বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ইতিহাস গড়ে দ্বিতীয় বারের মতো শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল। ফাইনালে রেকর্ড ১৯৫ রান তাড়া করে ৩ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় তামিম ইকবালের দল। এর ফলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল বরিশাল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে টস হেরে ব্যাট করতে নামে চিটাগং কিংস। তাদের শুরুটা ছিল দারুণ। ওপেনিং জুটিতেই ১২.৪ ওভারে ১২১ রান তুলে নেয় তারা। ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করা চিটাগং নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৯৪ রান।
২২ বছর বয়সী পাকিস্তানি ওপেনার খাজা নাফি ৪৪ বলে ৬৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল সাতটি চার ও তিনটি ছক্কা। বিপিএলের শুরুতে ফর্মহীনতায় থাকা পারভেজ ইমন ফাইনালে দুর্দান্ত ব্যাট করেন। ৪৯ বলে হার না মানা ৭৮ রান করেন তিনি, যেখানে ছিল ছয়টি চার ও চারটি ছক্কা। এছাড়া, গ্রাহাম ক্লার্ক ২৩ বলে ৪৪ রান করেন, তিনটি ছক্কা ও দুটি চার মারেন তিনি।
১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বরিশালের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ওপেনিং জুটিতেই তামিম ইকবাল ও হৃদয় মিলে ৮.১ ওভারে ৭৬ রান যোগ করেন। বরিশাল অধিনায়ক তামিম ২৯ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল নয়টি চার ও একটি ছক্কা। টুর্নামেন্টে তামিম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিলেন, তার মোট রান ৪৬৭। তার ওপরে ছিলেন নাঈম শেখ (৫১১) ও তানজিদ তামিম (৪৮৫)। ওপেনিং জুটিতে সঙ্গী হৃদয় ২৮ বলে ৩২ রান করেন।
বরিশালের জয়ের পথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। ২৮ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মায়ার্স, যেখানে ছিল তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা। মাহমুদউল্লাহ ১১ বলে ৭ রান করলেও ম্যাচের শেষ দিকে ৬ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন রিশাদ হোসেন, যেখানে ছিল দুটি বিশাল ছক্কা।
ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে দুই দলের শেষ ৫ ওভারের পারফরম্যান্সে। দুর্দান্ত শুরুর পরও শেষ ৪ ওভারে চিটাগং মাত্র ৩১ রান সংগ্রহ করে, যেখানে তাদের বড় স্কোর করার সুযোগ ছিল। একইভাবে বোলিংয়ের শেষ ৫ ওভারে চিটাগং কিংস রান আটকাতে ব্যর্থ হয় এবং একাধিক ফিল্ডিং মিস করে। ১৬তম ওভারে দুটি সহজ ক্যাচ মিস করে তারা। ১৮তম ওভারে আরও একটি ক্যাচ ছেড়ে ম্যাচ হাতছাড়া করে ফেলে। শেষ ২ ওভারে বরিশালকে ২০ রান করতে হতো, যা সহজেই তুলে নেয় তারা।
এই জয়ের মাধ্যমে বিপিএলে নতুন ইতিহাস লিখল ফরচুন বরিশাল। দ্বিতীয় বারের মতো শিরোপা জিতে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিলো তারা।