সরকারি দুটি বাসা দখলে রাখেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী!
সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
কালিগঞ্জ এবং আদিতমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত লালমনিরহাট-২ সংসদীয় আসন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে জয় নিয়ে টানা তৃতীয় বারের মতো এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সদ্য সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। সমাজকল্যাণমন্ত্রী হওয়ার পর রাজধানীর বেইলি রোডে মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে পাঁচ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন নুরুজ্জামান আহমেদ।
এর বাইরেও তিনি সমান আয়তনের আরেকটি সরকারি বাসা নিজের দখলে রাখেন। গত পাঁচ বছর বাসা দুটির একটিতে তিনি নিজে, অন্যটিতে তার আত্মীয়স্বজন বসবাস করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গত ১১ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। এরপর নতুন মন্ত্রীদের বাসা বরাদ্দ দিতে গিয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় মন্ত্রীদের বাড়ির হালনাগাদ তালিকা করে। এ সময় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে দুটি সরকারি বাসা থাকার বিষয়টি সবার নজরে আসে।
আইনে বলা আছে, একজন মন্ত্রী সরকারি ব্যয়ে বিনা ভাড়ায় একটি সুসজ্জিত বাসভবন পাবেন। কিন্তু নুরুজ্জামান আহমেদ নিয়ম লঙ্ঘন করে দুটি বাসা দখলে রাখেন বলে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের সূত্র থেকে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় সেখানে একই চত্বরে তিনটি ভবন রয়েছে। প্রতিটি ভবন ছয়তলা করে। এর মধ্যে ১ নম্বর ভবনের ছয়তলার পশ্চিম পাশের বাসায় থাকেন নুরুজ্জামান আহমেদ। ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি এই বাসায় ওঠেন। এখনো তিনি আছেন। এবার মন্ত্রী না হলেও নিয়মানুযায়ী এক মাস থাকতে পারেন।
৩ নম্বর ভবনে গিয়ে জানা যায়, ওই ভবনের পঞ্চম তলার পূর্ব পাশের ৫ হাজার বর্গফুটের বাসাটিও নুরুজ্জামানের নামে রয়েছে। সেখানে তিনি থাকতেন না। তাঁর আত্মীয়স্বজন সেখানে বসবাস করতেন বলে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টের পাশে থাকেন, এমন আরেকজন মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, নুরুজ্জামান আহমেদ দুটি বাসা ব্যবহার করেন। এ বিষয়টি অন্য বাসিন্দারাও জানেন।
এ বিষয়ে নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, আমি এখনও ফ্ল্যাটটি ছেড়ে দিইনি। সচিব বিষয়টি জানিয়েছেন; খুব দ্রুতই ছেড়ে দিব।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন জানান, মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে উনি (নুরুজ্জামান আহমেদ) দুটি বাসা নিয়েছেন। একটাতে তিনি থাকতেন, আরেকটিতে ওনার কেউ থাকতেন। বিষয়টি আমি গত সপ্তাহে জানতে পেরেছি। বিষয়টি জানার পর অপর বাসাটির চাবি সাবেক মন্ত্রীর কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাসাটি এখন খালি। এ ছাড়া নুরুজ্জামান আহমেদ যেটিতে থাকতেন, সেটিতে এখনো আছেন তিনি।