দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচনের আয়োজন করা হবে বলে কূটনীতিকদের জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ জন্য বন্ধু রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলোর পূর্ণ সমর্থন চেয়েছেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারসহ জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের ব্রিফ করেন ড. ইউনূস। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে দূতাবাসগুলো আছে তার রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের যেসব সংস্থার প্রধান এখানে আছেন তাদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি সবার পূর্ণ সমর্থন চেয়েছেন।
প্রেস সচিব আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- এটা দ্বিতীয় রেভ্যুলেশন ছিল। এখানে এত মানুষের সম্পৃক্ততা ছিল যে তিনি বলেছেন ১৯৭১ সালে যদি প্রথম রেভ্যুলেশন হয় এটা দ্বিতীয় রেভ্যুলেশন। তার বার্তা ছিল খুব দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা। উনি নির্বাচনটি তখনই করবেন যখন প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায়। বিচার বিভাগ, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিকিউরিটি ফোর্স, মিডিয়া- সবকিছুতে সংস্কার চিহ্নিত করে বাস্তবায়ন করে যত দ্রুত নির্বাচন দেওয়া যায় সেটি তার লক্ষ্য। তিনি বলেছেন এখন প্রধান কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা। সেটি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিন দুপুর পৌনে ১টার পর রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারসহ জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা এই ব্রিফিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কূটনীতিকদের উদ্দেশে সংকটকালে বাংলাদেশের পাশে থাকায় বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে কৃতজ্ঞ, সংকটকালীন তারা আমাদের সহায়তা করেছে। বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি। দুই সপ্তাহ হলো বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সাধিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। অনেকেই দেশে থেকে পালিয়ে গেছেন।
ড. ইউনূস বলেন, আমি তরুণদের সম্মান জানাই যারা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের জন্য তারা এই আত্মত্যাগ করেছেন। বৈষম্যহীন, বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ চায় তরুণ সমাজ। আমি দেশের দায়িত্ব নিয়েছি, তবে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার বিভাগ ভেঙে পড়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে, পাতানো নির্বাচন করা হয়েছে। ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে তরুণ সমাজ বেড়ে উঠেছে। রাজনৌতিক প্রভাবে ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সাধারণ মানুষের স্বাধীনতার জন্য ছাত্র-জনতা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শত শত মানুষ মারা গেছে, হাজার হাজার মানুষ আহত। আমি আশা করি আপনারা আমাদের সহায়তা করতে পারেন। অনেক শিক্ষার্থী বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন, অনেকের রাবার বুলেট চোখে লেগেছে। তাদের দেখতে গিয়েছিলাম। জানি না তাদের কী হবে।