রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-ঢাকা রুটে দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন উদ্বোধন
ছবি: সংগৃহীত
রাজবাড়ীর সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ করতে উদ্বোধন করা হলো আরও দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন। আজ (শনিবার, ৪ মে) সকাল ১০টায় মাদারীপুরের শিবচরে এক অনুষ্ঠানে ট্রেন দুটি উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম। রাজবাড়ি-ভাঙ্গা-ঢাকা রুটে রোববার (৫ মে) সকাল থেকে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু হবে ট্রেন দুটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রেলের উন্নয়নের জন্য অনেক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। সবচেয়ে সস্তা পরিবহন ব্যবস্থা হলো রেল। এই রেল মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী একটা পরিকল্পনা নিয়েছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাঙ্গা থেকে খুলনা, যশোর, বেনাপোল পর্যন্ত নতুন ট্রেন চালু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে সেটি উদ্বোধন করবেন। ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত আরেকটা লাইন চালু হবে। এই রেললাইন ৮টি জেলাকে যুক্ত করবে। পুরো লাইনই এলিভেটেড হবে। কারণ এই অঞ্চলের মাটি ভালো না। ট্রেন চলাচলের জন্য এই অঞ্চলের মাটি উপযুক্ত না। সেজন্য এটা পুরোটাই হবে এলিভেটেড।
রেলমন্ত্রী বলেন, এই দুটি লাইন চালু হয়ে গেলে ভাঙ্গা, শিবচর এই অঞ্চলের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে। আমরা চিন্তা করছি রেলে বর্তমানে দুইটি জোন আছে। আরো দুইটি জোন তৈরি করা হবে। এর একটি হবে ভাঙ্গা-ফরিদপুর। এটির জোনাল অফিস হবে ভাঙ্গায়। এতে করে ভাঙ্গায় রেলের সেবা বাড়বে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ভবিষ্যতে আমরা ভাঙ্গা-ঢাকা রুটে আরেকটি ট্রেন চালু করব। পরের ট্রেনটি নতুন বগি দিয়ে শুরু করব। আবার আগামী দুই মাসের মধ্যে ভাঙ্গা থেকে খুলনা, যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত আরেকটি ট্রেন চালু হবে। ওই ট্রেন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী, রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলীসহ অন্যান্যরা।
জানা যায়, ভাঙ্গা-ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে এক জোড়া এবং অপারেশনাল সুবিধার্থে একই রেক দ্বারা রাজবাড়ী-ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে এক জোড়া কমিউটার ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ১২১ ও ১২৪ নম্বর ট্রেনটির নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ভাঙ্গা এক্সপ্রেস। আর ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে ১২২ ও ১২৩ নম্বর ট্রেনের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে চন্দনা এক্সপ্রেস।
ট্রেনটিতে ২৪টি প্রথম, ৪৪টি শোভন চেয়ার এবং ৪২৪টি শোভন শ্রেণির আসন ব্যবস্থা থাকবে। উভয় পথে ভাঙ্গা জংশন, শিবচর, পদ্মা ও মাওয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতি থাকবে। সাপ্তাহিক বন্ধ শুক্রবার।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা ননস্টপ চন্দনা কমিউটার সার্ভিস রাজবাড়ী স্টেশন থেকে ছাড়বে ভোর ৫ টায়,ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছাবে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে।এরপর এই ট্রেনটি ভাঙ্গা কমিউটার নামে ভাঙ্গা স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ও ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে সকাল ৯টায়।
ফিরতি যাত্রায় ভাঙ্গা কমিউটার ঢাকার কমলাপুর থেকে ছাড়বে সন্ধ্যা ৬ টায়, ভাঙ্গায় এসে পৌঁছাবে রাত ৮টায়। এরপর এই ট্রেনটি চন্দনা কমিউটার নামে ভাঙ্গা ছাড়বে রাত ৮টা ১০ মিনিটে। আর রাজবাড়ী স্টেশনে এসে পৌঁছাবে রাত ৯টা ৩০ মিনিটে। ট্রেনটিতে ৫২৮টি শোভন শ্রেণির আসন থাকবে। বাণিজ্যিকভাবে ৫ মে থেকে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করবে।