বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেই চলছে, ৪ দিনে নিহত ২৯!
চলতি সপ্তাহের গত চারদিনে চারটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সব দুর্ঘটনায় ২৯ জন মানুষ মারা গেছেন। রবিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে একটি ভবনে বিস্ফোরণে তিনজন মারা যাওয়ার ক্ষত এখনো শুকায়নি মানুষের মন থেকে। এর দুদিন পরই বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল গুলিস্তান।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকালে গুলিস্তানে সাত তলা একটি ভবনে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের গত চারদিনে চারটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। গত শনিবার (৪ মার্চ) বিকালে সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন-গ্যাস উৎপাদন কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত হন ৭ জন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ওইদিন ভোরে রাজধানীর গুলশানে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হন ২ জন। তাদের মধ্যে গোপাল মল্লিক নামে একজনের মৃত্যু হয়।
এর আগেও দেশে অনেক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। গেল বছরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু হয়। ওই বিস্ফোরণে আশপাশের অনেক ভবন কেঁপে উঠে। গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে ওই বিস্ফোরণ হয় বলে তদন্তসংশ্লিষ্টদের ভাষ্য। এর আগে গ্যাসলাইন লিক থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে নারায়ণগঞ্জে।
২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে ইমামসহ ৩১ জন প্রাণ হারান। গত ২ ফেব্রুয়ারি ভাটারায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়। গত ডিসেম্বরে মিরপুরে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে আরিয়ান নামে ১৪ বছরের এক কিশোর মারা যায়। ১২ জানুয়ারি সাভারে সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দগ্ধ হয়ে সাদিয়া নামে সাত বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়।
গেল ১৫ অক্টোবর রাজধানীর শ্যামপুরের জুরাইন কবরস্থান রোডে তিতাস গ্যাসের লাইনে কাজ করার সময় বিস্ফোরণে পাঁচ শ্রমিক দগ্ধ হন। প্রায় প্রতিদিন বাড়ছে এসব বিস্ফোরণে ঘটনা।
এসব বিষয় নিয়ে নগরপরিকল্পনা ও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ঢাকা অগুন বিস্ফোরণের শহরের পরিণত হচ্ছে। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকারের প্রতিটা সেক্টর যদি এসব বিষয়ে সর্তক না হয় তাহলে ঢাকায় ভূমিকম্প হলে ঢাকার তলদেশ দেশ থেকে বিস্ফোরণের বোমা ফাটতে পারে।
তিনি বলেন, তা ছাড়া ঢাকা শহর এখন খুব বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। সব চেয়ে বিপদে আছে পুরাতন ঢাকা। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এসব বিষয়ে আগামভাবে অতিরিক্ত সর্তক হওয়া। তারা জানেও না কোথায় কোথায় গ্যাস লাইন রয়েছে! তাদের জন্য মানুষ বিপদে পড়তে পারে। তবে বলা যায় এই আগুন ও বিস্ফোরণ নিয়ে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশের মানুষ।
কেএম/আরএ/