বিদেশে সম্পদ থাকার কথা স্বীকার, ১ টাকাও পাচার না করার দাবি সাবেক ভূমিমন্ত্রীর
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি বলেছেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে ব্যবসা করছি। বাবাও ব্যবসায়ী ছিলেন। উত্তরাধিকার সূত্রে ব্যবসাকে মনেপ্রাণে ধারণ করেছি। আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যে ব্যবসা করছি। আমার ব্যবসার মূলধন হচ্ছে লোন। ওই দেশগুলো থেকে লোন নিয়েছি। এই দেশ থেকে এক টাকাও পাচার করিনি। রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের চেয়ে ব্যবসায়িক ক্যারিয়ার আমার বেশি।’
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
এই সংসদ সদস্য বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে বিদেশে ব্যবসা করি আর রাজনীতিতে এসেছি ২০১৩ সালে। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে সম্পদ বেড়েছে। টিআইবি বা লন্ডনের যেকোনো সংস্থা তদন্ত করতে চাইলে সহায়তা করব। আগে থেকেই এসেট ছিল, বাবার সম্পদ পেয়েছি। এ সময় তিনি দাবি করেন, ‘হলফনামায় কোথাও বিদেশি সম্পদের বিষয়ে বলা নেই।
হলফনামায় যদি বিদেশের সম্পত্তির হিসাব না চায়, আমি আগ বাড়িয়ে কেন বলতে যাব?’ সাইফুজ্জামান আরও বলেন, ‘মন্ত্রী থাকা অবস্থায় কেউ যদি এক টাকার দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দেব। মন্ত্রী হিসেবে সরকারি গাড়ি-বাড়ি ব্যবহার করিনি। সেগুলো সব দান করে দিয়েছি। যেহেতু আমার লোন আছে, চাইলেই আমরা বিদেশ থেকে সব করতে পারি না। কিছু না করেও দুর্নামের ভাগীদার হয়েছি। ব্লুমবার্গ (মার্কিন সংবাদমাধ্যম) বাধ্য হয়েছে আমাদের সব ব্যবসার বিস্তারিত তুলে ধরতে। ৫০ বছরের ওপরে আমরা বড় ব্যবসায়ী, এটা বারবার প্রমাণিত। যে লোন আছে বিদেশের ব্যাংকে, সেটা কেউ দেখল না। ইউকে-আমেরিকার বাইরেও অনেক দেশে আমাদের ব্যবসা আছে।’
যুক্তরাজ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টির বেশি সম্পত্তি নিয়ে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বিশেষ এক প্রতিবেদনে এই রাজনীতিবিদের বিশাল সাম্রাজ্যের ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়েছে। ব্লুমবার্গের ওই প্রতিবেদনের বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ব্রিফিংয়েও উঠে আসে।
সেখানে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদের সম্পর্কে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, আমেরিকা সে বিষয়ে অবগত। গত ২০ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এ নিয়ে এবার সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান বলেন, ‘দেশ-বিদেশে আমাকে নিয়ে খবর হয়েছে, অনেকে জানতে চেয়েছিলেন কেন এতদিন নীরব ছিলাম। দেশের বাইরে থাকায় একটু দেরিতে সংবাদ সম্মেলন করা হচ্ছে।
সাইফুজ্জামান বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ে অনেক কাজ করেছি। বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব, গেল সংসদের সেরা মন্ত্রণালয় ছিল ভূমি মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘের পুরস্কার পেয়েছে মন্ত্রণালয়। এখানে অনেকে বলেন দুর্নীতির কথা। খারাপ উদ্দেশ্য থাকলে এত কাজ করতাম না।’
টিআইবি সংসদ নির্বাচনের সাত দিন আগে রিপোর্ট দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে উল্লেখ করে সাইফুজ্জামান বলেন, ‘অনেকে বলেছে মন্ত্রী থাকা অবস্থায় আমি সুবিধা নিয়েছি। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হলে আমি খুশি হব। আমি কি করেছি না করেছি সেটি বেরিয়ে আসবে।’