লাগামহীন আটা, ২ কেজি ১১৫ টাকা
২ কেজি আটা পাঁচ দিন আগে ১০০ টাকা বিক্রি করা হলে বর্তমানে কোনো কোনো দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও ২ কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা। লাগামহীন হয়ে পড়েছে আটা। চিনিরও একই দশা। প্রায় দোকানে নেই। তবে কোনো দোকানে পাওয়া গেলেও দাম বাড়তি, ৮০ টাকা কেজি। ধান উঠলেও মোটা চাল ৫২ টাকা কেজি। তবে গরুর মাংস কমে ৬৫০ টাকার নিচে বিক্রি করা হচ্ছে। পেঁয়াজের পাল্লা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা হলেও কেজি ৪০ টাকা। তবে প্রায় সবজির কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, অনেক পণ্যের দাম বাড়তি। তাই রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিক্রিও করতে পারছি না। একেবারে লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্য পণ্য। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে। এখনো বাড়ছে চালের দাম ২২ মে ২ কেজির আটা সর্বোচ্চ ১০০ টাকা বিক্রি করা হলেও বৃহস্পতিবার সেই আটা ১১৫ টাকা। অনেক দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। জব্বার জোনারেল স্টোরের শরিফ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘কোনো জায়গায় নেই সুখবর। মোটা চাল ২৫০০ টাকা বস্তা, কেজি ৫২ টাকা। ২৮ চাল ৫৫ টাকা, চিনির বস্তা বেড়ে ৪০০০ টাকা, কেজি ৮০ টাকা। এসিআইর ২ কেজি আটা ১১৫ টাকা। অন্য কম্পানির আটা নেই। ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের আবুল হোসেনও বলেন, দাম বেশি।
এসিআইর আটা ১১৫ টাকা। অন্যটা পাওয়া যাচ্ছে না। চিনি নেই। বিক্রি করা হচ্ছে না। চালের দামও বেশি। অন্য দিকে কুমিল্লা জোনারেল স্টোরের মুজিবুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘২২ মে ২ কেজি আটা ১০০ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। এর কয়দিন আগে ৮০ থেকে ৯০ টাকা ছিলো। চিনির দামও বেড়ে গেছে। তা আগে ৮০ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৮২ থেকে ৮৫ টাকা এবং দেশি চিনি ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ডালও বাড়তি দামে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বেড়েছে। তাই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে বাদশা রাইস এজেন্সির আলমও বলেন, ‘নতুন ধান আসার পরও কমছে না চালের দাম। বাড়তেই আছে দাম।’ মিনিকেট চাল ৬৪-৬৬ টাকা, ২৮ চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, মোটা চাল নেই।
জিরার দাম বাড়তি
এদিকে কোরবানির ঈদ আসতে অনেক দেরি থাকলেও কিছু কিছু মসলার দামও উর্ধ্বমুখী বলে বিক্রেতারা জানান। আলী হোসেন বলেন, ‘৩৬০০ টাকার জিরার বস্তা ৩৮০০ টাকা হয়ে গেছে। কেজিতে বেড়েছে ৭০ টাকা পর্যন্ত। শিরিয়ার শিরা ৪০০ টাকা ওভারতের চিরা ৪১০ টাকা কেজিবিক্রি করা হচ্ছে।’ তবে আগের ঘোষণা করা দরেই সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান। জব্বার স্টোর চাটখিল স্টোর ও আল আমিন স্টোরও জানায়' ১ লিটার ১৯৮ টাকা, ৫ লিটার ৯৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
৫০ টাকার নিচে সবজির কেজি
আগের সপ্তাহের মতোই করলা ও পটল ৪০ টাকা, ঢেড়স ৩০ থেকে ৪০, বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, লেবুর ডজন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাল ও পাট সাক ১০ টাকা করে আটি, পুই সাক ২০ থেকে ৩০ টাকা আটি বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। তবে গত সপ্তাহের মতোই পেঁয়াজে ঝাঁজ নেই বাজারে। আগের মতোই পাল্লা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ও প্রতি কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। আগের সপ্তাহে দাম বেড়ে চায়না রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি এবং দেশি রসুনের দামও বেড়ে ১০০টাকা কেজি বিক্রি করা হয় । বৃহস্পতিবারও সেই দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আদা ৯০ থেকে ১১০ টাক বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতা জসিম জানান।
গরুর মাংস কমে ৬৫০ টাকা, আগের দামে মাছ
এদিকে ঈদ-উল ফিতরের পরে গরুর মাংস কেজি ৭০০ টাকা হলেও বর্তমানে কমে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। তবে খাসির মাংস আগের মতোই ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি। পাকিস্তানি মুরগিও আগের মতো ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও পোল্ট্রি মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে মা-বাবার দোয়া মুরগি ও ভাই ভাই মুরগি দোকান থেকে জানানো হয়। ডিমের হালির দামও চড়া। আগের সপ্তাহে ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ১২০ টাকা, তবে হাঁসের ডিম ১৫০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।
অপরদিকে মাছও আগের মতো বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। রুই ও কাতল মাছ ২৩০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, ইলিশ ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৭০০, কাচকি ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে ঈদের পর ইলিশ মাছের দাম বেড়ে ১ কেজির দাম ১৪০০ টাকা, ১ কেজির বেশি ১৫০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
জেডএ/এএজেড