রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস লুক্সেমবার্গের
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে লুক্সেমবার্গ। একই সঙ্গে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত ও গভীর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় এ আশ্বাস দেন লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেল। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেখে পাঠানো এক বিবৃতিতে তথ্য জানানো হয়।
ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, এ সময় দুই দেশের মধ্যেকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের চলমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় লুক্সেমবার্গকে অবিচল সমর্থক ও বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে চলমান টিকাদানের অগ্রগতি এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলা সম্পর্কে জানান।
তিনি গত বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময় লুক্সেমবার্গের গ্র্যান্ড ডিউকের পাঠানো একটি অভিনন্দন বার্তার কথা স্মরণ করেন।
রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবাসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুক্সেমবার্গের সহায়তা চাইলে জেভিয়ার বেটেল এ বিষয়ে লুক্সেমবার্গের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন।
কথোপকথনের সময় দ্বিপক্ষীয় বিমান পরিষেবা চুক্তিটি শিগগিরই সম্পাদন করতে রাজি হন দুই প্রধানমন্ত্রী। লুক্সেমবার্গ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহী। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন তারা।
শেখ হাসিনা আর্থিক খাত ব্যবস্থাপনায় লুক্সেমবার্গের দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং এর থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ গ্রহণের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী বেটেল আনন্দের সঙ্গে উল্লেখ করেন, তার দেশে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করেন এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করছেন।
জেভিয়ার বেটেলকে শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি পর্যায় থেকে উত্তীর্ণ হবে এবং উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে জিএসপি+ এর মতো বাণিজ্য সুবিধার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে তার সরকারের সহযোগিতা চান। লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতি আন্তরিক সহায়তা দিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়েও আলোচনা করেন। অবকাঠামো, পানি শোধন, নগর উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে লুক্সেমবার্গের জলবায়ু-স্মার্ট বিনিয়োগকে স্বাগত জানান শেখ হাসিনা।
জেভিয়ার বেটেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সুবিধামতো সময়ে লুক্সেমবার্গ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় শেখ হাসিনাও দেশের চলমান আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি দেখার জন্য জেভিয়ার বেটেলকে শিগিগিরই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
শুরুতে দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে এবং সব বিষয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা বজায় রাখার জন্য একে অপরকে অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বাজেটে সহায়তা এবং ভ্যাকসিন দানের মাধ্যমে মহামারি প্রভাব কমাতে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ‘টিম ইউরোপ’কে ধন্যবাদ জানান।
এসএন