রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

এনবিআরের সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণে বছরে শতকোটি টাকা ব্যয়, তবুও হ্যাক

ছবি: সংগৃহীত

কাস্টমসের সার্ভারে একের পর এক হ্যাকের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ২০১৫,২০১৬,২০১৯,২০২২ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে কয়েকদফা রাজস্ব কর্মকর্তাদের আইডি হ্যাক করে কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য খালাস নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর এতে প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

অথচ প্রতিবছর কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণের নামে শতকোটি টাকা খরচ করে যাচ্ছে এনবিআর। গত ৩ বছরে সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কেনাকাটা করেও এনবিআরের সার্ভার সিস্টেম নিরাপদ করা যায়নি। অথচ বার বার এ ঘটনা ঘটলেও এখনো নিশ্চুপ-নির্বিকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ।

উচ্চ শুল্ক ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মদ-বিয়ার, সিগারেট, ঘন চিনি ও বন্ডের কাপড় চালান ধরা পড়লেও দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিতের পরিবর্তে দায়িত্বশীলদের মনোযোগ শুধু কেনাকাটায়। ৩ বছরে সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি এই সংস্থাটি প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কেনাকাটা করেছে। তবে এই কেনাকাটার মান ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ সংস্থাটির অভ্যন্তরে। দায়িত্বশীলরা দায় এড়াতে বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে কাস্টমস কর্মকর্তাদের দিয়ে লোকদেখানো অডিট করাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে এবং কেনাকাটা জায়েজ করতেই অডিটের নামে আইওয়াশ করা হচ্ছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সিস্টেমের কেনাকাটা ও অডিট করালে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

কাস্টমসে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দুর্নীতি রোধে ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা কাস্টম হাউজে অ্যাসাইকুডা ভার্সন-টু সফটওয়্যার চালু করা হয়। ২০০২ সালে অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাস্টমস। পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালে অত্যাধুনিক ভার্সন হিসাবে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজসহ সব কাস্টম হাউজে চালু করা হয়। বর্তমানে এ পদ্ধতিতে আমদানি-রপ্তানি দলিলাদি জমা এবং শুল্কায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড) বাংলাদেশ কাস্টমসকে বিনামূল্যে অ্যাসাইকুডা সফটওয়্যারটি সরবরাহ করে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালে অ্যাসাইকুডা সিস্টেম হ্যাকের খবর আলোচনায় আসে। ওই বছর শুল্ক গোয়েন্দার তদন্তে উঠে আসে, অবসরপ্রাপ্ত এক রাজস্ব কর্মকর্তার ইউজার আইডি-পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ১১৬ বার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে লগইন ও লগআউট করে পণ্য খালাস নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালে বদলি হওয়া আরেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার ইউজার আইডি ব্যবহার করে ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৮১ বার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে লগইন করা হয় এবং ৮৫০ কোটি টাকার পণ্য খালাস নেওয়া হয়। এ ঘটনায় তখন পুরো এনবিআরে হইচই পড়ে যায়।

এরপর ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর সিস্টেমে প্রবেশে নতুন সিকিউরিটি ফিচার ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) চালু করা হয়। তাতেও সিস্টেম নিরাপদ করা যায়নি। ২০২২ সালে মৃত রাজস্ব কর্মকর্তার ইউজার আইডি ব্যবহার করে সিস্টেমে প্রবেশের মাধ্যমে পণ্য চালান খালাসের চেষ্টা করা হয়। সর্বশেষ ২৮ জুন উপকমিশনার মোহাম্মদ জাকারিয়ার আইডি হ্যাকের মাধ্যমে ওয়াটার পিউরিফাইয়ার ঘোষণায় বিদেশি মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট খালাস নেওয়ার চেষ্টা চালায় সংঘবদ্ধ চক্র। শুধু মে মাসেই তার আইডি ব্যবহার করে সিস্টেমে ৪০-৪৫ বার প্রবেশ করা হয়েছে। অথচ এ সময় তিনি দেশেও ছিলেন না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, একের পর এক সার্ভার হ্যাকের ঘটনা ঘটায় ২০২২ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে সিস্টেম অডিট করানোর অনুরোধ জানিয়ে এনবিআরে একাধিক চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এনবিআর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উলটো অ্যাসাইকুডা সিস্টেম সুরক্ষার নামে বিপুল অঙ্কের অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করা হয়। আর শীর্ষ কর্মকর্তাদের খুশি রাখতে প্রশিক্ষণের নামে প্রতিবছর বিদেশ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। নেটওয়ার্কিং, ডেটা সেন্টার, সিকিউরিটি প্যাচ আপডেট, সার্ভিসিংয়ের নামে ৩ বছরে সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কেনাকাটা করা হয়েছে।

লোকদেখানো তদন্ত কমিটি : গত ১২ নভেম্বর কাস্টমস কর্মকর্তাদের দিয়ে সিস্টেমের ৭টি মডিউল অডিট করাতে পৃথক ৭টি কমিটি করা হয়। এগুলো হচ্ছে-১. বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বেপজা, বেজা ও আইভাস সিস্টেমের সঙ্গে অ্যাসাইকুডা সিস্টেমের ইন্টিগ্রেশন সংক্রান্ত অডিট। ২. রেফারেন্স মডিউল অডিট, ৩. এক্সিট নোট অডিট, ৪. পেমেন্ট অডিট, ৫. বিল অব এন্ট্রি মডিউল অডিট, ৬. মেনিফেস্টো ও বিল অব ল্যাডিং অডিট, ৭. ইউজার ম্যানেজমেন্ট অডিট। এসব কমিটিতে প্রোগ্রামার ছাড়া যে কাস্টমস কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে, তাদের কারোরই সফটওয়্যার বা আইটিবিষয়ক শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কারিগরি প্রশিক্ষণ নেই। কেউ পড়াশোনা করেছেন বাংলায়, কেউ ব্যবসায় প্রশাসন, কেউ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে, কেউ মাইক্রোবায়োলজি বা মার্কেটিং বিষয়ে। কমিটির সদস্যদের এক মাসের মধ্যে সিস্টেম অডিটের প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হলেও এখনো অধিকাংশ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

অডিটে প্রাপ্ত ফলাফলের বিষয়ে জানতে কয়েকটি কমিটির আহ্বায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত ৩টি কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, প্রতিবেদনে অ্যাসাইকুডা সিস্টেমের মডিউলের কর্মপদ্ধতি এবং সিস্টেম নিরাপদ রাখার বিষয়ে ‘ধারণাপ্রসূত’ রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। তবে কীভাবে সেটা সম্ভব, সেজন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সিস্টেম অডিট করাতে সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও অ্যাসাইকুডা সিস্টেম অডিট করতে কমিটি করেছিল এনবিআর। ২০২২ সালের ২২ জুলাই সিস্টেম হ্যাক করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস নেওয়া মদ-বিয়ারের চালান নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে র‌্যাব জব্দ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট সার্ভার হ্যাকের ঘটনা তদন্তে শুল্ক গোয়েন্দাকে নির্দেশ দেয় এনবিআর। তদন্ত কমিটি সার্ভার হ্যাকে জড়িতদের শনাক্তে ব্যর্থ হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) ছাড়া সিস্টেমে অনুপ্রবেশ অত্যন্ত টেকনিক্যাল হওয়ায় এবং এনবিআরের ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব না থাকায় সাইবার সিকিউরিটিতে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জড়িতদের শনাক্তে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

সরষের মধ্যে ভূত : সিস্টেম অডিটে জড়িত কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিবার সার্ভারে লগইনের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মোবাইলে ওটিপি এসেছে। কিন্তু আশ্চার্যজনক বিষয় হচ্ছে, যেসব চালানে মদ-বিয়ার, সিগারেট, ঘন চিনি ও বন্ডের কাপড় ছিল, সেসব চালানে ওটিপি মেসেজ যায়নি। প্রশ্ন হচ্ছে, পাসওয়ার্ড ঠিকভাবে দেওয়ার পরই কেবল মোবাইলে ওটিপি মেসেজ যাওয়ার কথা। সার্ভার হ্যাকের প্রতিটি ঘটনায় পাসওয়ার্ড সঠিকভাবে দেওয়া হয়েছে, কেবল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মোবাইলে ওটিপি যায়নি। এক্ষেত্রে হয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিজে পাসওয়ার্ড কম্প্রোমাইজ করেছেন অথবা কর্মকর্তাদের পাসওয়ার্ড যে স্থানে সুরক্ষিত থাকার কথা, সেখানে অ্যাকসেস রয়েছে এবং সিস্টেম সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারণা রয়েছে-এমন ব্যক্তিরা হ্যাকের সঙ্গে জড়িত, যা সাধারণ কর্মকর্তাদের পক্ষে নিরূপণ করা সম্ভব নয়।

সর্বশেষ ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে একাধিক আইটি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সার্ভার হ্যাকের পেছনে কাস্টমস ও আইটি কর্মকর্তাদের শতভাগ যোগসাজশ আছে। যোগসাজশ ছাড়া কোনোভাবেই সিস্টেম হ্যাক সম্ভব নয়। কারণ, সিস্টেম সুরক্ষার জন্য কম্পিউটারের সঙ্গে আইপি অ্যাডড্রেস বাইন্ড করা হয়। কোনো কারণে অন্য কর্মকর্তার কম্পিউটারের আইপি অ্যাডড্রেস ইউজার আইডির সঙ্গে বাইন্ড করা হলে আগের ইউজার আইডি থেকে আইপি অ্যাডড্রেস বাতিল (আইপি রিলিজ) হয়ে যায়। কেবল সিস্টেম সম্পর্কে জানাশোনা ব্যক্তিরাই বলতে পারবেন, কখন কোন আইপি বাইন্ড করা হয়েছে। তাছাড়া সিস্টেমে প্রবেশের জন্য সঠিক পাসওয়ার্ড দিতে হবে, তারপর আসে ওটিপি। এক্ষেত্রে কাস্টমস কর্মকর্তারা পাসওয়ার্ড কম্প্রোমাইজ না করলে সিস্টেমে প্রবেশ দুষ্কর। তাদের মতে, ইন্টারনেটে সবকিছুর ফুটপ্রিন্ট থাকে। কখন, কোথায়, কীভাবে, কে বা কারা সিস্টেমে প্রবেশ করেছে, সেটিরও ফুটপ্রিন্ট অবশ্যই থাকার কথা। উচ্চ আইটি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরা সহজেই সেটি শনাক্ত করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কেবল প্রয়োজন এনবিআরের সদিচ্ছা। বাংলাদেশেই এখন বিশ্বমানের আইটি ইঞ্জিনিয়ার আছে, যারা দেশে বসেই বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিচ্ছেন। অ্যাসাইকুডা সিস্টেমের অডিট করালে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করা সম্ভব।

এ বিষয়ে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের সরকারি ও করপোরেট কোম্পানিগুলো সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করে না। একবার একটি সিস্টেম চালু করলে সেটির সাইবার নিরাপত্তার খোঁজ রাখা হয় না। এ সুযোগটা নেয় দুষ্কৃতকারীরা। বিভিন্ন সিস্টেমে ঢুকে তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে হ্যাকাররা। বর্তমান সময়ে ব্যাংকের ভল্টের চেয়ে মূল্যবান হচ্ছে ডেটা ভল্ট। অ্যাসাইকুডা সার্ভার হ্যাক করে সিগারেট খালাস নেওয়ার চেষ্টার বিষয়ে তিনি বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এর জন্য যোগসাজশ অথবা অবহেলা দায়ী। এনবিআর তার সিস্টেম সুরক্ষিত রাখতে সাইবার অডিট করাতে পারে। বাংলাদেশেই এখন অনেক ভালো ইথিক্যাল হ্যাকার রয়েছে, যারা বিশ্বের অনেক বড় বড় সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করছে।

অ্যাসাইকুডা সিস্টেম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এই পৃথিবীর কোনো সফটওয়্যারই শতভাগ নিরাপদ নয়। অ্যাপল, ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানকেও প্রতিনিয়ত সাইবার ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়। আমরাও অ্যাসাইকুডা সিস্টেম নিরাপদ রাখতে সর্বাধুনিক ফায়ারওয়্যাল-ম্যালওয়্যার রান করাচ্ছি। সফটওয়্যারের ভালনারিবিলিটি পরীক্ষার জন্য কম্পিউটার কাউন্সিলে ফি জমা দিয়েছে। সফওয়্যাট নিরাপদ রাখতে কাজ করছি।

 

সংবাদ সূত্র: যুগান্তর

Header Ad
Header Ad

সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  

ছবিঃ সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানান, র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র‍্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় র‍্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র‌্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেফতার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

Header Ad
Header Ad

এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  

ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, জিয়া তো এমনি এমনি রাষ্ট্রপতি হননি, খালেদা জিয়াও তো এমনি এমনি প্রধানমন্ত্রী হননি। তেমনি তারেক সাহেবের ১৭ বছরের চেষ্টা, উদ্যোগ ও সংগ্রাম-সে তো প্রধানমন্ত্রী হবেই। ইলেকশন হবে। এই বছরের মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পঞ্চগড় পৌরসভার সামনের মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদীদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, শেখ পরিবার চোরের পরিবার। শেখ মুজিব ৪০ হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে রক্ষিবাহিনী দিয়ে হত্যা করেছিল। একদল করেছিল। ১৭ বছর পর এই বছরের মধ্যে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে সরকার। বিএনপির খেল এখনও দেখেননি। কয়েকটা জনসভা শুরু করেছি।

ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভাই আপনি ভাল লোক। একটা মর্যাদাশীল লোক। জ্ঞানীগুণী মানুষ। দেশে বিদেশে আপনার সুনাম আছে। এদের পাল্লায় পড়িয়েন না। বিএনপিকে রাস্তায় নামাইয়েন না। যদি একবার রাস্তায় নামান-ফুলের মালা দিয়ে আপনাকে বরণ করেছি, ফুলের মালা দিয়েই আপনাকে বিদায় করতে চাই।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর বিএনপির আহবায়ক তৌহিদুল ইসলাম, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পিপি অ্যাডভোকেট আদম সুফি, যুগ্ন আহবায়ক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, যুগ্ম আহবায়ক এম এ মজিদ, বিএনপি নেতা ইউনুস শেখ প্রমুখ। সমাবেশে জেলা, পাঁচ উপজেলা, তিন পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপিসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Header Ad
Header Ad

জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  

ছবিঃ সংগৃহীত

পরবর্তী জিম্মিদের অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া মুক্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনি জিম্মিদের মুক্তির বিলম্বকে নেতানিয়াহুর সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে অভিযুক্ত করেছে হামাস।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর বিনিময়ে ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও তা অমান্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না। খবর রয়টার্স

এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জিম্মিদের অসম্মান করা হয়েছে। এছাড়া অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করার জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব ফিলিস্তিনি মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’

দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এরপর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

এর আগে বৃহস্পতিবার চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। তবে ওই দিন শিরি বিবাসের মরদেহের পরিবর্তে আরেক জনের দেহ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। অবশ্য পরদিন শিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিনের। এই সময়ে মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরুর কথা রয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন নেতানিয়াহু।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  
এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  
জশ ইংলিসের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া
১৫ বছর দলীয় বিবেচনায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে: উপদেষ্টা ফারুক
দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮ জুয়াড়ি গ্রেফতার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, আবারও মহামারির শঙ্কা
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রায়হান, সম্পাদক বেলায়েত
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: মঈন খান
জামায়াত দাবি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারির সমস্ত কৃতিত্ব তাদের: রনি
যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে আ.লীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
দীঘি নয়, ‘টগর’ সিনেমায় নায়িকা হচ্ছেন পূজা চেরী
নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস (ভিডিও)
নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের
চলন্ত বাসে ডাকাতি-যৌন নিপীড়ন: মির্জাপুর থানার এএসআই বরখাস্ত
ছাত্রদের নতুন দলে যোগ দিচ্ছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা
চলন্ত বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি: পুলিশ সুপার
ময়মনসিংহে দেড় শতাধিক বিড়ালের মিলনমেলা
বিচার ও পুলিশ বিভাগের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল