বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রেলের গডফাদার তমা-ম্যাক্স গ্রুপ, ১৮শ' কোটি টাকার প্রকল্প হয়ে গেছে ১৮ হাজার কোটি!

তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতাউর রহমান মানিক এবং ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী সরকারের আমলে বাজেটে সব থেকে বেশি বরাদ্দ পেত পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো খাত। নতুন রেলপথ, সড়ক, সেতু নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। আর এসব অবকাঠামোগত কাজগুলো করানো হতো তৎকালীন সরকারের পছন্দের কিছু ঠিকাদারদের দিয়ে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এই দুই প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে রেলের সব মেগা প্রজেক্টগুলো নিয়ে।

সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতে কাজ করা স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। লাকসাম-চিনকি আস্তানা, কাশিয়ানি-গোপালগঞ্জ রেলপথসহ রেলওয়ের একাধিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে রেলের চলমান দুটি প্রকল্পের কাজ করছে ম্যাক্স। এর মধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে ৩ হাজার ৫০২ কোটি টাকার। আর আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ প্রকল্পে চীন ও বাংলাদেশের দুই প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকার কাজ করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

রেলের আরেক শীর্ষ ঠিকাদার তমা কনস্ট্রাকশন। দোহাজারী-কক্সবাজার ও আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ৬ হাজার ১৬১ কোটি টাকার কাজ করছে তমা।

প্রতিষ্ঠান দুটির কর্ণধার আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর রেলের ‘গডফাদার’ এবং ‘কালো বিড়াল’ হিসাবে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার শাসনামলে রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তারা অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকার কাজ কব্জা করেছেন। শুধু তাই নয় রেল ভবনের উচ্চ পদে নিজস্ব কর্মকর্তা বসিয়ে তারা গড়ে তুলেছিলেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কাজ পাওয়ার পর দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ বাড়িয়ে লোপাট করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। লুটের টাকার বড় অংশ ঠিকাদারি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে পাচারের অভিযোগও আছে প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে।

বিশাল এই অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের ঘটনা উদ্‌ঘাটনে দুই দফা অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবারই প্রতিষ্ঠান দুটির কাছে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে চিঠি পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে দুদকের কাজ। তদন্ত প্রতিবেদন এখনো আলোর মুখ দেখেনি। দুদকে সেই পুরোনো ‘ভূত’ বহাল থাকায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও এদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কাজে গতি আসেনি। গণমাধ্যমের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সত্যতাও মিলেছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপ থাকায় অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম সামছুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ম্যাক্স-তমা গ্রুপের আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি আমি নিজেই দেখেছি। মাটি ভরাটের কাজে নজিরবিহীন দুর্নীতি করা হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রায় ১০ জন প্রকল্প পরিচালক ছিল। তারা চাপে ঠিক মতো কাজ করতে পারেনি। অনেক প্রকল্প পরিচালককে অসম্মান করে বদলি, ওএসডি করা হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে তারা আর প্রকল্পের দায়িত্বে থাকতে পারেননি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, দোহাজারি-কক্সবাজার প্রকল্প গ্রহণের সময় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই প্রকল্প ১৮ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু এখনও শেষ হয়নি প্রকল্পের পুরো কাজ। রেলের দুর্নীতিবাজ সব ঠিকাদার ও তাদের দুর্নীতির ভাগীদার মন্ত্রী, সচিব ও রেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়।

এদিকে প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে উঠে আসা নানা রকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক প্রথম অনুসন্ধানে নামে ২০১৮ সালে। দুদকের সাবেক পরিচালক একেএম জায়েদ হোসেন খানকে টিম লিডার করে গঠিত ওই অনুসন্ধান কমিটি তমা-ম্যাক্স সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল রেলপথ নির্মাণ কাজের টেন্ডার ছিনতাই ও চীনা কোম্পানি চায়না লিমিটেডের কর্মকর্তাদের অপহরণের তথ্য-প্রমাণও পায়। এরপরও তখন অনুসন্ধান আটকে যায়। তখন তমা ও ম্যাক্স গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এমনকি অনুসন্ধান নিষ্পত্তিও করা হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা জানতে পেরেছেন, তমা ও ম্যাক্স গ্রুপ সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্ধারিত সময়ে মূল কাজ শেষ করতে পারেনি। সেই সঙ্গে ধীরগতিতে কাজ করে তারা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি খরচও বাড়িয়ে নিয়েছে। এর ফলে গচ্চা গেছে সরকারি কোষাগারের শত শত কোটি টাকা।

জানা গেছে, রাজবাড়ী থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় রেললাইন স্থাপনের কাজ যৌথভাবে করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়। কোনো ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া এ প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ২০১০ সালে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১০১ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫ বছর পর ২০১৮ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। ওই সময়ের মধ্যে তিনবার সময় বৃদ্ধির সঙ্গে নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয় ৯৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ-১ হাজার ১০১ কোটি টাকার প্রকল্প গিয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৩৫ কোটি টাকায়। শেখ হাসিনার ঘরের প্রকল্পেও (টুঙ্গিপাড়ায় রেলপথ) লোপাট করা হয়েছে অন্তত ১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা।

১৮শ কোটি টাকার প্রকল্প হয়ে গেছে ১৮ হাজার কোটি: অনুসন্ধানে চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ভয়াবহ লোপাটের চিত্র পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রুটের ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ২০১৬ সালে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৮শ ৩৪ কোটি টাকা। এই কাজও পায় ম্যাক্স ও তমা। এটা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প।

অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটির কর্ণধাররা শেখ হাসিনার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে নেন। রেলে কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা ও প্রকৌশলী ম্যাক্স-তমার হয়ে কাজ করেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্পের প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। তথ্য অনুযায়ী আমেরিকা, জাপান, চীনসহ উন্নত দেশেও সর্বোচ্চগতির রেলপথ নির্মাণে কিলোমিটারে খরচ সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্প নির্মাণ শেষে ওই রুটে বর্তমানে ৩টি ট্রেন চলাচল করছে। অথচ প্রকল্প সুবিধায় বলা হয়েছিল, প্রতিদিন গড়ে ২৪ থেকে ২৮টি ট্রেন চলাচল করবে।

এছাড়া তমা ও ম্যাক্স গ্রুপের পরিচালকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রকল্পের কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ভুয়া এলসি খুলে বিদেশে টাকা পাচার এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান করেছে দুদক। তবে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হলেও অনুসন্ধান প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।

রেলওয়ের পরিকল্পনা দপ্তরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ম্যাক্স ও তমা রেলের গডফাদার। এরা রেলের ‘কালো বিড়াল’। প্রতিষ্ঠান দুটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনায় প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রী-সচিবদের দিয়ে শুধু অনুমোদন করাতেন। যে মন্ত্রী-সচিব রেলে দায়িত্ব নেন-তাদের সবার ঘরের অন্দরমহলে ঢুকে যেতেন তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতাউর রহমান মানিক। ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরও কম ছিলেন না। এরা এককভাবেই রেলে কাজ করেন এমনটা নয়-তারা বিভিন্ন কৌশলে নিজেদের কাজ পাওয়ার যোগ্যতা বাড়াতে চীন কিংবা অন্য দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামনে রেখে ‘জয়েন্ট ভেঞ্চার’ কাজ হাতিয়ে নেন। নামে জয়েন্ট ভেঞ্চার হলেও-মূলত প্রকল্পের নিয়ন্ত্রক ম্যাক্স-তমা গ্রুপ।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে বক্তব্য জানতে তমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রকাশ্যে আসা এসব অভিযোগের বিষয়ে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, তার প্রতিষ্ঠান সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিটা কাজ করছে। রেলে বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাজ আর আমার ম্যাক্সের কাজে পার্থক্য রয়েছে। আমি প্রবাসী জীবন ছেড়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চলে এসেছি। আমার সঙ্গে তমা গ্রুপের কোনো সম্পর্ক নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আখাউড়া-লাকসাম, দোহাজারি-কক্সবাজার প্রকল্পে আমরা কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি করিনি। অনেক অযোগ্য পিডি ছিল। আমরা প্রকল্প দুটি সক্ষমতার সঙ্গে শেষ করছি। আখাউড়া-লাকসাম প্রকল্পে তমা গ্রুপও আছে। তমা গ্রুপ এক পর্যায়ে তার অংশটুকুর কাজ করতে পারছিল না। এতে এডিবি অর্থ ছাড় বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয়। তখন আমি তমার অংশের কাজ শেষ করে দিই। এতে আমার কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। সবই দেশের জন্য করেছি। রেলে ম্যাক্স গ্রুপ খুব দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে। এ জন্য সাবেক সরকারের অনেক মন্ত্রী-এমপিরাও আমার বিরুদ্ধে ছিলেন।

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশে এখনো ক্রান্তিকাল বিদ্যমান: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালেও বাংলাদেশ এখনো ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। প্রশাসনের অভ্যন্তরে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে যশোরে বিএনপির প্রয়াত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশের সংস্কার চায়। তবে শুধু শব্দ বা ভাষার পরিবর্তন নয়, এমন সংস্কার চাই যা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আনবে। তিনি মনে করেন, মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই সংস্কারের পথ চলা থামানো উচিত নয়। রাজনীতির মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, আর বিএনপি তার ৩১ দফার মাধ্যমে এ সংগ্রামে প্রতিটি নাগরিকের জন্য কাজ করছে।

তারেক রহমান প্রয়াত তরিকুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি সারাজীবন মা-মাটি-মানুষের জন্য নিবেদিত ছিলেন। নতুন প্রজন্মকে তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যারা রাজনীতিকে ব্যক্তিগত লাভের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন, তাদের পতন এ জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। তারেক আরো বলেন, ছাত্র-জনতার মহাবিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার উৎখাত হয়েছে, কিন্তু তাদের সহযোগী ও প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, ভুল বোঝাবুঝি দূর করে গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। কেবল সংবিধানের কিছু শব্দের পরিবর্তনে সংস্কার সম্ভব নয়, বরং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যই বিএনপি এই ৩১ দফা প্রস্তাবনা সামনে এনেছে এবং দলটি সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।

তরিকুল ইসলামের আদর্শ ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, তিনি কখনো নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে ও পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেনের সময়েও তিনি কারাভোগ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তরিকুল ইসলামের সাথে কারাগারে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা স্মরণ করে তারেক বলেন, সেই সময় তিনি তরিকুল ইসলামের কাছ থেকে অনেক সাহস পেয়েছিলেন।

স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এছাড়া মরহুম তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী ও বিএনপি নেত্রী নার্গিস বেগম এবং তাঁর দুই সন্তান শান্তুনু ইসলাম সুমিত ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

Header Ad

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হবে। পরীক্ষা চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি উপ-কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে রাবি ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুরে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০২৫ সালের ১২, ১৯ ও ২৬ এপ্রিল তারিখে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

১৪ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ভর্তি কমিটির সভায় এই সুপারিশ বিবেচনা করা হবে। ঐ সভায় ভর্তি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিত বলা হয়েছে।

Header Ad

আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক মাস যাবৎ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিম আক্তার ( ১৭) নামের এক গৃহবধুর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়াচ্ছিলেন হেলাল উদ্দিন সরদার নামের ( ২৭) এক যুবক।

আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ৪নভেম্বর (সোমবার ) রাতে অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মিম আক্তার। পরে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম। মীম আক্তার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে। আর অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদার একই এলাকার আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদার এর ছেলে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদারের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল উদ্দিন সরদার এর সাথে একই এলাকার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে মিম আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের ৭মাসের মাথায় পারিবারিক কলহের জেরে গত ৭জুলাই দু’জনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার পর থেকেই হেলাল “মিম আক্তার” শিরোনামে একটি ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে মিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করতে থাকে। শুধু ফেসবুকই নয় হোয়াইটস অ্যাপস সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মিমের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করে। এমনকি মিমের হোয়াইস আ্যপে এসব ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে তাকে উত্যক্ত করে হেলাল । পরে মিম তার ব্যবহৃত ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে। ঘটনাটি পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে অভিমান করে সোমবার রাত ৮টার দিকে বিষ পান করে (পোকামাকড় নিধনের বিষ) আত্নহত্যা করার চেষ্টা করে। পরে পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়রা উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম।

মিমের বাবা আসাদুল প্রামানিক বলেন, আমার মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর থেকেই হেলাল নানাভাবে বিরক্ত ও উত্যক্ত করে আসছিল। তার নামে ফেসবুক আইডি খুলে নানা রকম ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতো। আমার মেয়েকেও হোয়াইটস অ্যাপে সেসব দিয়ে ভয়ভূতি ও হুমকি দিয়ে বলতো তোর জীবন শেষ করে দিবো। এসব জানাজানি হলে আমার মেয়ে সবার অজান্তে ঘরে বিষ খায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মেয়েটা মারা যায়। এসব ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে আমার মেয়েকে আত্নহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। অপমান ও অভিমানে মেয়েটা আত্নহত্যা করেছে। হেলালসহ যারাই জড়িত থাক,তাদের সবার কঠিণ শাস্তি চাই। আমরা থানায় মামলা করবো।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদারের পরিবারের লোকজন। গ্রামের বাড়ি আঁকনাতে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল এর সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টাও তা সম্বব হয়নি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফজলুল হক নয়ন বলেন, মিম বিষ পান করার পর বেশ কয়েক ঘন্টা পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা প্রদান করেছি। পরবর্তীতে রাজশাহী বা বগুড়া নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলাম। তবে এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) তারিকুল ইসলাম বলেন, মালশন গ্রামের মিম আক্তার নামের একজন বিষপান করে। পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবস্থান মারা গেছেন। যেতেতু নওগাঁ সদর হাসপাতালে মারা গেছেন যার কারনে সদর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশে এখনো ক্রান্তিকাল বিদ্যমান: তারেক রহমান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় গৃহবধূর আত্মহত্যা
সম্মেলন শেষে ঢাবি পরিচ্ছন্নতা অভিযান করেছে তাবলিগের সাথীরা
বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ হলেন সালাহউদ্দিন
আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা