বাসযোগ্যতায় ঢাকার অবস্থান তলানির দিকে
বাসযোগ্যতার বিচারে ১৭২ শহরের উপর করা জরিপের তালিকার তলানিতে রয়েছে রাজধানী ঢাকার নাম। ওই তালিকার ১৬৬তম অবস্থানে রয়েছে ঢাকার নাম। সম্প্রতি বাসযোগ্যতার বিচারে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) তাদের জরিপের এ ফলাফল প্রকাশ করে।
মহামারির ধাক্কা সামলে স্বাভাবিকতায় ফেরা ও বাসযোগ্যতার ক্ষেত্রে এক বছরে ঢাকার উন্নতি হয়েছে সামান্যই। চলতি বছর ওই জরিপের শেষের দিক থেকে ঢাকার অবস্থার সাত নম্বরে রয়েছে। গত বছর ১৪০টি শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল ১৩৭তম; অর্থাৎ তালিকার নিচের দিক থেকে চার নম্বরে।
পাঁচটি সূচকের উপর ভিত্তি করে এ জরিপ করা হয়েছে। অর্থাৎ কোন শহর কতটা বাসযোগ্য তা বোঝার জন্য স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোর মানদণ্ড বিচার করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। মোট ১০০-এর মধ্যে ঢাকার স্কোর এবার ৩৯ দশমিক ২। গত বছর স্কোর ছিল ৩৩ দশমিক ৫।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ৯৯ দশিক ১ স্কোর নিয়ে তারিকার শীর্ষে অবস্থান করছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা। এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের তালিকাতেও ভিয়েনা ছিল শীর্ষে। কিন্তু কোভিড মহামারির শুরুতে লকডাউনের সময় অস্ট্রিয়ার এ শহর চলে যায় ১২ নম্বরে। এক বছরের মধ্যে তারা তাদের হারানো গৌরব আবার ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।
গত বছর বাসযোগ্য শহরের এ তালিকার শীর্ষে ছিল নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ড। তখন অকল্যান্ডে কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে এবার সেখানে সংক্রমণ বাড়ায় বিধিনিষেধও বেড়েছে। তাতে অকল্যান্ড এক ধাক্কায় নেমে গেছে ৩৪ নম্বরে।
৯৮ স্কোর নিয়ে এবারের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন। যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ও কানাডার ক্যালগারি। তার পরের অবস্থানটি কানাডার আরেক শহর ভ্যাংকুভারের।
শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে ছয়টিই এবার ইউরোপের দখলে। কানাডার শহরগুলোও নিজেদের অবস্থানের উন্নতি ঘটিয়েছে।
এ ছাড়া বাসযোগ্যতার বিচারে খারাপ শহরগুলোর অবস্থানে বিশেষ হেরফের হয়নি। গতবারের মতো এবারও তালিকার সবচেয়ে নিচে রয়েছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক, সব মিলিয়ে স্কোর এবার ৩০ দশমিক ৭।
এ ছাড়া ৩২ দশমিক ২ স্কোর নিয়ে নাইজেরিয়ার লাগোস তালিকার ১৭১তম এবং ৩৪ দশমিক ২ স্কোরে লিবিয়ার ত্রিপোলি ১৭০তম অবস্থানে রয়েছে। এরপর যথাক্রমে আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, পাকিস্তানের করাচি, পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী পোর্ট মোরসবি। এর আগে ১৬৬ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।
পাঁচ সূচকের মধ্যে ঢাকা সবচেয়ে কম স্কোর পেয়েছে অবকাঠামোতে। এ সূচকে ঢাকা পেয়েছে ২৬ দশমিক ৮। তালিকার তলানিতে থাকা দামেস্কও অবকাঠামো সূচকে ৩২ দশমিক ১ স্কোর পেয়েছে।
গতবার বাংলাদেশের স্কোর সবচেয়ে কম ছিল স্বাস্থ্যখাতে, এবার তা সামান্য বেড়ে ২৯ দশমিক ২ হয়েছে। একই সমান স্কোর দামেস্ক, আলজিয়ার্স আর ত্রিপোলির। অবশ্য ক্যামেরুনের দুয়ালা, জিম্বাবুয়েরে হারারে আর নাইজেরিয়ার লাগোসের স্বাস্থ্যসেবার স্কোর আরও খারাপ।
সংস্কৃতি ও পরিবেশের বিচারে ঢাকাকে ৪০ দশমিক ৫, স্থিতিশীলতায় ৫৫ এবং শিক্ষায় ৪১ দশমিক ৭ স্কোর দিয়েছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
এ ছাড়া রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ১৫ ধাপ, সেইন্ট পিটার্সবুর্গের ১৩ ধাপ অবনমন ঘটেছে এ তালিকায়।
এসএন