নিরাপত্তায় গানম্যান পেলেন ব্যারিস্টার সুমন
ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রযন্ত্র তাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না? এমন প্রশ্ন তোলার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তায় গানম্যান পেলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হলরুমে ব্যারিস্টার সুমনের সাথে তার ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি একজন গানম্যানকে দেখা যায়। এবিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘হত্যার হুমকির প্রেক্ষাপটে আমাকে এই গানম্যান দেয়া হয়েছে।’
গত ৩০ জুন নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমাকে হত্যার হুমকির কথা আমি আমার এলাকার ওসির মাধ্যমে আমি জেনেছি। এরপর আমি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় জিডি করেছি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমি একজন মেম্বার অফ পার্লামেন্ট (এমপি) আমাকে কেন জিডি করতে হলো? যেহেতু পুলিশই বিষয়টি আমার আগে জেনেছেন। তাহলে কেন পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবিষয়ে পদক্ষেপ নিলেন না? তদন্ত করলেন না? যেখানে আমার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।’
ওইদিন ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘আমার নিরাপত্তা তো এখন আমার নিজেকেই দিতে হচ্ছে। আমি এটাই বুঝলাম না যে, এই রাষ্ট্রযন্ত্র আদৌও আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না? আমার মনে হচ্ছে পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা লেখার জন্য বসে আছে। সাক্ষী দেয়ার জন্য বসে আছে। তবে বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি ভালভাবে বিষয়টি দেখছেন বলেছেন।’
‘অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল হত্যার জন্য টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে’ জেনে সম্প্রতি শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন ব্যারিস্টার সুমন। ওই সাধারণ ডায়েরীতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেছেন যে, গত ২৭ জুন ঢাকায় অবস্থানকালে রাত আনুমানিক ২টার সময় আমার নির্বাচনী এলাকার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার সরকারী মোবাইল থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান যে, ‘আপনাকে হত্যার জন্য অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল গত তিন দিন আগে ৪-৫ জনের একটি টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে। আপনি রাতে বাইরে বের হবেন না এবং সাবধানে থাকবেন।’ তখন আমি ওসির কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। এই বিষয়টি জানার পরে আমি মারাত্মকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর ছিলেন, এই পদ থেকে তিনি ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে জনপ্রিয়তা পান ব্যারিস্টার সুমন। সেই সাথে দেশের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে আইনী লড়াইয়ে নামেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
একপর্যায়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদকের পদ পান ব্যারিস্টার সুমন। তবে পরবর্তীতে তাকে এই পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন ব্যারিস্টার সুমন।