বাতিল হচ্ছে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
ছবি: সংগৃহীত
প্রশাসনে সব স্তরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করবে অন্তর্বর্তী সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) প্রশাসনে দুই ডজনের বেশি কর্মকর্তা বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করছেন। এসব কর্মকর্তা পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বুধবার (৭ আগস্ট) ফোনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে গত সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করার পর অন্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা ত্যাগ করেছেন বলে গণ্য হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। গত জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠনের পর প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোকে থাকা কর্মকর্তারা অপরিহার্য না হলেও আস্থাভাজন হওয়ার কারণে মেয়াদ শেষে তাদের চুক্তিতে রেখে দেওয়া হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের যেন হিড়িক পড়েছিল, ভোটের পর অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা চুক্তিতে নিয়োগ পান।
সরকার আবার ক্ষমতায় আসার কৃতজ্ঞতা হিসেবে আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে সরকারের পতন হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মঙ্গলবার রাতে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আইজিপির পদটি সরাসরি আইন-শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় এটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এখন অন্য সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হবে। এখন যেহেতু কোন সরকার ফাংশনাল না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
বর্তমানে প্রশাসনে সচিব/সিনিয়র সচিব বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন ৮৫ জন। এরমধ্যে চুক্তিভিত্তিতে নিয়োজিত রয়েছেন ১৯ জন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া, জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) আহমেদ মনিরুছ সালেহীন, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তারসহ আরও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা রয়েছেন।