শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩১
Dhaka Prokash

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর আজ, চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষা

আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি। ২০০৯ সালের এই দিনে বিডিআর বিদ্রোহের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। দেশের ইতিহাসে এ এক নির্মম ট্র্যাজেডি। তৎকালীন কতিপয় বিপথগামী বিডিআর সদস্য এ নির্মম ঘটনা ঘটায়। ওই ঘটনার পর পরিবর্তন করা হয় এই বাহিনীর নাম। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)’র নাম বিলুপ্ত করে নামকরণ হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরিবর্তন করা হয় পোশাক ও লোগো। রক্তাক্ত বিদ্রোহের এই হত্যার ঘটনায় করা মামলা ১৪ বছর পরও চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায়। দেশের ইতিহাসে ওই নৃশংসতম ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা অন্য মামলার বিচার এখনও আদালতে রয়েছে। তবে চলতি বছরেই এই আলোচিত হত্যা মামলার আপিল শুনানি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপিল বিভাগ যেদিন শুনানি শুরু করবে সেদিনই চূড়ান্ত শুনানি শুরু হবে। আমরা আদালতকে শুনানির আর্জি জানাতে পারবো। চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই শুনানি হতে পারে।

নৃশংস এ হত্যাযজ্ঞে তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ জন বিডিআর সদস্য ও ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। জিম্মি করে রাখা হয় অনেককে।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদস্যরা পিলখানায় কিছু দাবির ধুয়া তুলে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। সেদিন সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে বিজিবির বার্ষিক দরবার চলাকালে দরবার হলে ঢুকে পড়ে একদল বিদ্রোহী সৈনিক। এদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। এরপরই ঘটে যায় ইতিহাসের সেই নৃশংস ঘটনা।

বিদ্রোহী সৈনিকরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে রাজধানীবাসী। জিম্মি অবস্থায় ফোনে অনেকেই বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন, সাহায্য চেয়েছেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি তাদের। রক্তে ভেসে যায় পিলখানা। তারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে জিম্মি করে রাখে। পুরো পিলখানায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চারটি প্রবেশপথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় গুলি ছুড়তে থাকে তারা।

বিদ্রোহীরা দরবার হল ও এর আশেপাশের এলাকায় সেনা কর্মকর্তাদের গুলি করতে থাকে। তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। পরে পিলখানা থেকে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ।

পিলখানা হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে হাই কোর্ট জানায়, ওই ঘটনা ছিল রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক-সামাজিক নিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র। শুধু তাই নয়, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি দক্ষ, প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ধ্বংসেরও চেষ্টা।

আদালতের সেই রায়ে বলা হয়, বিডিআরের জওয়ানরা দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়াসহ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের উপর প্রত্যক্ষ হুমকির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে যে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে, সেই কলঙ্কের চিহ্ন তাদের বহুকাল বহন করতে হবে।

২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার পরপরই পিলখানা বিডিআর সদরদপ্তরে গুলির শব্দ পাওয়া যেতে থাকে। বিডিআর সপ্তাহ চলার কারণে প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, কোনো কর্মসূচি চলছে। কিন্তু কিছু সময় পর জানা যায়, বিদ্রোহ হয়েছে পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিডিআর জওয়ানরা।

বিদ্রোহের পর সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এরই মধ্যে পিলখানার চারদিকে সেনাবাহিনী ভারী অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। এদিকে পিলখানার পর দেশের বিভিন্ন জেলায় বিডিআর দপ্তরে বিদ্রোহের খবর আসতে থাকে।

এক পর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে শুরু হয় আলোচনা। তৎকালীন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মীর্জা আজম ও সাংসদ ফজলে নূর তাপস এ আলোচনার নেতৃত্ব দেন।

এদিনে বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বিদ্রোহীদের আলোচনা হয়। পরে পিলখানার প্রধান ফটকের পাশের একটি রেস্তোরাঁয় আলোচনায় অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন।

গভীর রাতে তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন পিলখানায় গেলে বিদ্রোহীরা তার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেরিয়ে আসার সময় বিদ্রোহীদের হাতে জিম্মি কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। তারা মুক্ত হন। কিন্তু এরপরও পিলখানা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকাল থেকে পিলখানা শূন্য হয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নেয়। অবসান ঘটে প্রায় ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের।

বিদ্রোহের প্রথম দিন দুপুরে কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধের কাছে ম্যানহোলের মুখে দুই বিডিআর কর্মকর্তার লাশ পাওয়া গেলে হৈ চৈ পড়ে যায়। বোঝা যায়, ভেতরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বিদ্রোহ অবসানের পরদিন পিলখানায় পাওয়া যায় একাধিক গণকবর। সেখানে পাওয়া যায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রীসহ সেনা কর্মকর্তাদের লাশ।

পিলখানাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিডিআর আইনে ৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার শেষ হয় ২০১২ সালে। গত বছর হাই কোর্টে হত্যা মামলার আপিলের রায় আসে। তবে বিস্ফোরক আইনে করা মামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি। তবে আদালত সূত্রে জানা গেছে এই বছরে হতে পারে এই মামলার শুনানি।

বিডিআর বিদ্রোহের ৫৭টি মামলায় ছয় হাজারেরও বেশি আসামির মধ্যে ৫ হাজার ৯২৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় সর্বোচ্চ সাত বছরের সাজা হয়েছে ৮৭০ জনের। আর বেকসুর খালাস পেয়েছেন ১১৫ জন বিডিআর সদস্য, যারা পরে চাকরি ফেরত পেয়েছেন।

ঢাকার জজ আদালত ২০১৩ সালে পিলখানার হত্যা মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়।

ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর হাই কোর্ট ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে। এছাড়া ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২২৮ জনকে তিন থেকে দশ বছরের সাজা দেওয়া হয়।

নিয়মিত আদালতে একসঙ্গে এত আসামির ফাঁসির আদেশ যে কোনো মামলার ক্ষেত্রেই নজিরবিহীন। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলেও ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি তোলার খরচ, অনুলিপি পাওয়ার প্রক্রিয়া, আপিলের পেপারবুক তৈরি, আদালতে সেই পেপারবুক রাখার স্থান, চূড়ান্ত বিচারের সময়সহ বিচারিক প্রক্রিয়ার নানা কারণে আপিল শুনানি শুরু হতে দেরি হচ্ছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

ওই ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টে হত্যা মামলার রায় হলেও ১৪ বছরেও শেষ হয়নি বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলার বিচার।

বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১ হাজার ৩৪৫ জন সাক্ষীর মধ্যে এই ১৩ বছরে নেওয়া হয়েছে মাত্র ২১০ জনের সাক্ষ্য। হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া এবং সাজা খাটা শেষ হওয়া ৪৬৮ আসামির মুক্তিও আটকে আছে এই বিস্ফোরক মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে।

বকশীবাজারে আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ ট্রাইব্যুনালের অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার বিচারকাজ চলছে।

উল্লেখ্য, এ দিনটি স্মরণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনা সদর নানা কর্মসূচি পালন করেন। পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরসহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে কোরআন খতম, বিজিবির সকল মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হবে। বিজিবির সকল স্থাপনায় এদিন বাহিনীর পতাকা অর্ধনমিত থাকবে, সদস্যরা কালো ব্যাজ পরবেন। বিজিবির সকল সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে হয় বিশেষ দরবার।

কেএম/এএস

Header Ad

ভারী বৃষ্টিতে ধসে পড়ল দিল্লি বিমানবন্দরের ছাদ, নিহত ১

ছবি: সংগৃহীত

টানা ৪০ দিন তীব্র তাপপ্রবাহ শেষে এখন ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ভারতের রাজধানী দিল্লির জনজীবন। টানা ৫ ঘন্টার ভারী বৃষ্টির কারণে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালের একাংশের ছাদ আংশিকভাবে ধসে পড়ে অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার জেরে বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোরে এ ঘটনা ঘটে। বিমান পরিবহন মন্ত্রী কে রাম মোহন নাইডু মৃত্যুর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। দিল্লি ফায়ার সার্ভিসের ডিরেক্টর অতুল গর্গ জানিয়েছেন, টার্মিনালের অভ্যন্তরীণ এলাকায় ছাদ ধসে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।

ওই দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনাল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যাহত হয় বিমান পরিসেবা। এ ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

তৃণমূল সংসদ সদস্য সাকেত গোখলে এ বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি দায়ী করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। সামাজিক মাধ্যমে কিছু ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী তড়িঘড়ি এই নির্মীয়মাণ টার্মিনালের উদ্বোধন করেছিলেন। একজন মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রীই দায়ী।

উল্লেখ্য, ভারতের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, বিমানবন্দর এলাকায় স্থানীয় সময় ভোরে তিন ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা পুরো জুনের গড় থেকে বেশি। বিশেষজ্ঞরা প্রচণ্ড গরমের পর প্রবল বৃষ্টিপাতের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।

৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল পেরু, সুনামি সতর্কতা জারি

ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২। শুক্রবার (২৮ জুন) দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকায় এই কম্পন হয়। ভূ-কম্পনের জেরে দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।

ইউএসজিএসের বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানায়, শুক্রবার পেরুর মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলের ৭ দশমিক ২ মাত্রায় ভয়াবহ কম্পন হয়। ভূমিকম্পের জেরে উপকূলরেখা বরাবর কিছু এলাকায় দেশটিতে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

দেশটির আটিকুইপা জেলা থেকে ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, শক্তিশালী কম্পনটি কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি এলাকায়ও অনুভূত হবে।

এর আগে প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, কম্পনের জেরে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই। তবে পরে কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, ‘উপকূলের কিছু এলাকায় বিপজ্জনক সুনামির ঢেউয়ের পূর্বাভাস রয়েছে। সুনামির ঢেউগুলো জোয়ারের স্তরের ওপরে আরও ১ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।’

বেশ কয়েক জায়গায় ভয়াবহ কম্পন অনুভূত হলেও এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর জানা যায়নি।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু ভূতাত্ত্বিকভাবে ভূমিকম্প সক্রিয় অঞ্চল ‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ারে’ অবস্থিত বলে এখানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়ে থাকে।

আবারও গ্রেপ্তার ‘লেডি কিলার’ পুলিশপুত্র অর্ণব

ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তার পুত্র লেডি কিলার রাহমাতুর রাফসান অর্ণবকে আবারো গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনাজপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ অর্ণবকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠিয়েছে।

শুক্রবার দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফরিদ হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একটি প্রেন্ডিং মামলায় ওই যুবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

রাহমাতুর রাফসান অর্ণব (২৫) সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার কর্ণমুর্তি গ্রামের পুলিশ পরিদর্শক মো.জাহিদুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তিনি পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটে কর্মরত। জাহিদুল দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীন তৎকালীন এক বিএনপি নেতার বোনকে বিয়ে করেন। অথচ নিজেকে ডিআইজির ছেলে পরিচয় দিয়ে ভয়ংকর প্রতারণায় নেমেছেন পুলিশ কর্মকর্তার পুত্র অর্ণব।

ছেলে রাহমাতুর রাফসান অর্ণব এর আগে দিনাজপুর শহরের গণেশতলাস্থ মার্টিন চাইনিজ রেস্তরাঁর উপরে ‘লেগেসি রেস্টুরেন্ট’ নামে প্রতিষ্ঠান দিয়ে শহরে পাহাড়পুর ষষ্টিতলা এলাকায় ভাড়া থাকাকালীন এক ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়। সে সময় তাকে দু’দিনের রিমান্ড নেয় পুলিশ।

রাহমাতুর রাফসান অর্ণবের বিরুদ্ধে একাধিক তরুণী ও নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে এ ছাড়া ভুক্তভোগী তরুণী ও নারীকে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

উঠতি বয়সী অনেক তরুণী ও নব্য বিবাহিত প্রবাসী স্বামীর স্ত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব হারাতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দিনাজপুর ও রাজধানী ঢাকায় একাধিক মামলা করেছেন। এ ছাড়া মাদক ব্যবসা, চাকুরি দেওয়া ও বিদেশ লোক পাঠানোর নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিওয়ারো অভিযোগ রয়েছে। দিনাজপুর শহরে তার মালিকানাধীন লিগেসি নামের একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্টের আড়ালে তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় ও ধর্ষণ মামলায় জেল খেটেছেন তিনি।

রাজধানীর ধানমণ্ডির এক শিল্পপতির মেয়ে দিনাজপুরে গিয়ে অর্ণবের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে একটি মামলা করেন। তার অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে দিনাজপুর কোতয়ালী পুলিশ। তরুণীর অভিযোগে বলা হয়, পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন অর্ণব। বিয়ের কথা বলে অর্ণব তার কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা, ৫০ ভরি সোনা ও দুটি প্রাইভেট কার হাতিয়ে নেন। অর্ণব তার কাছ থেকে সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি ২৭ লাখ টাকার জিনিসপত্র নিয়েছেন।

এই মামলার বিষয়ে জানতে চাইছে দিনাজপুর কোতয়ালী থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. নূর আলম বলেন, ওই মামলায় তরুণীর করা অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে এমন আরো অভিযোগ রয়েছে এই থানায়।

জানা যায়, পুলিশের ডিআইজির ছেলের ভুয়া পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে পুলিশের ভ্যান ব্যবহার করে ও ঢাকা মহানগর পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে, হুডার ব্যবহার করে অর্ণব কক্সবাজার থেকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য নিয়ে এসে সারা দেশে ছড়িয়ে দেন। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন শিল্পপতি ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে সেসব ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

যার প্রেমের ফাঁদে পড়ে অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েও সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে এ তালিকায় উঠে আসা ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। দামি ব্র্যান্ডের গাড়িতে ডিএমপির লোগো ব্যবহার করে চলাচল করেন হিরো বনে যাওয়া এই ভিলেন। যার টার্গেটের শিকার ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েরা। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ছাড়াও উদ্দেশ্য নানা কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া।

এদিকে ভুক্তভোগী তরুণীদের কয়েকজন অর্ণবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন দিনাজপুরে। মাথার ওপর ঝুলছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে হওয়ায় কোনো কিছুই মানছেন না তিনি।

বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক করতে না চাইলে সে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আবার কাউকে নেশা জাতীয় জুস, শরবত কিংবা কফি খাইয়ে ধর্ষণ করে। কিন্তু সে শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয় না, সব কিছু ভিডিও করে রাখে। পরে এই ভিডিও দেখিয়ে ফের ধর্ষণ এবং বিপুল অঙ্কের টাকা দাবি করে বসে।

জানতে চাইলে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘অর্ণবের বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ এসেছে। ভিকটিম যারা আইনি সহযোগিতার জন্য এসেছিলেন তাদের প্রতি শতভাগ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা হয়েছে। একজন পুলিশ সদস্যের ছেলে হলেও তাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হয়নি।’

সর্বশেষ সংবাদ

ভারী বৃষ্টিতে ধসে পড়ল দিল্লি বিমানবন্দরের ছাদ, নিহত ১
৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল পেরু, সুনামি সতর্কতা জারি
আবারও গ্রেপ্তার ‘লেডি কিলার’ পুলিশপুত্র অর্ণব
ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত বলিউড অভিনেত্রী হিনা খান
সাংবাদিকদের কিনেই তারপর উপজেলা পরিষদে এসেছি: মতিউরের প্রথম স্ত্রী
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: নাশকতার মামলায় গ্রেফতার কাউন্সিলর কারাগারে
কৃষকের মাছ ধরা ফাঁদে রাসেলস ভাইপার, পুরস্কারের আশায় নিয়ে এলেন বাড়িতে
ট্রাম্পকে পর্ন তারকার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বাইডেনের খোঁচা
চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: নিহত ৩
রাখাইনের মংড়ুতে বিমান হামলা, ব্যাপক গোলাগুলি
আমিরাত ও সৌদিতে জুমার নামাজ-খুতবা সংক্ষিপ্ত করার নির্দেশ
বিশ্বকাপ মিশন শেষে দেশে ফিরল টাইগাররা
বিদেশে আমাদের প্রভু নেই, বন্ধু আছে : ওবায়দুল কাদের
দেশের সব বিভাগেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
ঢাকার ৯৫ শতাংশ বাড়িঘর অনুমোদনহীন : গণপূর্তমন্ত্রী
ইংল্যান্ডকে বিদায় করে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত
জেনিনে বোমা বিস্ফোরণে ইসরায়েলি সেনা নিহত, আহত ১৬
সকালে ফিরছে বাংলাদেশ দল, সঙ্গে আসছে না লিটন ও সৌম্য
পরীমণিকে যথাযথ ব্যবহার করা হচ্ছে না: পরমব্রত