দুদকের প্রতিবেদন
অর্থপাচারের তালিকায় মিন্টু, মুসাসহ ২৯ জনের নাম
ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার স্ত্রী-সন্তান এবং আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরসহ অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ১৪টি প্রতিষ্ঠান ও ২৯ ব্যক্তির তালিকা হাইকোর্টে জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার (৫ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে তালিকা দাখিল করা হয়েছে। তবে এসব ব্যক্তিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হবে কি না, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
তালিকায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান-
১. আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মাল্টিমোড লিমিটেড, অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।
২. মিজ নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, মাল্টিমোড লিমিটেড, অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।
৩. তাবিথ আউয়াল, মাল্টিমোড লিমিটেড, অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।
৪. তাফসির আউয়াল, মাল্টিমোড লিমিটেড, অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।
৫. তাজওয়ার মো. আউয়াল, মাল্টিমোড লিমিটেড, অ্যাংকর টাওয়ার, ১০৮ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা।
৬. মোগল ফরিদা ওয়াই, ৮০-৭২, তাইরন পিআই, জ্যামাইকা, নিউইয়র্ক, ইউএসএ।
৭. শহিদ উল্লাহ, ২৩৫, স্যাডল রজি পেলস, দ্য উড ল্যান্ডস, টেক্সাস, ইউএসএ।
৮. চৌধুরী ফয়সাল, বাড়ি # ২৩, রোড# ২৩, ব্লক-বি, বনানী, ঢাকা।
৯.আহমাদ সামির, অ্যাপার্টমেন্ট # ৪বি, ১৫ ইউনাইটেড নেশানস রোড, বারিধারা, ঢাকা।
১০. ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড, ৫০ মহাখালী বা/এ, ঢাকা।
১১. মুসা বিন শমসের, ভেনাস ওভারসিজ কোম্পানি, হোল্ডিং ব্লক-আই, বনানী, ঢাকা।
১২. ফজলে এলাহী, ডাইনামিক এনার্জি, হোল্ডিং বাড়ি # ৪২৪, রোড # ০৭, বারিধারা ডিওএইচএস, ঢাকা।
১৩. কেএইচ আসাদুল ইসলাম, ইন্ট্রিপিড গ্রুপ, ধানমন্ডি, ঢাকা।
১৪. জুলফিকার আহমেদ, খালেদা শিপিং কোম্পানি, বাড়ি # ১৩২, রোড # ০৫, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা।
১৫. তাজুল ইসলাম তাজুল, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।
১৬. মোহাম্মদ মালেক, বেঙ্গল শিপিং লাইনস, ১০১ আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।
১৭. মোহাম্মদ এ আউয়াল, শামস শিপিং লিমিটেড, ৭৭, মাওলানা শওকত আলী রোড, লালখান, চট্টগ্রাম।
১৮. ইমরান রহমান, ওসান আইস শিপিং কোম্পানি, ইপিজেড ঢাকা ।
১৯. এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ডব্লিউএমজি লিমিটেড, বাড়ি # ১৪, রোড # ১৩, সেক্টর # ৪, উত্তরা, ঢাকা।
২০. ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপ, বাড়ি # ৫, রোড # ৫১, গুলশান, ঢাকা।
২১. তাজুল ইসলাম, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বালুর মাঠ, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।
২২. আমানুল্লাহ চাগলা, পদ্মা টেক্সটাইল, বাড়ি # ৪৫৮, লেন-৮, ডিওএইচএস, বারিধারা ঢাকা।
২৩.মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্ট, মস্কো, রাশিয়া।
২৪. মোহাম্মদ রেজাউল হক, মাল্টা।
২৫. মোহাম্মদ কামাল ভুইয়া, তুহিন-সুমন, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বালুর মাঠ, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।
২৬. মাহতাবা রহমান, সেলকন শিপিং কোম্পানি, বাড়ি # ৮৭এ, রোড # ০৬, ডিওএইচএস, বনানী, ঢাকা।
২৭. ফারুক পালওয়ান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, নারায়ণগঞ্জ।
২৮. মাহমুদ হোসাইন, গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেম, আয়ারল্যান্ড।
২৯. শাহনাজ হুদা রাজ্জাক, সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানি, ঢাকা ইপিজেড।
অভিযোগ আছে, আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ভয়েস এবং ওভার ভয়েস, হুন্ডিসহ নানান পদ্ধতিতে প্রতি বছর দেশ থেকে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়।
এ নিয়ে গত ২৭ নভেম্বর সংসদে প্রশ্নের মুখে পড়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল অর্থপাচারকারীদের তালিকা চান বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের কাছে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থ পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি, আপনারাও করেন না। আপনারা যদি একটি তালিকা না দেন তাহলে আমি কী করে জানব কারা অর্থ পাচার করছেন!’
অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের এক সপ্তাহ না পেরুতেই দুদকের তালিকা প্রস্তুতের খবর সংবাদমাধ্যমে আসলো।
এর আগে গত ৭ জুনও একইরকম কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। কারা অর্থপাচার করছে তাদের তথ্য সরকারের কাছে নেই জানিয়ে তিনি এ সংক্রান্ত তথ্য কারও কাছে থাকলে তা দিতে অনুরোধ জানান।
সংসদে বিরোধী সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কারা দেশের টাকা নিয়ে যায়, সেই তালিকা আমার কাছে নেই।পাচারকারীদের নামগুলো আমাদের দেন। তাদের ধরা আমাদের জন্য সহজ হবে।'
অর্থ পাচার ঠেকাতে সরকার সক্রিয় রয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখনও পাচারকারীদের অনেকেই জেলে আছে। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।
তবে ২০২০ সালের নভেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের যে গুঞ্জন আছে, তার কিছুটা সত্যতা তিনি পেয়েছেন। আর টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া ২৮টি ঘটনার মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি।
এনএইচ/টিটি/