বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক’

তারিক আহমেদ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডিকে দেশের ইতিহাসে একটি ভয়ংকর অধ্যায় হয়ে রয়েছে। তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে বিপথগামী সদস্যরা কিছু দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে তাণ্ডব চালায়। এতে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ভয়ংকর নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলেছেন সাবেক ক্যাপ্টেন (অব.) ড. খান সুবায়েল বিন রফিক। তিনি বলেন, ‘পুরো ঘটনার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক’।

সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক ক্যাপ্টেন (অব.) ড. খান সুবায়েল বিন রফিক বলেন, ‘এটাকে আমি বিডিআর বিদ্রোহ বলতে চাই না। এটা ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কতিপয় সামরিক, বেসামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনার সময় আমি এমআইএসটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমাকে প্রথমে পিলখানা থেকে ফোন করে ক্যাপ্টেন তানভীর (যিনি পরে শহিদ হয়েছেন) বললেন, উই আর ইন ট্রাবল, জুনায়েদকে (যিনি তত্কালীন সেনাপ্রধান মইনের এডিসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন) বিষয়টি জানাও।

তিনি আরও বলেন, আমি তাকে (জুনায়েদ) বার্তাটি পাঠাই। জুনায়েদ আমাকে বললেন, সেনাপ্রধান বিষয়টি অবহিত। এরপর এমআইএসটি থেকে আমরা ১০-১৫ জন ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডে চলে যাই। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেখানে যাওয়ার পর তৎকালীন মেজর জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া (যিনি পরে সেনাপ্রধান হন) আমাদেরকে বাধা দেন। এরপর আমরা সাত-আট জন সেনা অফিসার অস্ত্রসহ আমাদের ব্রাদার-অফিসার ও তাদের পরিবারকে বাঁচানোর জন্য আবাহনী মাঠের দিকে রওনা হই। কয়েকটি গণমাধ্যমে তখন এই ছবি প্রচারও হয়েছিল। আমাদের ওপর কয়েক জন বিডিআর সদস্য গুলি ছুড়তে শুরু করে। এ অবস্থায় আমাদের রিইনফোর্সমেন্ট দরকার ছিল। এজন্য আমি এমআইএসটির তখনকার কমান্ডার মে. জে. ওয়াদুদকে ফোন করি, উনি আমাকে প্রচণ্ড গালাগাল করেন। উনি বরং পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাকে সেখান থেকে চলে আসতে বলেন।’

ক্যাপ্টেন (অব.) ড. খান সুবায়েল বিন রফিক বলেন, সেদিন সেনাবাহিনী পিলখানায় ঢুকতে পারলে এই গণহত্যা হতো না। ২৭ ঘণ্টা পর ঢুকেছিল সেনাবাহিনী। এর আগেই সেনা অফিসারদের হত্যা করা হয়। ট্র্যাক করে করে পিলখানায় সেনা অফিসারদের অবস্থানের তথ্য দেওয়া হয়েছিল, সে অনুযায়ী তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনার চার মাস পর বিডিআরে আমার পোস্টিং হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে বিচারের লক্ষ্যে একাধিক তদন্ত চলতে থাকে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে করা তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন বর্তমানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। র‍্যাবের পক্ষ থেকেও তদন্ত চলে। পুলিশের পক্ষ থেকে চলা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন আবদুল কাহার আকন্দ ও মনিরুল ইসলাম। আর বিডিআরের অভ্যন্তরীণ তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন আজিজ আহমেদ (সাবেক সেনাপ্রধান)। আর আমার দায়িত্ব ছিল সবগুলো তদন্ত কমিটির মধ্যে সমন্বয় করা। সে হিসেবে আমার কাছে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ, রিপোর্ট চলে আসে। সুষ্ঠু তদন্তের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, প্রাপ্ত রিপোর্টসমূহে দেখতে পাই—ঘটনার পরিকল্পনা হয় ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে। এরপর তিন মাস ধরে (২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) বিডিআরের ৫০ জনের মতো সদস্য বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসামরিক ব্যক্তির সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এসব তথ্য জানতে পারেনি—এটা সম্পূর্ণ অসত্য। জেনেও তারা গোপন করেছিল। আওয়ামী লীগের একজন সাবেক এমপি প্রতি শুক্রবার পিলখানা মসজিদে জুমা পড়তে যেতেন। নামাজের পর তিনি সেখানে এক-দেড় ঘণ্টা বিডিআরের সৈনিকদের সঙ্গে মিটিং করতেন। পরে তার বাসায়ও একাধিক মিটিং হয়। সেসব মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের আরেক জন সাবেক এমপি থাকতেন। মিটিংয়ে বিডিআরের সৈনিকদের উদ্দেশে সাবেক এক এমপি বলেছিলেন, বেশি মারার দরকার নেই, দুই-তিন জন অফিসার মেরে ফেললেই হয়, বাকিটা আমরা দেখব। এই দুই সাবেক এমপি হলেন ফজলে নূর তাপস ও জাহাঙ্গীর কবির নানক।

ঘটনাবলীর বর্ণনায় ক্যাপ্টেন (অব.) ড. খান সুবায়েল বিন রফিক বলেন, তদন্তকাজে মইনুল ইসলাম ও আজিজ আহমেদ সহযোগিতা করতেন না। বরং সুনির্দিষ্টভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চাই- ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিডিআরের তিন জন পিলখানার ভেতরে আত্মহত্যা করেন। তবে আদৌ তারা আত্মহত্যা করেছিলেন কিনা, সেটি তদন্ত হয়নি। এই তিন জন ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর বিডিআরের তৎকালীন ডিজি মইনুল ইসলাম ও আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে ডাকেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তদন্তের রিপোর্ট পেশ করি। উনি রিপোর্টটি ছুড়ে ফেলে বলেন, কী আবোল-তাবোল রিপোর্ট, যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয়েছে সেভাবে কাজ করতে হবে।

ড. খান সুবায়েল বিন রফিক বলেন, তখন মইনুল ইসলাম আমাকে বলেন, রিপোর্টে যেন কোনো রাজনৈতিক নেতার নাম না আসে, পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতেই সবকিছু করতে হবে, সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের রিপোর্টের ভিত্তিতে কিছু করা যাবে না। এরপর আবারও আমাদের দুই জনকে প্রধানমন্ত্রী ডাকেন। সেদিনও আমি রিপোর্ট পরিবর্তন করিনি। আমি বলেছিলাম, আমার ভাইয়ের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। এরপর আমাকে পিলখানা থেকে তুলে নেওয়া হয়। ৩৬১ দিন ডিজিএফআইতে রাখা হয় আমাকে। সেখান থেকেই এই আয়নাঘরের শুরু। পাঁচ বছর আমি অন্তরীণ থাকি। এরপর ছাড়া পেলেও আর দেশে থাকতে পারিনি। আজিজ, মইনুল, আকবর, জিয়াউল আহসান—এদের সবার হাত সে সময়ের রক্তে রঞ্জিত।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালটা শুরু হয়েছিল তৎকালীন বিডিআরের বার্ষিক বিশেষ আয়োজন দিয়ে। কিন্তু শেষ হয় রক্ত, লাশ আর বারুদের গন্ধে। ১৫ বছর আগে বর্তমান বিজিবি সদর দপ্তর পিলখানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ করেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্য। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে বিপথগামী সদস্যরা কিছু দাবিদাওয়া আদায়ের নামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে তাণ্ডব চালান।

ওই দুই দিনে তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং আরো ১৭ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করেন বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা।

Header Ad

৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা

ছবি: সংগৃহীত

মানহানিকর এবং মিথ্যা প্রতিবেদন প্রচার করার অভিযোগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ওরিয়ন গ্রুপ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের পক্ষে এর প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মো. শামসুর রহমান এবং টেলিভিশনটির সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ রাফিকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য আগামী ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

মামলায় ওরিওন গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন বারবার একটি বিভ্রান্তিকর ও সম্পূর্ন অসত্য প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছে। ওই প্রতিবেদনে মিথ্যা অভিযোগ করে বলা হয় যে সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারকে কোনো বিদ্যুৎ না দিয়েও ওরিয়ন সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচার করেছে।

ওরিয়ন গ্রুপ দৃঢ়ভাবে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে। এ কোম্পানি সবসময় জাতীয় নিয়মনীতি পুরোপুরি মেনে ব্যবসা করেছে। বাংলাদেশের আরও শতাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের মতো একই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) করেছে ওরিয়ন গ্রুপ। প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে ২০১১ সাল থেকে ওরিয়ন তাদের ছয়টি অত্যাধুনিক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সম্পূর্ণরূপে চালু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৬.৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।

বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওরিয়ন গ্রুপ নিশ্চিত করছে যে, কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সমন্বয়ে সমস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার অর্থায়ন করা হয়েছে। ব্যবসায়িক ঋণ ওরিয়ন ধারাবাহিকভাবে সময়মতো পরিশোধ করে চলছে।

এ ছাড়া দুবাই ও চীনের দুটি বিদেশি কোম্পানি ওরিয়ন গ্রুপের মালিকানাধীন হওয়ার অভিযোগও মিথ্যা। এই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ওরিয়নের অংশীদারত্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিডিং প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং কোম্পানি দুটির কোনোটিই ওরিয়নের চেয়ারম্যান বা কোন বাংলাদেশি ব্যক্তির মালিকানাধীন নয়। ওরিয়ন গ্রুপের কোনো কোম্পানিতে কোনো বহিরাগত রাজনৈতিক মালিকানা নেই।

এসব মিথ্যা দাবি ও মানহানিকর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে তা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার লঙ্ঘনও। যাচাই না করে প্রমাণ ছাড়া এসব প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্দেশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ওরিয়ন গ্রুপের সুনাম নষ্ট করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ওরিয়ন গ্রুপ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের এই উদ্যোগ নিয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাংবিধানিক শূন্যতার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবার অধ্যাদেশের মাধ্যমে সেই সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে আনুষ্ঠানিকতা চূড়ান্ত হলো।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা, পদত্যাগ এবং আনুষঙ্গিক অন্য বিষয়ে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। অধ্যাদেশ বিধান করতে এর খসড়া প্রস্তুত করেছে আইন ও বিচার বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,

১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ব্যাপক দমন-পীড়ন ও গণহত্যা চালানোর ফলশ্রুতিতে সমগ্র দেশে দল-মত-নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা উত্তাল গণবিক্ষোভ করে এবং আন্দোলনের এক পর্যায়ে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ২১ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৫ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।

২. মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিগত ২২ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৬ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন।

৩. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক সংকট মোকাবেলা, জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সচল রাখা এবং রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন বিষয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত যাচনা করেন।

৪. সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে স্পেশাল রেফারেন্স নম্বর-০১/২০২৪ দ্বারা মতামত প্রদান করেছে যে, ‘রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি উক্তরূপে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্য উপদেষ্টাগণকে শপথ পাঠ করাতে পারবেন।

৫. বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ডকট্রিন অব নেসেসিটি অনুসারে সাংবিধানিক সংকট মোকাবেলায় সর্বস্তরের জনগণের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও পরম অভিপ্রায়ের প্রেক্ষিতে, গণ-অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এবং ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের রাষ্ট্র সংস্কার আকাঙ্ক্ষা পূরণের ও রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৮ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে।

৬. উক্তরূপে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা, পদত্যাগ এবং আনুষঙ্গিক অন্য বিষয়ে বিধান করা জরুরি।

৭. বর্ণিত প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদ ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে।

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা, ২০২৪-এর খসড়ার অনুমোদনও দিয়েছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালার খসড়া প্রণয়নপূর্বক উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ যারা সরকার অথবা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত, তারা প্রতিবছর আয়কর জমা দেওয়ার সর্বশেষ তারিখের পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নীতিমালায় সংযুক্ত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার নিকট তাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রেখে খসড়া ‘আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা' উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে অনুমোদিত হয়।

ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ: আসিফ নজরুল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (ইনসটে শেখ হাসিনা)। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদ এবং সাংবিধানিক কাঠামো সংস্কারে গঠিত কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, সংস্কার বিষয়ে আওয়ামী লীগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হবে। যারা গণহত্যা চালিয়েছে, হাজারের ওপর মানুষকে হত্যা করেছে, হাজার হাজার মানুষকে আহত করেছে, যারা বিচারের ভয়ে পালিয়ে আছে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না। এটা আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য।

এ সময় ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার বিচারের জন্য তাকে ফিরিয়ে আনা হবে কি না জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, ভারত সরকারের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে।

আসিফ নজরুল জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এগুলো অক্টোবরে কাজ শুরু করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে সংস্কারের প্রতিবেদন জমা দেবে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়াও প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কারে প্রাধান্য দেবে কমিটি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন
ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ: আসিফ নজরুল
সালমান শাহ এক অকৃত্রিম ভালোবাসার নাম: শাবনূর
সাবেক মন্ত্রী রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মানুষটার শরীর দেখে বারবার আবরারের কথা মনে পড়েছে: সারজিস
দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরে বেড়াচ্ছেন পার্কে
ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও বাংলাদেশের অবস্থান কত?
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ২ শিক্ষার্থী আটক
সৌদি আরবে হতে পারে আইপিএলের নিলাম
নিউইয়র্কে ড. ইউনূস-মোদির বৈঠক হচ্ছে না
শেখ হাসিনার ভারতেই থাকা উচিত : শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি
আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জনের মৃত্যু
ঢাবি ও জাবিতে পিটিয়ে হত্যা দুঃখজনক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাড়ে ২০ লাখ টাকা খরচে চালু হচ্ছে কাজিপাড়া স্টেশন
এস আলম গ্রুপের তথ্য চেয়েছে সিঙ্গাপুরের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে দুই দলের সংঘর্ষ, আহত ১৫
চাকরির বয়সসীমা ৩৫ চান না সারজিস
কোহলি-রোহিতকে আউট করে ‘গালি’ খাচ্ছেন হাসান মাহমুদ