বাংলাদেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ এখন আর ছাপা পত্রিকা পড়েন না, আর ৯৪ শতাংশ মানুষ রেডিও শোনেন না-এমন তথ্য উঠে এসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা এক জরিপে। এটি গণমাধ্যমের ব্যবহার নিয়ে দেশের প্রথম জাতীয় পর্যায়ের জনমত জরিপ।
জরিপ অনুযায়ী, মুদ্রিত সংবাদপত্রের পাঠকসংখ্যা কমলেও ডিজিটাল মাধ্যমে সংবাদ পাঠের প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদপত্র পড়ার হার উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, জাতীয় সংকট বা দুর্যোগের সময় মানুষ এখনো টেলিভিশনের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও রেডিওর প্রাসঙ্গিকতা প্রায় বিলীন হয়ে গেছে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই মত দিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমকে পক্ষপাতহীন ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হওয়া উচিত। তবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতার সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বেশিরভাগ উত্তরদাতা।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, সংবাদপত্র না পড়ার কারণ হিসেবে ৪৬ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তারা খবরের কাগজের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও এমন প্রবণতা দেখা গেছে, যেখানে ৫৩ শতাংশের বেশি মানুষ টেলিভিশন দেখেন না। তবে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৫ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা এখনো টেলিভিশন দেখেন।
রেডিওর অবস্থা সবচেয়ে সংকটাপন্ন। ৯৪ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তারা রেডিও শোনেন না। এর মধ্যে ৫৪ শতাংশ বলেছেন, রেডিও শোনার প্রয়োজন মনে করেন না, আর ৩৫ শতাংশ রেডিওর সহজলভ্যতা না থাকার কথা বলেছেন।
এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ব্যবহারের ধরণ বদলে যাচ্ছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব বাড়ছে, অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী সংবাদমাধ্যম হারাচ্ছে জনপ্রিয়তা।