বড় বন্যার আশঙ্কা নেই
দেশে বন্যার শঙ্কা আছে। তবে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। সিলেট-সুনামগঞ্জের মত পরিস্থিতি আর হবে না। এ কথা বলছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীরণ কেন্দ্র। তারা বলছে, জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বর্তমান সিলেটের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। এটা আরও উন্নতি ঘটবে। সামনে বড় কোন বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আর নেই, তবে বন্যা হবে। জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশি হবে তাই বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সিলেট-সুনামগঞ্জ এলাকাসহ যেসকল এলাকায় বন্যার কারণ সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, উজানে ভারী বর্ষণ ও ঢলের কারণেই বন্যা হচ্ছে। তার মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বেশি পড়েছে। এ কারণে বৃষ্টিপাত বেশি হচ্ছে।
নতুন করে যেসকল এলাকা বন্যা কবলিত হতে পারে তার একটি ধারণা তুলে ধরে এই কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টিপাতের কারণে জুলাই-আগস্ট মাসে বন্যার কিছুটা ঝুঁকি থাকবে। নতুন করে উত্তর ও উত্তর-মধ্যাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। তবে সেটা সিলেটের মতো ভয়ঙ্কর হবে না। এখন কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধসহ ওই সকল এলাকায় বন্যার পাশাপাশি নদী ভাঙন হতে পারে।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা। গত কয়েকদিন ধরে এই দুই জেলার অর্ধকোটি মানুষ পানিবন্দী। প্রায় ৮০ এলাকা তলিয়ে গেছে এই দুই জেলার। তবে সিলেট ও সুনামগঞ্জে পরিস্থিতি সোমবার থেকে ধীরে ধেীরে উন্নতি করছে। অন্যদিকে নতুন করে আরও কিছু জেলা প্লাবিত হচ্ছে। এরমধ্যে মৌলভীবাবাজর, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর, জামালপুর নেত্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
এবারের বন্যার মধ্য দিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ দুই দফা বানের জলে প্লাবিত হয়েছে। মে মাসে প্রথম দফা বন্যা হয়েছিল পাহাড়ি ঢলের কারণে।
আর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমিরিটাস অধ্যাপক এবং পানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড.আইনুন নিশাত ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বন্যা হতে পারে। বন্যা হওয়া ভালো। তবে কবে কতটুক বন্যা হবে সেটা আগাম বলা মুশকিল।’
এদিকে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বন্যা এখানেই শেষ না আরও বন্যা আসতে পারে। সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে মেঘালয়ের বৃষ্টির পানি এসে সিলেট বিভাগে হঠাৎ বড় বন্যা সৃষ্টি করেছে। এই বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ সুনামগঞ্জে। জেলাটির ৯০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। ওদিকে আসামের বৃষ্টির পানি ঢল আকারে ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। এতে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও রংপুরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে এর কাছাকাছি পর্যায়ের বন্যা সিলেট বিভাগে হয়েছিল। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ ও সিলেট শহর বন্যাকবলিত হয়। তখন পানি স্থায়ী হয়েছিল দু-তিন দিন। কিন্তু পুরো সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ার মতো বন্যা এর আগে হয়নি।
এসএম/এনএইচবি/