ধানমন্ডির ৩/এ–তে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে এখন স্লোগান দিচ্ছে ছাত্র-জনতা। তাদের উল্লাস করতেও দেখা যাচ্ছে।
সোমবার (০৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার পর আন্দোলনকারীরা ধানমন্ডির কার্যালয়ে গিয়ে আগুন দেন। এর আগে বাংলাদেশ ছেড়ে পালান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা ঢাকা ছাড়েন। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। এদিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ দৃশ্য দেখা যায়। দেখা যায়, ফটক ভেঙে হাজারো আন্দোলনকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় ঢুকে পড়েন। বাড়ির ভেতর থেকে ধোঁয়াও বের হতে দেখা যায়। ভেতরে ভাঙচুরও চলে।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বকুলিয়া গ্রামে সংখ্যালঘু এক গৃহবধূকে (৩০) ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে এক বৃদ্ধকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান খান।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার রাইটা গ্রাম থেকে অভিযুক্ত আলাউদ্দীন (৫০) কে আটক করা হয়। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার বকুলিয়া গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে ওই গৃহবধূর স্বামী দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে গৃহবধূ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে গেলে সুযোগ বুঝে আলাউদ্দীন ঘরে ঢুকে পড়ে। এরপর ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। গৃহবধূর চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়, তবে ঘটনাস্থলে নিজের গামছা, টর্চলাইট ও ধারালো অস্ত্র ফেলে যায়।
পরে গৃহবধূ ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে।
ওসি বাবলুর রহমান খান জানান, আসামিকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
রাজশাহী রেলস্টেশনে ধুমকেতু এবং বাংলাবান্ধা ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। শনিবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনার পর একটি লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক মামনুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরে ও ওয়াশপিট থেকে একটি ট্রেন বের হচ্ছিল। অপর একটি ট্রেন লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় বাংলাবান্ধা ট্রেনের সঙ্গে ধুমকেতু ট্রেনের ধাক্কা লাগে। ধাক্কায় ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে যায়। এতে একটি লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে অন্য লাইনে ট্রেন চালু রয়েছে।
তিনি বলেন, ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন ডাকা হয়েছে। বগিটি উদ্ধার অভিযান শুরু করলে ৪০ মিনিট সময় লাগবে উদ্ধার করতে।
রাজশাহী রেলের স্টেশন ম্যনেজার শহিদুল আলম জানান, দুটি ট্রেনই খালি ছিল, যাত্রী ছিল না। তাই হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে রিলিফ ট্রেন না আসা পর্যন্ত বিকেল চারটায় ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন চলতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা হলে চাল সরবরাহ বন্ধসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটি। শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ডাকা প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
নওগাঁ জেলার সর্বস্তরের জনগণ ও নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ব্যানারে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, বিএনপি, জামায়াত, বাসদ, একুশে পরিষদ নওগাঁসহ নওগাঁর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আহ্বানে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের চলমান ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নওগাঁ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় নওগাঁ মেডিকেল বন্ধের অপচেষ্টা রুখতে বিএমএ নওগাঁর সভাপতি চিকিৎসক ইস্কেন্দার হোসেনকে আহ্বায়ক করে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটি গঠিত হয়।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ইস্কেন্দার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজমুল হক, নওগাঁ পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান, জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এসএম রায়হান আলম, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাদ হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি মনিরুল হক, শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান রাকিব, নুসাইবা বিনতে হক প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ কখনোই মানহীন হতে পারে না, নওগাঁ মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ফলাফল অন্যান্য মেডিকেল কলেজের থেকে অনেক ভালো। শুধু ভবন না থাকা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান যাচাইয়ের মাপকাঠি হতে পারে না। সরকারি প্রতিষ্ঠান মানহীন হলে এর দায়ভার সরকারের। মান উন্নয়ন না করে উল্টো সরকার যে মানহীন আখ্যা দিয়ে মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে যাচ্ছে, এটি হঠকারী ছাড়া কিছুই না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে মেডিকেল শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতের বিশাল ঘাটতি তৈরি হবে। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ও সংকুচিত হয়ে পড়বে। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সংশ্লিষ্টদের সরে আসার দাবি করা হয়। অন্যথায় নওগাঁবাসীকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজ রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক ইস্কেন্দার হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে জানতে পারছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানহীন তকমা লাগিয়ে নওগাঁ মেডিকেল কলেজসহ ৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ কখনোই মানহীন হতে পারেনা। আমাদের এখানে শিক্ষার্থী অনুপাতে প্রতি ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন করে শিক্ষক আছে। আমার মনে হয় না এটি বাংলাদেশের আর কোনো মেডিকেল কলেজে আছে। এখানে যারা শিক্ষক আছেন তারা সকলেই উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে ২৬টি মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা হয় সেই পরীক্ষায় বরাবরই নওগাঁ মেডিকেল কলেজ প্রথম স্থান কিংবা দ্বিতীয় স্থানে থাকা। ভালো ফলাফল সত্ত্বেও এই মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের হঠকারিতা। এই কলেজ বন্ধ করা হলে নওগাঁ থেকে চাল, আম সরবরাহ বন্ধ, অনশনসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে একাত্মতা ঘোষণা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজমুল হক বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের হঠকারিতা ছাড়া আর কিছুই না। নওগাঁবাসী কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না। কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান মানহীন হলে সেটার মান উন্নত করার দায়িত্ব সরকারের। প্রতিষ্ঠান বন্ধ কোনো সমাধান হতে পারে না। নওগাঁ মেডিকেল কলেজ বন্ধের অপচেষ্টা রুখতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সব সময় রাজপথে থাকবে। প্রয়োজনে নওগাঁ থেকে সারাদেশে চাল, আম সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মুক্তার হোসেন বলেন, নতুন ৬টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে মানের দিক থেকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ সবচেয়ে এগিয়ে আছে। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জেনেছি নতুন যে ৬টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে এদের মান যে পর্যায়ে উন্নত হওয়ার কথা ছিল সেই পর্যায়ে নাকি আসেনি। যার কারণে সরকার এই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য মেডিকেল কলেজে নিয়ে এই মেডিকেল কলেজগুলোকে বন্ধের কথা ভাবছে। তবে এখনও বন্ধের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।