হাতির মৃত্যুর রহস্য জানালো পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড
হাতির বিচরণ ক্ষেত্র হতে বৈদ্যুতিক তারের লাইন অনেকটাই দূরে। তাই বৈদ্যুতিক তারে হাতির বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণের ঘটনা খুবই কম অথবা নেই বললেই চলে। শেরপুর ও চট্টগ্রামে হাতির বিচরণক্ষেত্রগুলোতে পরিদর্শন করে দেখা গেছে বন কেটে সাফ করে হাতির বিচরণক্ষেত্র দখল করে সবজি চাষ করছে স্থানীয়রা। হাতিরা যেন সবজির ক্ষেত নষ্ট করতে না পারে সেজন্য তারা ক্ষেতের চারপাশে জিআই তারের বেড়া দিয়ে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তারগুলো এতোটাই সূক্ষ্ম যে কারও পক্ষে এক হাত দূর থেকে দেখাও সম্ভব না। সেই বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়েই মারা যাচ্ছে হাতি।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যুতের তারে জাড়িয়ে কয়েকটি হাতি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে। ঘটনাস্থল পরিদর্শ করে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে প্রায় ৫০০/৬০০ গজ এলাকায় অবৈধভাবে জিআই তারের ফাঁদ স্থাপন করা ছিল। উক্ত ফাঁদে কখনো কখনো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বৈদ্যুতিক জেনারেটর এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে এবং কখনো কখনো বৈদ্যুতিক মিটার হতে পার্শ্ব সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অফিস হতে ফাঁদ স্থাপনকারীর বৈদ্যুতিক পার্শ্ব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এবং তাকে পত্র দিয়ে ভবিষ্যতে যাতে হাতির বৈদ্যুতিক মরণ ফাঁদের আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে এই মর্মে সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং বন বিভাগ-কে অবহিত করা হয়েছে।
এ ছাড়াও, যেসকল স্থানে হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রানী চলাচল করে সেসকল এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইন, অবৈধ সংযোগ এবং ঝুঁকিপূর্ণ লাইন আছে কি-না তা যাচাই করে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ধান ক্ষেত থেকে হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ৯ নভেম্বর শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার বালিঝুড়ি রেঞ্জের মালাকুচা গ্রামে আর একটি হাতি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এসএম/এএস