পিলখানা ট্র্যাজেডি: শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন
পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৪ বছর পূর্ণ হলো। সেদিনের সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শহীদ ৫৭ জন সেনার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে শহীদ সেনাদের কবরে ফুল দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন করা হয়।
শুরুতেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের সামরিক সচিবরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এর পর তিন বাহিনীর প্রধানরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রধানের পর নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান। আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এ সময় স্বজনরা নারকীয় সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যকরের দাবি করেন। স্বজনরা আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পরও সে ঘটনায় করা দুটি মামলা এখনো ঝুলে আছে। পরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয় নিহত শহীদদের প্রতি।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, এটা ষড়যন্ত্র, সরকারকে উৎখাত ও সরকারের ওপর আঘাত। এ ঘটনার দিন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল। আমরা আশা করি এ বছরের মধ্যেই এ হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় পাওয়া যাবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহের নামে হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলায় ৮৪৬ জনকে আসামি করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। আর ২০১৭ সালে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন।
বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৩৯ জনকে ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলেও ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি তোলার খরচ, অনুলিপি পাওয়ার প্রক্রিয়া, আপিলের পেপারবুক তৈরি, আদালতে সেই পেপারবুক রাখার স্থান, চূড়ান্ত বিচারের সময়সহ বিচারিক প্রক্রিয়ার নানা কারণে আপিল শুনানি শুরু হতে দেরি হচ্ছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
ওই ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টে হত্যা মামলার রায় হলেও ১৪ বছরেও শেষ হয়নি বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলার বিচার।
বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১ হাজার ৩৪৫ জন সাক্ষীর মধ্যে এই ১৩ বছরে নেওয়া হয়েছে মাত্র ২১০ জনের সাক্ষ্য। হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া এবং সাজা খাটা শেষ হওয়া ৪৬৮ আসামির মুক্তিও আটকে আছে এই বিস্ফোরক মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে।
বকশীবাজারে আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার বিচারকাজ চলছে।
আরএ/