অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্তিসহ নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবি
অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্তিসহ নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্তিসহ নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলেন এই দাবি করে সংগঠনটি। তাদের দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলেনে বলা হয়, আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বিচার বিভাগাধীন অধস্তন আদালতের কর্মচারী। বিচারিক কাজের সঙ্গে বিচারক ও সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ পুলিশ এবং আইনজীবীদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু, অধস্তন আদালতের কার্যক্রম বিচারক ও সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমেই সম্পাদিত হয়। ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, সিভিল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস এর আলোকে বিচারকের নির্দেশনা মোতাবেক অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বিচার কাজে অত্যাবশ্যকীয় ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিচারক ও সহায়ক কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলী ও পদোন্নতি দিয়ে থাকেন আইন মন্ত্রণালয় এবং অধস্তন আদালতের সহায়ক কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রদান করে থাকেন জেলা জজ। সহায়ক কর্মচারীদের আন্তঃজেলা বদলি করেন হাইকোর্ট বিভাগ।
আরও বলা হয়, আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জুডিসিয়াল সার্ভিস পে-স্কেল এর আলোকে বিচারকদের বেতন-ভাতাদি প্রদান করা হলেও আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বিচারকদের সাথে একই দপ্তরে কর্ম করেও জনপ্রশাসনের বেতন-ভাতাদি পান। বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়ার পর বিচার বিভাগের জন্য ৬টি গ্রেড রেখে পৃথক পে-স্কেলসহ নিয়োগ বিধিমালা করা হলেও সহায়ক কর্মচারীদের উক্ত পে-স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিচারকদের জন্য বিচারিক ভাতা, চৌকি ভাতা, দেওয়ানি আদালতের অবকাশকালীন ছুটি (ডিসেম্বর মাস) ফৌজদারি আদালতে দায়িত্ব পালনের জন্য এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অবকাশ ভাতা থাকলেও বিচার সহায়ক কর্মচারীদের উক্তরূপ কোন ভাতা দেয়া হয়না। এক কথায় বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পর বিচারকদের জন্য যে সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে, বিপরীতে বঞ্চিত করা হয়েছে সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এমনকি মাঠ পর্যায়ে সমন জারির সাথে সম্পৃক্ত জারীকারকদের কোন ধরনের টিএ/ডিএ প্রদান করা হয় না। এমনইভাবে একই দপ্তরে কর্ম করে নানাবিধ বৈষম্যের যাঁতাকলে নিম্ন আদালতের কর্মচারীরা।
অধস্তন আদালতের কর্মচারীরা বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্তিসহ নিয়োগবিধি সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগের বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে সংস্কারের নিমিত্ত কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল স্যারসহ কর্তৃপক্ষের প্রতি বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় কর্ম বিরতিসহ অচিরেই কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।