ঢাকা সফরে আসছেন চীনের বড় দুই প্রতিনিধিদল
ফাইল ছবি
টানা চতুর্থ বারের মত আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রথম বিদেশি অতিথি হিসেবে ঢাকা সফর করেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক দপ্তরের ভাইস মিনিস্টার। তার ওই সফরের মাত্র তিন মাসের মাথায় এবার চীন থেকে বাংলাদেশ সফরে আসছেন বড় দুটি প্রতিনিধিদল। এদের মধ্যে একদল আসছেন পানি ইস্যুতে আলোচনা করতে। আরেকদল আসছেন রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, চীনের দুটি প্রতিনিধিদল একই সময়ে বাংলাদেশ সফর করবেন। তাদের মধ্যে চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল ২২-২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করবেন। অপর প্রতিনিধিদলটি ২৩-২৪ এপ্রিল ঢাকা সফর করবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আনহুয়েই প্রদেশের ভাইস চেয়ারম্যান।
চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৯ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন দেশটির পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রধান পরিকল্পনাকারী উ ওয়েনজিং। প্রতিনিধিদলটি সোমবার (২২ এপ্রিল) ঢাকায় আসবেন। প্রতিনিধিদলটির মূল বৈঠক হবে বাংলাদেশের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের সঙ্গে।
বৈঠকে কোন বিষয়গুলো আলোচনায় আসতে পারে জানতে চাইলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, চীনা প্রতিনিধি দলের সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বন্যার পূর্বাভাস নিয়ে আলোচনা হবে। তারা ওয়ার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করবেন। এছাড়া হাইগ্রোলজিক্যাল স্টেশন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ প্রকল্পও পরিদর্শন করবেন তারা।
এছাড়া চীনের প্রতিনিধিদলটি মাঠ পর্যায়ে পদ্মা নদীর ওপরের সীমানা এবং নিম্ন সীমানা পরিদর্শনেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলটির বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশের থেকেও একটি প্রতিনিধিদল চীন সফরে যাবেন। ওই সফরে ইআরডি, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন।
অন্যদিকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আনহুয়েই প্রদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ওয়েই সিয়াওমিংয়ের নেতৃত্বে ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল আগামী ২৩-২৪ এপ্রিল ঢাকা সফর করবেন।
জানা গেছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আনহুয়েই প্রদেশের ভাইস চেয়ারম্যান রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে ঢাকায় আসছেন। তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর বিষয়টি হয়তো তুলে ধরতে পারেন। এখন অবধি চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকুর বৈঠকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
এদিকে, চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে বেইজিং। ওই আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছেন তিনি। আশা করা হচ্ছে, ভারত সফরের পর দ্বিপক্ষীয় সফরে বেইজিং যাবেন তিনি।
ঢাকার দায়িত্বশীল এক কূটনৈতিক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের জন্য প্রস্তাব আছে। চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী চীন সফর করতে পারেন বলে আশা করা যায়। সাধারণত শীর্ষ পর্যায়ে সফর হতে গেলে অনেক আনুষ্ঠানিকতা থাকে, অনেক প্রস্তুতি নিতে হয়। শীর্ষ পর্যায়ে সফরের আগে দ্বিপক্ষীয় সফর বিনিময় হয়, দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যু সমীক্ষা করতে হয়; তারপর কোনো বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। চীনের প্রতিনিধিদলের সফরেও সে ধরনের কিছু কাজ হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত ১১ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। নতুন সরকার গঠনের ১২ দিনের মাথায় ঢাকা সফর করেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক দপ্তরের ভাইস মিনিস্টার সুন হাইয়া।