প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও অন্যান্য আসামি গোপালগঞ্জে তাদের নামের ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি ৫৯ লাখ ১৩ হাজার ১০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেন। একইসঙ্গে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস আড়ালের উদ্দেশ্যে রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় শুধু লিকুর বিরুদ্ধে। এ মামলাটিরও বাদী দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-২ থাকা অবস্থায় লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৫ কোটি ৩২ লাখ ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে নিজের ভোগ দখলে রেখে দুদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

তৃতীয় মামলাটিতে রহিমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে লিকুকে। মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত। তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, লিকু ও তার স্ত্রী রহিমা একে অপরের সহযোগিতায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধতা দানের অসৎ উদ্দেশ্যে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

চতুর্থ মামলাটিতে লিকুকে দুই নম্বর আসামি এবং ছেলে শেখ ইকরামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামিরা একে অপরের সহায়তায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধতা দানের উদ্দেশ্যে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ টাকার সম্পদ ভোগ দখলে রেখে দুদক আইন ও দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

Header Ad
Header Ad

চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত

মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারীর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসযাত্রী মির্জাপুর থানায় গিয়ে চলন্ত বাসে ডাকাতির বিষয়ে ডিউটি অফিসার মো. আতিকুজ্জামানকে অবহিত করেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমলে না নেওয়ায় কয়েক মিনিট পর তারা থানা ত্যাগ করেন।

এছাড়া ডিউটি অফিসার তাদের নাম ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর সহ কোন তথ্যই রাখেননি তিনি। যার কারণে মামলা গ্রহণ করতে বিলম্ব হয়। এরপর ঘটনার তিনদিন পরে এক ভুক্তভোগী বাস যাত্রীর মামলা নিতে হয়েছে।

এদিকে, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান গত শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি রাতেই এএসআই আতিকুজ্জামানকে মির্জাপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেন। শনিবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এএসআই আতিকুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এইচএম মাহবুব রেজওয়ান জানান, শনিবার আতিকুজ্জামানের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন।

Header Ad
Header Ad

ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা

ছবি: সংগৃহীত

নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৬ অথবা ২৭ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল। এই দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দল ঘোষণার আগে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন বাহিনীর সাবেক কয়েকজন সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

নতুন দল ঘোষণা নিয়ে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। নতুন দলের আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলামের দায়িত্ব নেয়ায় জোড়ালো সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দলের সদস্যসচিব পদ নিয়ে নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। পরে আলোচনার ভিত্তিতে দলের শীর্ষ চারটি পদ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পদগুলোতে কারা থাকছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে আরও দুটি পদের বিষয়েও প্রস্তাব এসেছে।

এর আগে, জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্যাম্পেইন চালায় সংগঠনটি। এরপর ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি জনমত জরিপও চালালো হয়। সেখানে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম, লোগোসহ বিভিন্ন মতামত জানতে চাওয়া হয়। এদিকে নয়া রাজনৈতিক দলের নাম ইংরেজীতে হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার

সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফ করছেন টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হলেও কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ডাকাতির সময় বাসে থাকা দুই/তিনজন নারী যাত্রীর গলা থেকে চেইন এবং কান থেকে দুল নেওয়ার সময় তাদের শ্লীলতাহানি করে ডাকাতদলের সদস্যরা। তবে তাদের (ভিকটিম) সঙ্গে কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এ দাবি করেন।

তিনি বলেন, ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. শহিদুল ইসলাম (২৯), মো. সবুজ (৩০) ও মো. শরীফুজ্জামান (২৮)।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল, একটি ছুরি ও ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়। মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার আতিকুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী বাসে মির্জাপুর এলাকায় তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শ্লীলতাহানি করা হয় দুই নারীকে। পরে যাত্রীরা বাসটি আটকে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তা চায়। বাসযাত্রীদের হাতে আটক বাসচালক বাবলু, সুপারভাইজার মাহবুব ও হেলপার সুমনকে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় অজ্ঞাত ৮-৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত
ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার
ময়মনসিংহে দেড় শতাধিক বিড়ালের মিলনমেলা
বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
১৩ দিনের চীন সফরে যাচ্ছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির
২৯ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা পেয়েছে ২ সদস্যের একটি অপরিচিত বাংলাদেশি ফার্ম: ট্রাম্প
ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা: প্রাণে বাঁচলেন দিতি কন্যা লামিয়া
ফাগুনের দুপুরে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
‘আমাদের অনেক বয়স হয়েছে, নবীন-তরুণরা দেশকে নতুন করে চিন্তা করছেন’
ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকে গঠন বিএনপির পক্ষেই সম্ভব: তারেক রহমান
চলন্তবাসে বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি, টাঙ্গাইলে গ্রেফতার ৩
আমরা কারো দাবার গুটি হবো না: জামায়াত আমির
গরমে স্যুট পরে এসির তাপমাত্রা কমানো বন্ধ করুন: জ্বালানি উপদেষ্টা
সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ, আবেদন শুরু ২৮ ফেব্রুয়ারি
নতুন দলের শীর্ষ ছয়টি পদ নিয়ে ‘সমঝোতা’
মিঠাপুকুরে তোপের মুখে পালিয়ে গেলেন সাব রেজিস্ট্রার
আমার মা চাইতেন না আমি বিয়ে করে সংসারী হই : পপি  
ঝিনাইদহে ৩ জনকে হত্যা, দায় স্বীকার করলো চরমপন্থী সংগঠন  
দুদকে এখনো বহাল ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেষণে আসা অর্ধশত কর্মকর্তা