শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র আমার কাছে নেই: রাষ্ট্রপতি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, তিনি শুনেছেন যে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে তার কাছে এর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, '(পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।'
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের একটি দৈনিক প্রত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাতকারে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। আর এই সাক্ষাতকারটি গতকাল রবিবার পত্রিকাটির রাজনৈতিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে।
অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি তিনি কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি আসছেন না।’
তিনি বলেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই।’
একপর্যায়ে রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর পান জানিয়ে বলেন, ‘আমাকে (শেখ হাসিনা) কিছুই বলে গেলেন না। যা সত্য তাই আপনাকে (মতিউর রহমান চৌধুরীকে) বললাম। যাই হোক, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার যখন বঙ্গভবনে এলেন তখন জানার চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না? একই জবাব। শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। মনে হয় সে সময় পাননি জানানোর।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘সবকিছু যখন নিয়ন্ত্রণে এলো তখন একদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এলেন পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে। তাকে বললাম, আমিও খুঁজছি।’
তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে আর বিতর্কের কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এটাই সত্য। তারপরও কখনো যাতে এ প্রশ্ন না উঠে সে জন্য সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়েছি।’ তার পাঠানো রেফারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ মতামত দেন।
এতে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী বিভাগ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং প্রেসিডেন্টকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।