ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে তিনি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যুগে প্রবেশ করল রাজধানীবাসী। আশা করা হচ্ছে, যানজটে গতিহীন রাজধানী ঢাকার রাস্তা গতিময় করতে বেশ কার্যকরী হবে এই মেগা প্রকল্প।
পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আরেকটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন হলো। উদ্বোধন ফলক উন্মোচন শেষে সেতু সচিব মনজুর হোসেন প্রধানমন্ত্রীকে প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে সুধী সমাবেশের দিকে রওনা হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলন, ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা বা বিদেশিদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নৌকা মার্কা স্মার্ট বাংলাদেশ দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা মার্কা অর্থনৈতিক উন্নতি দিয়েছে। নৌকা মার্কা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে। নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলেই এগিয়ে গেছে, এগিয়ে যাবে। ঝড় ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়েই নৌকা তীরে থেকে জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকাএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জনগণ প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন, স্মার্ট জনশক্তি আমরা তৈরি করব। আমাদের সরকার স্মার্ট সরকার হবে। আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে। আমাদের সমাজ স্মার্ট সমাজ হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন হওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গণতন্ত্র আর মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে আমরা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পেরেছি, তার কারণে আজ বাংলাদেশের এত উন্নয়ন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে নাকি গণতন্ত্র চোখে দেখে না, আবার গণতন্ত্র উদ্ধার করবেন, যাদের জন্ম হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, উচ্চ আদালত যাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ ঘোষণা করেছে, তাদের হাতে জনগণ কি গণতন্ত্র দেবে? তারপরও তারা আন্দোলনের নামে অনেক সময় অনেক কথা বলে।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে অনেকে ঘাবড়ে যান। তারপর আবার স্যাংশন, ভিসানীতি… আসে, আমার স্পষ্ট কথা– এই মাটি আমাদের, জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, এসব ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বাংলাদেশের মানুষ অধিকার আদায় করতে জানে। বাংলাদেশ তো ছয় ঋতুর দেশ, ছয় ঋতুর দেশে আমরা কখনো বর্ষা, কখনো ঝড়, কখনো জলোচ্ছ্বাস দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে।
তিনি বলেন, আজ যারা আন্দোলনের নামে রোজই আমাদের ক্ষমতা থেকে ফেলে দিচ্ছেন, আমি আপনাদের বলতে চাই, আমি কবির ভাষা বলব– মেঘ দেখে করিস না ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ তার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।
২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরের এক যুগ পরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আলোর মুখ দেখছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ। কাওলা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত উদ্বোধন হতে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এই পর্যায়ে ফার্মগেট পর্যন্ত যান চলাচল করতে পারবে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতারসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরাও উপস্থিত ছিলেন। আজ উদ্বোধন হলেও আগামীকাল রোববার (২ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে যান চলাচল শুরু হবে।