ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিরুদ্ধে দুদকে স্মারকলিপি
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিরুদ্ধে তিন দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন ইসলামিক কালচারাল ফোরাম নামে একটি সংগঠনের নেতারা। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সোমবার (২৩ মে) এ স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। দুদক সচিব মাহবুব হাসানের সঙ্গে দেখা করেন স্মারকলিপি জমা দেন ফোরামের নেতারা।
স্মারকলিপিতে নির্মূল কমিটির আয়-ব্যয় ও তহবিলের উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান, নির্মূল কমিটির নেতাদের সম্পদের উৎস ও আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং গণকমিশনের শ্বেতপত্রের অর্থের জোগানদাতার তথ্যের খোঁজ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য গত ১১ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লার কাছে শ্বেতপত্র ও সন্দেহভাজন শতাধিক ব্যক্তির তালিকা হস্তান্তর করে ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’। এতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও আলেমদের বিরুদ্ধে গণকমিশনের দেওয়া অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে সোমবার দুদকে পাল্টা এ স্মারকলিপি দেয় ইসলামিক কালচারাল ফোরাম।
ফোরামের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে দুদকে যান নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা নাজমুল হক, আবু জাফর কাসেমী, মানসুরুল হক, আবুল কাসেম আশরাফি, রিয়াদুল ইসলাম, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমী, ওয়াহিদুল আলম, আব্দুর রহিম কাসেমী, ফজুলল হক ও হাফেজ মাওলানা মোতাহার উদ্দীন।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফোরাম নেতারা। অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমরা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকরা নীরবে, নিভৃতে দেশ ও জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা দেশের এতিম, মিসকিন, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কওমি মাদ্রাসায় দেশ ও জাতির সেবায় গড়ে তুলছি। এজন্য কিন্তু আমরা রাষ্ট্র থেকে কোনো পয়সা নিচ্ছি না। গত করোনার দুই বছর কিন্তু আমরা আমাদের শিক্ষকদের বেতনও দিতে পারিনি।
তাদের একজন বলেন, আমরা দুদক চেয়ারম্যানকে বলেছি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যে মিথ্যা ও বানোয়াট, অসত্য, কৃত্রিম তথ্য দিয়ে ইসলাম ও কওমি মাদ্রাসাবিরোধী মানহানিকর তাণ্ডব চালাল, বিষোদগার করেছে, তা যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তা আপনারা তদন্তের পর দেখতে পারবেন। তারা গণকমিশন নামে সংবিধান পরিপন্হি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাও রাষ্ট্রের সংবিধানবিরোধী।
প্রসঙ্গত গত ১১ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লার কাছে শ্বেতপত্র ও সন্দেহভাজন শতাধিক ব্যক্তির তালিকা হস্তান্তর করে ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’। কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্যসচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ তালিকা হস্তান্তর করে।
গণকমিশনের তালিকায় সন্দেহভাজন হিসেবে ১১৬ জনের নাম রয়েছে। শ্বেতপত্র ও তালিকাটি একই সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও দেওয়া হয়েছে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠন করা হয় গণকমিশন।
এমএ/এসএন