রুমায় সেনা নিহতের ঘটনায় আইএসপিআরের বিবৃতি
বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলায় এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আইএসপিআর জানায়, বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় বান্দরবান জেলার রুমা জোনের একটি টহল দলের সঙ্গে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের ঘটনায় সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার নিহত এবং একজন সৈনিক আহত হন।
জেএসএস পন্থী সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজির উদ্দেশে আগমন করবে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি নিরাপত্তা টহল দল ওই এলাকায় গমন করে।
রাত সাড়ে ১০টায় টহল দলটি বথিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত টহল দলের উপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। সদা প্রস্তুত সেনা টহল দলটির দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং সাহসী পাল্টা হামলায় জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হবার আলামত পাওয়া যায়। এ সময় পলায়ন সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন এবং সৈনিক ফিরোজ নামে একজন সেনা সদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। নিহত এবং আহত সেনা সদস্যদের বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রুমা থেকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে হেলিকপ্টারযোগে স্থানান্তর করা হয়।
ওই অভিযানে সেনা টহল দল কর্তৃক সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ১টি এসএমজি, ২৪৯ রাউন্ড তাজা গুলি, ৩টি এম্যোনিশন ম্যাগাজিন, ৩টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজিদের নগদ ৫২,৯০০ টাকা জব্দ করা হয়। বর্তমানে সেনা টহল দল ওই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি জারি রেখেছে এবং স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সেনা সদস্যবৃন্দ নিরীহ পার্বত্য জনগোষ্ঠির নিরাপত্তা রক্ষায় তৎপর রয়েছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান আঞ্চলিক দলসমূহ হত্যা, গুম, চাঁদাবাজি ইত্যাদি দুষ্কৃতিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ে নিরীহ সাধারণ মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও ভূখন্ডের অখন্ডতা রক্ষা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য বদ্ধপরিকর।
এনজে/এসআইএইচ