বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশের সকল স্থপতি এলামনাই এসোসিয়েশনের যৌথ বিবৃতি
বাংলাদেশের সকল স্থপতি এলামনাই এসোসিয়েশন। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের সকল স্থপতি এলামনাই এসোসিয়েশন। শুক্রবার (২ আগস্ট) গণমাধ্যমকে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সকল স্থপতি এলামনাই এসোসিয়েশনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সবাই অবগত রয়েছি। একটি যৌক্তিক ও সুস্পষ্ট অরাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের "বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন" দীর্ঘসময় শান্তিপূর্ণভাবে চললেও একসময়ে গিয়ে কতিপয় অপরিণামদর্শী বক্তব্য ও উষ্কানিতে কিছু সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করায় পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে একে একে হারিয়ে যেতে থাকে অনেক অমূল্য প্রাণ, গুরুতরভাবে অঙ্গহানি ও দৃষ্টিহানি ঘটে অসংখ্য। পরবর্তীতে আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অনৈতিকভাবে গ্রেফতার, আটক ও হয়রানি চলতে থাকে। উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ই সংবিধান ও আইন অনুসারে নাগরিকের মৌলিক অধিকার বিরোধী বলে প্রতীয়মান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সাধারণ নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার হরণকারী এরূপ বলপ্রয়োগ, বেআইনি পদক্ষেপ এবং তাদের প্রাণহানি, অঙ্গহানি, দৃষ্টিহানিতে আমরা বাংলাদেশের স্থাপত্য স্কুলসমূহের প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ মর্মাহত, বিচলিত ও উদ্বিগ্ন।
বর্তমান পরিস্থিতির আশু উত্তরণে আমরা নিম্নলিখিত দাবিসমূহ উপস্থাপন করছি-
১. আন্দোলনের প্রতিটি প্রাণহানির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
২. নিরস্ত্র সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সামরিক বাহিনী আর কোনও প্রকার প্রাণহানিকর বা অঙ্গহানিকর বা দৃষ্টিহানিকর আঘাত করবে না।
৩. আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক সাধারণ শিক্ষার্থীর সাথে সাথে প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।
৪. বেআইনিভাবে আটক থাকা প্রতিটি সাধারণ শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ধরপাকড় বন্ধ করতে হবে।
স্থপতির মূল ভূমিকা দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা এবং দেশের শিক্ষার্থীদের চেয়ে এ কাজটি আর কেউ ভালোভাবে করতে সক্ষম নয়; দুর্ভাগ্যবশত তারাই বর্তমানে চরম সহিংসতা এবং অবিচারের শিকার হচ্ছে। আমরা, প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অনুরোধ করছি যে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করা হোক এবং রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষার্থী এবং নাগরিকদের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হোক।
উল্লেখ্য, শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার আফতাবনগর, বনশ্রী ও সায়েন্সল্যাবসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থী-জনতার বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।