গণঅধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক ও উচ্চতর সদস্য শাকিল উজ্জামান বলেছেন- শেখ হাসিনা ২০০৮ থেকে ২৪ সালের কিছু সময় পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতাকালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দুই বার মাথানত করেছে। এই দুইবারই কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে মাথানত করেছে। একটা হলো ২০১৮ সালে, যখন আমরা কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করি। সে জায়গায় ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা-আচিরা মহাসড়ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য রাজপথ যখন যৌক্তিক দাবিতে অবরোধ করা হলো তখন শেখ হাসিনা বাধ্য হয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। আরেকবার বাধ্য হলো ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত ছাত্র অধিকার পরিষদের টাঙ্গাইল সদর উপজেলা শাখার পরিচিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ি করে শাকিল উজ্জামান বলেন- আপনারা দেখেছেন, সচিবালয়ে একটা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। আমরা বলতে চাই, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডটা সচিবালয়ের ভেতরে শেখ হাসিনার দোষরা পরিকল্পিতভাবে করেছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, কিন্তু তার দাস-দোসররা এখনো দেশে রয়েছে। তারা এখনো কিন্তু দেশে বসে দেশে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা অথিতে দেখেছি, আমরা যখন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি তখন শেখ হাসিনা তার প্রশাসন বাহিনী দিয়ে আমাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করেছে।
দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বলেন, আমরা যখন রাজপথে আন্দোলন করেছি সেসময়ে সচিবালয়ের ভেতর থেকে বিভিন্ন রকম আমলা ও কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার জন্য তারা মিছিল করে। যে সকল আমলা ও কর্মকর্তারা হাসিনার পক্ষে বিগত সময়ে সচিবালয় থেকে মিছিল করেছে, শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য কাজ করেছে তারা এখনো কিভাবে সচিবালয়ে থাকে। আমরা বলতে চাই, এ সকল শেখ হাসিনার দোসরদের কারণেই সচিবালয়ের ভেতরে অগ্নিসংযোগটা হয়েছে। সচিবালয়কে বলা হয় দেশের হৃদপিণ্ড, সকল কিছু এই সচিবালয়ের ভেতরে থাকে। সেই সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের দোসররা এই অগ্নিকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
তিনি আরও বলেন- আপনারা দেখে থাকবেন, বিগত কয়েকদিন ধরে সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতৃবৃন্দরা বিভিন্ন মাধ্যমে শেখ হাসিনা মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতির খবরগুলো পত্র-পত্রিকায় এবং বর্হিবিশ্বে প্রচার করা হচ্ছে, তথ্য বেরিয়ে আসছে ঠিক সেই সময়ে শেখ হাসিনা তার যে দোসরগুলো রেখে গেছিল সেই দোসরগুলো দিয়ে শেখ হাসিনা দুর্নীতি, লুটপাট করেছে। এই দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র দেশে এবং বর্হিবিশ্বে যেন প্রচার না হয়, অপরাধ যেন বর্হিবিশ্বে প্রচার না হয় সেই অনিয়ম, দুর্নীতি নথিপত্র তারা তাদের দোসরদের দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা বলতে চাই, শেখ হাসিনা তার দোসরদের দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির নথিপত্র পুড়ে রেহাই পাবে না। এই অপরাধের জন্য তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য মুখোমুখি হতে হবে।
এ সময় পরিচিত সভায় ছাত্র অধিকার পরিষদ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সভাপতি আল আমিন উদয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সিয়াম আহমেদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক প্রিয়ম আহমেদ, টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ফাহাদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী, সদর উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক তামান্না ইসলাম তরী, গণঅধিকার পরিষদের সাবেক আহবায়ক জহিরুল ইসলাম, সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান রাসেল, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাসেল হাসান ছানবীর প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলার গণঅধিকারের পরিষদের অন্যান্য নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাপশন:
গণঅধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক ও উচ্চতর সদস্য শাকিল উজ্জামান বক্তব্য রাখছেন।