আছাদুজ্জামান মিয়ার তথ্য ফাঁসের অভিযোগে এডিসি জিসানুল বরখাস্ত
বামে জিএমপি এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জিসানুল হক এবং ডানে ডিএমপি এর সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে আছাদুজ্জামানের ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে অনলাইনে গেল, সেটি নিয়ে তদন্ত করে পুলিশ। এই কর্মকর্তা ছাড়াও পুলিশের আরও দুজন নন ক্যাডার সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৩ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা শাখা থেকে এডিসি জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।
সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জিসানুল হকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ধারা ৩৯ (১) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এ ছাড়াও প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুল অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আছাদুজ্জামান মিয়ার ‘ইএসএএফ’ ছড়িয়ে পরে। ইএসএএফ ফরম হলো- ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রাইবার অ্যাপলিকেশন ফরম, যা মূলত মোবাইল গ্রাহকেরা পূরণ করে থাকেন। এই ফরমে একজন ফোন গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, আঙুলের ছাপসহ বিস্তারিত তথ্য থাকে।
ফরমটি প্রকাশের পর পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়। গাজীপুরের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমদ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। ফরমটিতে থাকা কিউআর কোড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগর পুলিশের বৈধ আড়িপাতা শাখার একজন এএসআই ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার থেকে এটি ডাউনলোড করেছেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পদের এক কর্মকর্তা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আছাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনের তথ্য চেয়ে বৈধ আড়িপাতা শাখার এক এসআইকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেন। সেই বার্তারভিত্তিতে তিনি অন্য একজন এএসআইকে সেটা ডাউনলোড করতে বলেন। পরে সেটা কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়। তদন্তে দেখা যায় অনলাইনে প্রকাশিত ফরমটি হুবহু সেই ফরম।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজীপুর মহানগর পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর রোববার জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি হয়।