‘পাচারের টাকা দেশে গোলযোগ সৃষ্টির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। সেই টাকা এখন দেশে গোলযোগ সৃষ্টির কাজে, সংহতি বিনষ্টের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড তার এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করেছে। গত আগস্ট মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশে এটি তার তৃতীয় ভাষণ।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এ পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
ভাষণে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। শক্তিশালী স্বৈরাচারী সরকারকে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই আমরা হটাতে পেরেছি। তারা এখনও সর্বশক্তি দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যকে নস্যাৎ করতে চাচ্ছে, একের প্রতি অন্যের বিষ উগড়ে দিতে চাচ্ছে। তাদের এই হীন প্রচেষ্টাকে কোনোভাবেই সফল হতে দেবেন না।’
‘শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষসহ দেশের সমস্ত মানুষকে সালাম দিয়ে ভাষণ শুরু করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ জাতির এক বিশেষ দিন। বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির বুক ফুলিয়ে দাঁড়াবার দিন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অস্ত্রকে অগ্রাহ্য করে খালি হাতে রুখে দাঁড়িয়ে সম্মুখ সমরে লড়াই করে নিজেদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উৎসবের দিন। এই দিনে স্মরণ করি লাখ লাখ শহীদদের, অগণিত শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ জনতার আত্মত্যাগকে; যার ফলে স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছিল।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কিন্তু আমরা সেই অর্জনকে আমাদের দোষে সম্পূর্ণতা দিতে পারিনি। সর্বশেষ এবং প্রচণ্ডতম আঘাত হানল এক স্বৈরাচারী সরকার। সে প্রতিজ্ঞা করেই বসেছিল এ দেশের মঙ্গল হতে পারে এমন কিছুই সে অবশিষ্ট থাকতে দেবে না।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এ বছরের বিজয় দিবস বিশেষ কারণে মহা আনন্দের দিন। মাত্র চার মাস আগে একটি অসম্ভব সম্ভব হয়ে গেল, দেশের সবাই মিলে এক জোটে হুংকার দিয়ে উঠলো, পৃথিবীর ঘৃণ্যতম স্বৈরাচারী শাসককে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে আমাদের প্রিয় দেশকে মুক্ত করেছে ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থান।’