গ্রামীণফোন কোম্পানির কঠোর শাস্তি চায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ
গ্রামীণফোনের নিকট সরকারের পাওনা বকেয়া প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা দ্রুত আদায়সহ গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সংগঠনটির পক্ষ থেকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও সংগ্রামের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের যেকোনো অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসঙ্গতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবাদ করে আসছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
এর ধারাবাহিকতায় গ্রামীণফোনের নিকট সরকারের পাওনা বকেয়া প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা দ্রুত আদায়সহ গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানবন্ধন করে।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের জনগণের পাওনা বকেয়া প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা দ্রুত ফেরত না দিলে গ্রামীণফোনের কর্পোরেট লাইসেন্স বাতিল করে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। গ্রামীণফোনকে অবশ্যই জনগণের টাকা দ্রুত ফেরত দিয়ে এদেশে ব্যবসা করতে হবে।
কোনো দেশি-বিদেশি করপোরেট মাফিয়াকে দেশের জনগণের টাকা লুট করতে দিবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচিতে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা বক্তব্য রাখেন।
কর্মসূচিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রোমান হোসাইন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও সংগ্রামের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের যেকোন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসঙ্গতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবাদ করে আসছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এর ধারাবাহিকতায় গ্রামীণফোনের কাছে সরকারের পাওনা বকেয়া প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা দ্রুত আদায়সহ গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় আরোও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘গ্রামীণফোন বাংলাদেশের জনগণের পাওনা বকেয়া প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা দ্রুত ফেরত না দিলে গ্রামীণফোনের করপোরেট লাইসেন্স বাতিল করে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। গ্রামীণফোনকে অবশ্যই জনগণের টাকা দ্রুত ফেরত দিয়ে এদেশে ব্যবসা করতে হবে। কোন দেশি-বিদেশি করপোরেট মাফিয়াকে দেশের জনগণের টাকা লুট করতে দিবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের অসহায়ত্বমূলক বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে, এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। দীর্ঘদিন যাবত গ্রামীণফোন কিভাবে সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা ফাঁকি দিলো। এর জবাব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদেরকে দিতে হবে। কারণ তারা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তথাকথিত সুশীল ড. ইউনুস গ্রামীণফোন ও গ্রামীণ ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছেন। বাঙ্গালি জাতির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করে ড. ইউনুস প্রমাণ করেছেন তিনি দেশ ও জাতির শত্রু। রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার অপরাধে স্বাধীনতা বিরোধীদের দোসর ড. ইউনুসকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সংগঠনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, ‘একাত্তরে আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আর কোন ষড়যন্ত্র করলে ড. ইউনুসকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সমুচিত জবাব দিতে বাধ্য হবে। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ইউনুস গংদের রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনে আমরা আবার যুদ্ধে নামবো। গ্রামীণফোনের তালবাহানা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে জনগণের টাকা ফেরত দিতে হবে। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদেরকে সঙ্গে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা খুব শিগগিরই গ্রামীণফোন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে।’
ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন, ‘গ্রামীণফোন জনগণের টাকা লুট করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কলড্রপসহ বিভিন্ন অফারের নামে গ্রামীণফোন প্রতিনিয়ত জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অনেক আগেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতো। বিটিআরসির দায়িত্বহীনতার বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি। গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহি করা প্রয়োজন। কারণ তারা অনেক আগেই কঠোর ব্যবস্থা নিলে এধরণের রাষ্ট্রীয় ক্ষতির ঘটনা সংঘটিত হতো না। জনগণের ১১ হাজার কোটি টাকা জরিমানাসহ দ্রুত আদায় করতে হবে। এই টাকা লুটপাটের মূলহোতা ড. ইউনুসকে আইনের আওতায় আনার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রোমান হোসাইন। আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্য অভিনেতা আহসানুল হক মিনু ও সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ।
এসএম/এমএমএ/