শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের দরবার হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে শপথবাক্য পাঠ করান।
এর আগে শপথ নিতে সকাল ১১টার আগে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন নতুন প্রধান বিচারপতি।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, বিমান ও নৌ-বাহিনীর প্রধান ও বেশ কয়েকজন বিচারপতি।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ১১টার পর বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন।
এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা মরহুম ডা. আলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসেবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় সক্রিয় অংশ নেন এবং সংবিধান রচনার পর তাতে স্বাক্ষর করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৮৬ সালে জেলা আদালত, ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০০৯ সালের ৩০ জুন তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০১১ সালের ৬ জুন স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৯১ সালে বিচারপতি হাসান নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ল’ইয়ারস কনফারেন্সে’ অংশ নেন। তিনি অনেক সাংবিধানিক মোকদ্দমা পরিচালনা করেন।
বিচারপতি হিসেবে যোগদানের আগে তিনি দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং সাংবিধানিক বিষয়াদি সম্পর্কিত মোকদ্দমার একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধানমন্ডি ল’ কলেজের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০১২ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন এবং পরে একই সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।