বিদেশে বসে জঙ্গিবাদ উসকে দেওয়া হয় : দীপু মনি
ছবি: সংগৃহীত
বিদেশে বসে রিমোট কন্ট্রোলে করে বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদকে উসকে দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক দেশ চাইলে রাজনীতিকে বেছে নিতে হবে। দেশে রাজনীতি ঠিক হলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পলিসি এ্যাডভোকেসি রোডম্যাপ’ শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা-জিবিএসএস আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার চেয়ারপার্সন প্রফেসর সাজেদা বানু। আলোচনায় অংশ নেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কেটি ক্রোক, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার তাপস কান্তি পাল, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সানইয়াত জিবিএসএস’র নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রতান প্রমুখ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, যেখানে কেউ পিছিয়ে পড়ে থাকবে না। আইন, নীতিমালা প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়ন সকল পর্যায়ে সকলের অংশগ্রহণ হওয়া জরুরি। দেশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সমান মৌলিক অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারে সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কোন নীতিমালা সংবিধানের উপরে নয়। নীতিমালায় থাকুক না থাকুক সেটা বিষয় নয়। এই রাষ্ট্রে সবাই সমান অধিকার পাবে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে বেড়ানো দলকে দেশ থেকে তাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
ঋষি সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি মন্তব্য করে ডা. দীপু মনি বলেন, অসাম্প্রদায়িকতা, সাম্য ও সমতার ভিত্তিতে এই দেশ সৃষ্টি হয়েছে। সংবিধান আমাদের সমান অধিকার দিলেও স্বাধীনতার পর একটা লম্বা সময় দেশের ক্ষমতায় ছিলো, যারা স্বাধীনতা ও সংবিধানে বিশ্বাস করে না। সেই কারণে আমাদের যতোটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো সেটা হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকার কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার, উন্নত দেশগড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই কাজে বেসরকারি সংগঠনগুলোকেও রাজনৈতিক সচেতনতা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সভায় সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশেষ সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নেওয়া দরকার। ঋষি সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা চাইলে ট্যানারি শিল্প কিংবা জুতা কারখানায় নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুসারে অগ্রাধিকার বা সুযোগ করে দিতে হবে। এছাড়া বিশেষ পেশায় যারা আছেন তাদের উৎপাদিত বিশেষায়িত পণ্য উচ্চমূল্যে দেশে-বিদেশে বিক্রি হতে পারে।
সভায় ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পাঁচ দফা পলিসি এ্যাভোকেসি রোডম্যাপ সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। সুপারিশে ঋষি সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নীতিমালা সংশোধন ও একটি সংসদীয় ককাসের গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া বিগত মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত বৈষম্যবিরোধী আইন দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়।