সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো কূটনৈতিক নোট পাওয়ার তথ্য আবারও নিশ্চিত করেছে ভারত।
শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তবে এ ব্যাপারে এর বেশি তথ্য নেই বলে জানান তিনি। এ ছাড়া বাংলাদেশে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিচারকাজ যাতে সুষ্ঠু হয়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন জয়সওয়াল।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই বলছে, আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাংলাদেশ থেকে কূটনৈতিক নোট পাঠানো নিয়ে প্রথম প্রশ্নটা করা হয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে আগেও নিশ্চিত করা হয়েছে। আগেও বলেছি, প্রত্যর্পণের অনুরোধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। এরপর এই মুহূর্তে এর সঙ্গে যুক্ত করার মতো আমার কাছে আর কোনো তথ্য নেই।’
এ ছাড়া বাংলাদেশে ইস্যুতে আরও বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করা হয় রণধীর জয়সওয়ালকে। এর মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা নিয়ে। এই ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিচারকার্য যেন সুষ্ঠু হয়, সেই আহ্বান জানাচ্ছি।’
গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন। এর মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যা মামলা হয়েছে। এমনকি গণহত্যার মামলাও রয়েছে। এ জন্য বিচারের প্রক্রিয়ার স্বার্থে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত চেয়ে গত ২৩ ডিসেম্বর ভারতকে কূটনৈতিক নোট পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে স্বাভাবিক সময়ের মধ্যে উত্তর না পেলে দিল্লিকে আবার তাগিদ পত্র দেওয়া হবে বলে পরদিরই জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই ইস্যুতে কী করা হবে, তা এখনো জানানো হয়নি ভারতের পক্ষ থেকে।
আজকের ব্রিফিংয়ে তুরস্কের এক সংস্থা থেকে বাংলাদেশের সামরিক ট্যাংক কেনার খবর নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। বাংলাদেশের ওই সিদ্ধান্ত ভারতের প্রতি কোনো বার্তা কি না জানতে চাওয়া হলে মুখপাত্র বলেন, নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ের ওপর ভারত সব সময় তীক্ষ্ণ নজর রাখে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
জয়সয়াল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহের কথাও পররাষ্ট্রসচিব জানিয়ে এসেছেন, যা পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মানের ওপর ভিত্তিশীল এবং যা পারস্পরিক স্পর্শকাতরতা, উদ্বেগ ও স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়।
ব্রিফিংয়ে দুই দেশে ধরা পড়া জেলেদের মুক্তির বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। ৫ জানুয়ারি ৯৫ জন ভারতীয় ও ৯০ জন বাংলাদেশি জেলে দুই দেশ থেকে মুক্তি পাবেন।
বাংলাদেশের পালাবদলের পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশিদের ধরপাকড় ও ফেরত পাঠানোর ঘটনা বেড়ে গেছে। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, অবৈধভাবে দেশে ঢোকা মানুষদের খুঁজে বের করা ও ফেরত পাঠানো নিরাপত্তারক্ষীদের কাজ। তাঁরা সেই কাজ করছেন।