তিস্তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি চীন: ইয়াও ওয়েন
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: সংগৃহীত
তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চীনের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা সম্মান করব। এ প্রকল্প নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা, এখনো বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কূটনীতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডি ক্যাব আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ইয়াও ওয়েন বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি আছে চীন। যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা সম্মান করব। এখনও আমরা বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এ নদী বাংলাদেশের নদী। অতএব তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেটা সম্পন্ন করয়েছি। যে পক্ষই এ প্রকল্পে কাজ করুক, দ্রুত শেষ হোক; সেটাই আমরা চাই। উত্তরের সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক, সেটা আমরা চাই। প্রয়োজন হলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি আছে চীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর প্রসঙ্গে ইয়াও ওয়েন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কৃষি সহযোগিতা, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, ডিজিটাল ইকোনোমি, শিক্ষা, গণমাধ্যমের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও দুই দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে। আবার রোহিঙ্গা সংকটও আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ উন্মুক্ত করতে চীন কাজ করছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। কিন্তু যত জটিলই হোক, আমরা চেষ্টা করে যাব যুদ্ধবিরতি আনার। যুদ্ধবিরতি না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন। আমরা আরাকান আর্মির সঙ্গেও কথা বলেছি এ বিষয়ে। আরাকান আর্মিসহ সব আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।
তবে সহসাই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব নয়, এমনটা ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তৃতীয়পক্ষীয় আলোচনা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এটিকে আমরা বন্ধ বলতে চাই না। এটাও নিশ্চিত নই যে, কবে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে, গৃহযুদ্ধ থামে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দ্বার উন্মুক্ত হয়।
ইয়াও ওয়েন আরও বলেন, বাংলাদেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে দেখে চীন। এ ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন চলতে থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় হবে ৪ হাজার ডলার। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চীনের দৃষ্টিভঙ্গি একই। ফলে আমাদের সম্পর্কের একটি কমন জায়গা রয়েছে।