আজ থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন, যা যা মানতে হবে
এক দফা দাবিতে আজ থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত
এক দফা দাবিতে আজ রোববার (৪ আগস্ট) সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালিত হবে।
শনিবার (৩ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে এক ফেসবুক পোস্টে এসব কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
তিনি বলেন, এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি আগামীকাল (৪ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালিত হবে। সকাল থেকেই ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে ছাত্র-জনতাকে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগে বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিতে সকলের অংশগ্রহণের আহ্বান করছি।
কর্মসূচি সফল করতে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান আসিফ মাহমুদ।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালন করব। তবে আঘাত এলে তা প্রতিহত করার সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান রইল।
অসহযোগে যা যা চালু থাকবে-
হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, জরুরি পরিবহন সেবা (ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন), অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট-সেবা, জরুরি ত্রাণসহায়তা ও এ খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবহন সেবা চালু থাকবে।
যা যা বন্ধ থাকবে-
১. সব ধরনের সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও কলকারখানা বন্ধ থাকবে।
২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
৩. বিলাস দ্রব্যের দোকান, শো-রুম, বিপনি-বিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে।
৪. দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, এজন্য সব অফশোর ট্রানজেকশন বন্ধ থাকবে।
৫. সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
৫. ব্যাংকগুলো বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রোববার ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে।
মেনে চলবেন যেসব বিষয়-
১. কেউ কোনো ধরনের ট্যাক্স বা খাজনা প্রদান করবেন না।
২. বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করবেন না।
৩. প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনো ধরনের রেমিটেন্স দেশে পাঠাবেন না।
৪. বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দিবেন না। কোনো ধরনের পণ্য খালাস করবেন না।
৫. দেশের কোনো কলকারখানা চলবে না, গার্মেন্টসকর্মী ভাই-বোনেরা কাজে যাবেন না।
৬. গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না।
৭. পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ব্যতিত কোনো ধরনের প্রটোকল, রায়ট ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধুমাত্র থানা পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে।
৮. বিজিবি ও নৌ-বাহিনী ব্যতিত অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌ-বাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে।
৯. আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না।
১০. সব ধরনের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জরুরি লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রোববার ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে।