সরকারি প্রতিষ্ঠানেও চলবে অভিযান: ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি
শুধু বাজারের ছোট দোকান বা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান নয়, ওয়াসা, ডেসা, তিতাস থেকেও মানুষ যথাযথ সেবা পাচ্ছে না বলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মন্তব্য করেছেন। বলেন, ‘পানির মান ভালো না। গ্যাসের চাপ কম। বিদ্যুতে লোডশেডিং হচ্ছে। বিমান সময়মত ছাড়ছে না। এমন অভিযোগে ভোক্তা অভিযান বিকেন্ত্রিকরণ করে র্যাব, পুলিশ নিয়ে এসব জায়গায় কাজ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) যৌথভাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯’ বিষয়ক এ সভাটি রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এক কথায় যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি। তবে ভোক্তা অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হচ্ছে সঠিক তথ্য। কারণ এই সংস্থার কোনো উৎস নেই। ভোক্তা বা ব্যক্তিগত উৎস থেকে যে তথ্য পাওয়া যায় তা আমলে নিয়ে অভিযান করতে হয়। এজন্য ভোক্তা অধিদপ্তর সম্প্রতি ডিজিএফআই, এনএসআইসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক কথায় ভোক্তাদের স্বার্থে অভিযানে বিকেন্ত্রীকরণ করা হবে। ডাক্তারে টেস্টের জন্য কমিশন পাচ্ছেন। তারা যোগাযোগ না করলেও তাদের কাছে পৌছে দিচ্ছে।
মহাপরিচালক বলেন, ‘ভোক্তা ও বাজার এক হয়ে গেছে। ভোক্তারা প্রতারিত হতে হতে এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এখন অধিকার খর্ব হচ্ছে সেটাই আর বুঝতে পারে না। ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা দাড়িয়ে থাকছে। তা থেকে ধারণা করা যায় চিকিৎসকরা কোম্পানির সুপারিশে ওষুধ লিখছেন। আবার ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নিচ্ছে। এতে রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হচ্ছে।
ইংরেজি মাধ্যম কোনো কোনো স্কুলে ভর্তির সময়ই কয়েক মাসের বেতন আগাম নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বই, খাতা, কলম, পোশাক স্কুল থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। কক্সবাজার পর্যটন কেন্দ্রে ছবি তোলা, বাইক চালানো, ঘোড়াসহ বিভিন্ন লোকেরা পর্যটকদের চারপাশে সারক্ষণ ঘুরঘুর করছে। পর্যটকরা নিজেদের মত সময় কাটাতে পারছেন না। আর কোনো সেবা নিলে উচ্চহারে মূল্য দিতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ভোক্তা আইন সংশোধন হচ্ছে। বুধবার আন্ত:মন্ত্রণালয় মিটিং হয়েছে। কোনো আপত্তি কেউ করে নি। মন্ত্রীসভা (কেবিনেট) হয়ে সংসদে যাবে। পাশ হলে পুরোপুরি প্রয়োগ করা যাবে ভোত্তাদের স্বার্থে।’
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী, এএফপির ব্যুরো চীপ ও ইআরএফের সহ সভাপতি শফিকুল আলম, ক্যাবের উপদেষ্টা কাজী আব্দুল হান্নান। এতে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রম ও আইন নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারি পরিচালক রজবী নাহার রজনী।
জেডএ/এএজেড