কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঝাউবন বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করে কক্সবাজারের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যেখানে সেখানে ভবন নির্মাণ না করতে এবং কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেশি করে ঝাউবন দিয়ে ঘিরে দিতে বলেছেন তিনি।
বুধবার (১৮ মে) সকালে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত বহুতল ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়্যালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকাল উখিয়াতে কোনো জঙ্গল দেখা যায় না। এক সময় উখিয়ায় ঘন জঙ্গল ছিল। জঙ্গলের পথ দিয়ে আমরা সেই ডাকবাংলোতে গিয়ে থেকেছি। কক্সবাজারের ছোট ছোট কটেজ ছিল সেই কটেজে থাকতে হতো। কক্সবাজারের সার্বিক উন্নয়ন এটা আমাদের লক্ষ্য। সারা বিশ্বে এমন চমৎকার সমুদ্র সৈকত আর নেই। কক্সবাজারের সার্বিক উন্নয়ন একান্ত ভাবে অপরিহার্য।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আকাশ পথ যেটা রয়েছে সেটাও কক্সবাজারের উপর দিয়েই যাচ্ছে। এ অঞ্চলের উন্নয়নের দিকে আমাদের সবসময় দৃষ্টি রয়েছে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, এ অবস্থানটাই হচ্ছে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করার মতো জায়গা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার ঘিরে একটা মাস্টারপ্ল্যান করার নির্দেশ দিয়েছি। উন্নয়নটা অপরিকল্পিতভাবে না হয়ে যেন মাস্টার প্লান অনুযায়ী হয়। আমাদের এ বিশাল সমুদ্র সীমার পর্যটনের ক্ষেত্রটা প্রসারিত করা। দেশীয় পর্যটকদের সুযোগ সৃষ্টি করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগ নিতে চাচ্ছি। এ ছাড়া যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক এয়ার রুটে পড়ে তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিমানবন্দর যখন হবে, যারা পশ্চিমা দেশ থেকে প্রাচ্যের দেশে যায় তারা কিন্তু কক্সবাজার থেকে রিফুয়েলিং করবে। রিফুয়েলিং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশ অগ্রাধিকার পায়। একসময় হংকং ছিল এরপর দেখেছি থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুর এখন দুবাই, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশপথে রিফুয়েলিংয়ের একটা জায়গা।
কক্সবাজারকে ঘিরে সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখানে ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ফুটবল স্টেডিয়াম হবে, অন্যান্য খেলাধুলার আয়োজনের পুরো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট যেন এখানে হতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা করতে হবে। কক্সবাজারে একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় করার অনুমোদন দিয়েছে। একটি মেডিকেল কলেজ করা হয়েছে। একটি হাসপাতাল করা হবে। উন্নতমানের কনভেনশন সেন্টার কক্সবাজারেই করা হবে। আমাদের বিভিন্ন সেমিনার সেখানে করতে পারব। সেভাবেই করতে চাই।
কক্সবাজারের খুলুশপুরে আধুনিক শুঁটকি হাট করার পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, খুলুশপুরে একটি আধুনিক শুঁটকি হাট আমরা করব। উন্নয়ন পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, সব থেকে আগে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রসৈকতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ছাড়াও এখানে যারা অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আছেন, আমাদের যুবসমাজের অনেকে আছেন। সামনে আষাঢ় মাস। আষাঢ় মাসে আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিই। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পুরোটাই যেন ঝাউবন দিয়ে ঘিরে দিতে পারি তাহলে যেকোনো ঝড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। প্রতি বছরই যদি সবাই মিলে কিছু ঝাউবন তৈরি করেন, তাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করা যাবে।
এসএম/এসএন