বাংলাদেশি হিন্দুদের ভারতে আসতে উৎসাহ দেওয়া উচিত নয়
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা । ছবি: সংগৃহীত
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, বাংলাদেশের হিন্দুরা বর্তমানে সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ ভালোভাবে সামাল দিচ্ছে। সেখানকার কোনো হিন্দু ভারতে আসছে না। তাই কোনো বাংলাদেশি হিন্দুকে এখানে আসতে ভারত থেকে উৎসাহ দেওয়া উচিত নয়।
শর্মা আরও দাবি করেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওভারটাইম কাজ করছেন।
গত বুধবার (০৩ জানুয়ারী) স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা সত্য যে, বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা অতীতে এখানে (ভারতে) চলে এসেছিল, কিন্তু তারা এখন আর আসছে না। তারা বর্তমান পরিস্থিতি পরিপক্বভাবে পরিচালনা করছে এবং তাদের দেশ ছেড়ে চলে আসতে উৎসাহিত করা উচিত নয় আমাদের।’
গত ৩০ ডিসেম্বর ভারতের কট্টর উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) প্রচারক সুমন কুমার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় নেওয়ার অনুমতি দিতে বলেছিলেন। এমন অবস্থায় বুধবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, গত পাঁচ মাসে বাংলাদেশ থেকে আসা প্রায় এক হাজার লোক আসামে ধরা পড়েছে এবং প্রতিবেশী ত্রিপুরায়ও একই সংখ্যক লোক ধরা পড়েছে। তবে তাদের কেউই বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু নয়।
শর্মার দাবি, মূলত বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টরে কর্মরত লোকেরা ভারতীয় টেক্সটাইল শিল্পে চাকরির জন্য ভারতে আসছে। তার দাবি, ‘বাংলাদেশে অস্থিরতার পর সেখানে টেক্সটাইল শিল্প কার্যত ভেঙে পড়ে। তাই ওইসব শিল্পে কর্মরত শ্রমিকরা ভারতে আসতে শুরু করে। আমাদের দেশের অনেক টেক্সটাইল শিল্প মালিক তাদের প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে এবং বাংলাদেশ থেকে সস্তা শ্রমিক আমদানি করতে অর্থ ব্যয় করে।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘এটি একটি উদ্বেগজনক সমস্যা, কারণ আমরা অতীতে এত বেশি অনুপ্রবেশকারীকে শনাক্ত করিনি। বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, যারা এখানে সংখ্যালঘু। আমরা তাদের গ্রেপ্তার করছি না, আমরা তাদের দিয়ে আমাদের জেল পূর্ণ করতে চাই না, তাই তাদের ফেরত পাঠাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলার কথিত খবর ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। কথিত এসব ঘটনা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগও জানিয়েছে নয়াদিল্লি। এ ছাড়া বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত হামলার বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে আসামে একের পর এক বিক্ষোভ হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আসামে বাংলাদেশের হিন্দুদের আশ্রয় দেওয়ার দাবিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের মতো বেশ কয়েকটি সংগঠন দাবিও জানিয়েছে।