মন্ত্রিসভার বৈঠক
বাসা-বাড়ির গাছ কাটতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে
বাসা-বাড়িতে লাগানো গাছ কাটতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধান রেখে ‘বন শিল্প উন্নয়ন আইন ২০২১’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (৭ ফেব্রুযারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিযমিত বৈঠকে আইনটি খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রস্তাবিত এই আইন অনুযায়ি, মানুষ যেসব সাধারণ বাগান করবে, স্থায়ী গাছ লাগাবে সেগুলো তারা ইচ্ছামত কাটতে পারবে না। সিটি করপোরেশন বা অন্য যে কোন ইউনিটের অধীন থাকলে তার অনুমতি নিতে হবে। এটা পৃথিবীর সব দেশেই আছে। সৌদি আরব, ভারত সব দেশেই এটি আছে। এটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে নিযমিত সংবাদ ব্রিফিং এ মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পাকিস্তান আমলে ১৯৫৯ সালে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে এর নাম বদলে হয় ‘বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন’।
তিনি বলেন, অর্ডিনেন্স হালনাগাদ করে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এটা একটা করপোরেশন হবে এবং করপোরেশনের জন্য একজন চেয়ারম্যান ও পরিচালক থাকবেন। তারা প্রশাসনিকভাবে এটিকে দেখবে। তাদের একটা বোর্ড থাকবে সেই বোর্ড নীতিগত বিষযগুলো তদারকি করবে।
বোর্ডের মূল কাজ হবে, কাঠ ও কাঠজাত পণ্য, করপোরেশনের অধীন শিল্প ইউনিটগুলোতে চিরাই কাঠ, কাঠের তৈরি সকল প্রকার আসবাবপত্র, অ্যাংকর লগ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, রেলওয়ে স্লিপার ইত্যাদি এই আইনের অধীনে আসবে। করপোরেশনের অধীনে দেশের রাবার বাগানসমূহ, বনজসম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম রাবারপণ্যের ব্যবহার রোধ করবে। বিভিন্ন আধুনিক ও পরিবেশবাবন্ধন শিল্প সৃষ্টির বিষয়টি আইনে থাকবে। আগর এবং সরকারি বনের পাশাপাশি অন্যান্য বনও সংরক্ষণে কাজ করবে এই বোর্ড।
তিনি বলেন, সব রকম বনকে প্রটেকশন দিতে এটি করা হয়েছে। শুধু রিজার্ভ বনকে রক্ষা করতে আইন করা হয়নি। সব রকম বনকে রক্ষা করতেই এই আইন করা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের অধীনে যেসব স্থায়ী বন আছে সেটিক্রে প্রটেকশন দেযার কথা আেইনে বলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,বাড়ির গাছ কাটার বিষয়ে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। আমার ধারণা একটি বিধি বোধ হয় আছে যে, গাছ কাটতে হলে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। সেটাকে আরেকটু বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। কারণ একটা গাছে ভেঙ্গে পড়ার পর একজন মানুষ বিপদে পড়লে সেটি যদি কাটতে ৮-১০ দিন লাগে তাহলে তো সমস্যা। যাতে সে সহজে গাছটি কাটতে পারে সহজ করতে অর্থাৎ অনলাইনে যাতে সে অনুমতি নিতে পারে সেটা বলা হয়েছে।
মন্ত্রিসভা বলেছেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয় যেন এই আইনের বিষয়ে ব্যাপক ক্যাম্পেইন করে মানুষের দৃষ্টিতে আনে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য গাছ কাটতে হয়। উদাহরন দিয়ে তিনি বলেন, হাটিকুমরুল সড়ক যখন চার লেন হয় তখন ৭৫ হাজার গাছ কাটতে হয়েছে। এ জন্য আমি নিজে আগেই আড়াই লাখ গাছ বুনতে শুরু করে দিয়ে আসি। একইভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক চার লেন করতে গিয়েও অনেক গাছ কাটতে হয়েছে। এর বিপরীতে গাছ লাগানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি স্থাপনার জন্য গাছ কাটতে হলে অনুমতি লাগবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় প্রণীত বাংলাদেশের জাতীয় সংরক্ষণ কৌশল ২০২১-২০৩৬’ এর খসড়া এবং আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এনএইচবি/