জুলাই ঘোষণাপত্রে খুনিদের বিচার ও শাস্তির কথা থাকতে হবে: সারজিস
বক্তব্য রাখছেন সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের জনগণ স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনার বিচার দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, "জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে স্পষ্টভাবে খুনি হাসিনা এবং তার নির্দেশে যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছেন, তাদের বিচার এবং শাস্তির কথা থাকতে হবে।"
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সারজিস আলম এই মন্তব্য করেন। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, "গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীনে চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাংলার মানুষ একত্রিত হয়ে হাসিনা সরকারকে বিদায় করতে লড়াই করছে।"
তিনি বলেন, "আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা আমাদের ৭ দফা দাবিকে যৌক্তিক বলে মনে করেছেন। আমাদের লক্ষ্য, গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সরকারি খরচে চিকিৎসা, আওয়ামী খুনি ও তাদের দোসরদের বিচার, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা।"
এ সময় তিনি আরো বলেন, "এতদিন মানুষ দেখেছে কেবল ভোটের সময় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কাছে আসে। কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে ভোটের সময়ও কেউ জনগণের কাছে আসেনি। আমরা এই অবস্থা পরিবর্তন চাই। ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন ও নির্যাতনের অবসান ঘটাতে আমরা লড়াই করছি।"
ভোলার গ্যাসের মজুত প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, "ভোলায় গ্যাসের মজুত রয়েছে, অথচ এখানকার মানুষ গ্যাস ব্যবহার করতে পারছে না। পাশাপাশি, অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা বা বরিশাল নিতে পথে মারা যান, অথচ ভোলায় মেডিকেল কলেজ কেন নেই? এই বৈষম্য দূর করতে আমাদের আন্দোলন চলছে।"
সারজিস আরও বলেন, "জুলাই বিপ্লবে ভোলার ৪৭ জন মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। এই ঘোষণাপত্রে প্রত্যেকটি জেলার ও উপজেলার শ্রমিক-মেহনতি মানুষের আত্মত্যাগের কথা উঠে আসতে হবে।" তিনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জে সিন্ডিকেট বসানোর অভিযোগ তোলেন এবং বলেন, "তার পরিবার জনগণের অধিকার কেড়ে সিন্ডিকেট চালিয়েছে, যা আমরা শেষ করতে চাই।"
এ সময় তিনি শহীদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সহানুভূতি জানান এবং জসিম উদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সমন্বয়ক এমএ সাঈদ, সহসমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুর রহমান তুহিন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ফয়সাল, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ ভোলার সমন্বয়ক ও ছাত্র-জনতা।