নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে: বিদেশি পর্যবেক্ষকরা
সংবাদ সম্মেলন করছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, রাশিয়া, ফিলিস্তিন, নাইজেরিয়া, গাম্বিয়া, ওআইসি ও সাউথ এশিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোরামের পর্যবেক্ষকরা।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) ভোটগ্রহণ পরিদর্শন শেষে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে বিকেলে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পৃথক সংবাদ সম্মেলনে সরেজমিনে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচন দেখার পর তারা এমন প্রতিক্রিয়া জানান। নিজ নিজ দেশে ফিরে গিয়ে তারা এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রতিবেদন দেবেন বলেও জানান।
সাবেক মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম বেটস কম ভোটার প্রসঙ্গে বলেন, ভোটারের সংখ্যা বা উপস্থিতি দিয়ে আসলে মূল্যায়ন পূর্ণ হয় না। বাংলাদেশে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে। তার দেশে সন্ধ্যা পর্যন্ত এমনকি একমাস আগেও ভোটগ্রহণ হয়। এখানে সংক্ষিপ্ত সময়ে ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল এটাই বলব।
রাশিয়ার নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের প্রধান আন্দ্রেই শুতভ বলেন, এবার খুব দারুণ নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে। নির্বাচন স্বচ্ছ, উন্মুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে হয়েছে। ভোটের পরিবেশে নিরাপত্তা ছিল, এটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। কোনো বিষয়ে কোনো তথ্যের অভাব ছিল না। গণমাধ্যমকর্মীরা স্বাধীনভাবে সংবাদ সংগ্রহ করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের দীর্ঘ ইতিহাসের কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া স্থিতিশীলভাবে অগ্রসর হচ্ছে। বহু মেরুকরণের দিকে অগ্রসরমান বিশ্বে বাংলাদেশ জাতীয় স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এ দেশের ওপর যে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি নেই।
কানাডীয় স্বাধীন পর্যবেক্ষক দলের সদস্য চন্দ্র আর্য এমপি এবং সিনেটর ভিক্টর ওহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঢাকায় আসার আগে থেকেই তারা এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন। কিছু রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জন, নির্বাচনী প্রচার ও নির্বাচনের সময় সংঘটিত সহিংসতাসহ বিভিন্ন বিষয় লক্ষ্য করেছেন। এবার রেকর্ড সংখ্যাক নারী প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও একজন হিজড়া প্রার্থী নির্বাচনে ছিল। তারা সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। দিনশেষে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ায় তারা নির্বাচন কমিশন ও এ দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানান। এ ছাড়া ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন তারা।
ওআইসির নির্বাচন ইউনিটের প্রধান শাকির মাহমুদ বান্ডার বলেন, তিনি রাজধানীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন। ভোটার, প্রার্থী, এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কোথাও সহিংসতা দেখেননি। পুরো শহর বেশ শান্ত ছিল। নির্বাচনী পরিবেশ দেখে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ভালো নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেখেছি।
বাংলাদেশিদের নির্বাচনী পদ্ধতির জন্য গর্বিত হওয়া উচিত মন্তব্য করে ফিলিস্তিনের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা হিশাম কুহাইলি বলেন, ভোট দেওয়ার পদ্ধতি খুবই সহজ ও সরল ছিল। নির্বাচন পরিচালনাকারীরাও ভালোভাবে প্রশিক্ষিত ছিল। আন্তর্জাতিক মানের দিক থেকে এটা খুবই ভালো।
স্কটিশ এমপি মার্টিন ডে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হলেও ভোটারদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
আরব পার্লামেন্টের সদস্য আবদিহাকিম মোয়াল্লিম বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের প্রশংসা করে বলেন, নির্বাচন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পরিচালিত হয়েছে। এটি শান্তি ও ঐক্যের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আরেক পর্যবেক্ষক ও আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিসের প্রধান নির্বাহী আলেক্সান্ডার গ্রে বলেন, আমি নিজের চোখে যা দেখেছি, সেটি হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্বাচন দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে। ভোটাররা উৎসাহের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গেছেন। আমরা সন্তুষ্ট যে নির্বাচন অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সঙ্গে পরিচালনা করা হয়েছে।