কোটা আন্দোলনে জানমাল অনিশ্চয়তায় পড়লে পুলিশ বসে থাকবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ছবি: সংগৃহীত
কোটা আন্দোলনে জানমাল অনিশ্চয়তায় পড়লে পুলিশ বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলন করছে, তারা শিক্ষিত ছেলে। তারা মেধাবী ছেলে। তারা কেন রাষ্ট্রের বিপক্ষে যাবেন? তারা নিশ্চয়ই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে ফিরে যাবেন।
তিনি বলেন, পুলিশ যখন অপারগ হয়ে যায়, তখনই অ্যাকশন আসে। (আন্দোলনকারীরা) যখন অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংস করতে যাবে, যখন জানমালের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, তখন পুলিশ বসে থাকবে না।
কোটাবিরোধীরা সরকারের নির্বাহী আদেশের অপেক্ষায় আছেন। তারা আজও রাস্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। এতে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেন। দেশের বিচারবিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আদালত থেকে যে নির্দেশনা এসেছিল- ছাত্ররা মনে করেছেন-তাদের যে চিন্তাভাবনা, তা থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এ কারণে তারা রাস্তায় চলে এসেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, তারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তারা খুবই মেধাবী, তাদের চাহিদা আমরা শুনব। কিন্তু শোনারও একটা সীমা বোধ হয় থাকে। তারা বোধ হয় তা অতিক্রম করে যাচ্ছেন। আজ বেশ কয়েকদিন হলো তারা একই কাজ করছেন। এরইমধ্যে দেখেছেন, প্রধান বিচারপতি একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, যে নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছেন, তা স্থগিত। যে মামলা চলছে, সে মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তা স্থগিত থাকবে। কাজেই হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তা অচল, তা এখন নেই।
তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয়, ছাত্রদের এসব বোঝা উচিত। রায় যখন নেই, তখন আন্দোলন করছেন কেন? আমার মনে হয়, আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা খুবই পরিষ্কার। ছাত্রদেরও অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের যদি কিছু বলার থাকে, তাহলে আদালত তাদের কথা শুনবেন। তারা যেন আদালতে আসেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, শিক্ষার্থীরা যেমনটি চেয়েছিলেন, সেদিকেই যখন যাচ্ছে, তখন রাস্তায় থেকে তাদের কষ্ট করার দরকার নেই। আদালত সব ধরনের সুযোগ তাদের জন্য রেখেছেন। তাদের কথা শুনতে চাচ্ছেন আদালত। এখন রাস্তায় অবস্থান করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) হার্ডলাইনে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, গতকাল আপনারা যারা যাতায়াত করেছেন, তাদের কী রকম কষ্ট পেতে হয়েছে! আমি অনুরোধ করছি, কোমলমতি ছাত্ররা, যাদের নিয়ে আমরা গর্ব করি, তারা যেন এখানে কষ্ট না করে আদালতে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
পৃথিবীর অনেক দেশে এই ধরনের কোটা রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, অনগ্রসর কোনো জায়গাকে লক্ষ্য রেখে এ ধরনের কোটা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে।
কোটা আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ধরনের আন্দোলন হলে ঘোলা পানি তৈরির লোকের অভাব হয় না। আমরা যে তথ্য পাচ্ছি, অনেকেই তাদের ব্যবহার করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে, দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, আমাদের ছাত্রসমাজ তাদের কুমন্ত্রণা কানে নেবে না। যেহেতু এটি মীমাংসার পথে চলে গেছে, তারা ব্লকেড প্রত্যাহার করে ফিরে যাবেন।